পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कब ब्रष्नाबढी কথাটি ব্রজেশবের কন্ঠস্থ করিলেন। প্রফল্পের জন্য যখন বড় কান্না আসিত, তখন মনকে প্ৰবোধ দিবার জন্য বলিতেন “পিতা সবগঃ পিতা ধৰ্ম্মমঃ পিতাহ পরমন্তপঃ । পিতাঁর প্রীতিমাপক্ষে প্রীয়ন্তে সবাব দেবতাঃ ৷ ” এইরুপে ব্ৰজেশবর প্রফােল্লকে ভুলিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। ব্রজেশবরের পিতাই যে প্রফল্লের মাতুর কারণ, সেই কথা মনে পড়িলেই ব্রজেশবের ভাবিতেন— “পিতা সবগঃ পিতা ধৰ্ম্মঃ পিতাহি পরমন্তপঃ ।” প্রফাল্ল গেল, কিন্তু পিতার প্রতি তবও ব্রজেশবরের ভক্তি অচলা রহিল । পণ8দশ পরিচ্ছেদ প্রফল্পের শিক্ষা আরম্ভ হইল। নিশি ঠাকুরাণী, রাজার ঘরে থাকিয়া, পরে ভবানী ঠাকুরের কাছে লেখাপড়া শিখিয়াছিলেন——বণ শিক্ষা, হস্তলিপি, কিঞ্চিৎ শভঙ্করী। অাঁক প্রফতুল্ল তাঁহার কাছে শিখিল। তার পর পাঠক ঠাকুর নিজে অধ্যাপকের আসন গ্রহণ করিলেন। প্রথমে ব্যাকরণ আরম্ভ করাইলেন। আরম্ভ করাইয়া দই চারি দিন পড়াইয়া অধ্যাপক বিস্মিত হইলেন। প্রফল্লের বন্ধি অতি তীক্ষা, শিখিবার ইচ্ছা অতি প্রবল—প্ৰফল্ল বড় শীঘ্ৰ শিখিতে লাগিল । তাহার পরিশ্রমে নিশিও বিস্মিতা হইল। প্ৰফীল্লের রন্ধন, ভোজন, শয়ন সব নামমাত্র, কেবল “সৰু ঔ জস, অম ঔ শস্যা" ইত্যাদিতে মন। নিশি বঝিল যে, প্রফতুল্ল সেই “দই নাতন”কে ভুলিবার জন্য অনন্যচিত্ত হইয়া বিদ্যাশিক্ষার চেস্টা করিতেছে। ব্যাকরণ কয়েক মাসে অধিকৃত হইল। তার পর প্রফতুল্ল ভট্টিকাব্য। জলের মত সাঁতার দিয়া পার হইয়া গেল। সঙ্গে সঙ্গে অভিধান অধিকৃত হইল। রঘ, কুমার, নৈষধ, শকুন্তলা প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ অবাধে অতিক্লান্ত হইল। তখন আচাৰ্য্য একটা সাংখ্য, একটা বেদান্ত এবং একটা ন্যায় শিখাইলেন। এ সকল অলপ অলপ মাত্র। এই সকল দর্শনে ভূমিকা করিয়া, প্রফােল্লকে সবিস্তার যোগশাস্ত্ৰাধ্যয়নে নিযন্ত করিলেন ; এবং সবশেষে সববািগ্রন্থশ্রেশ্ৰষ্ঠ শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা অধীত করাইলেন। পাঁচ বৎসবে শিক্ষা সম্পপণ্য হইল। এদিকে প্রফল্পের ভিন্নপ্রকার শিক্ষাও তিনি ব্যবস্থা করিতে নিযন্ত রহিলেন । গোবরার মা কিছর কাজ করে না, কেবল হাট করে—সেটাও ভবানী ঠাকুরের ইঙ্গিতে। নিশিও বড় সাহায্য করে না, কাজেই প্রফতুল্লাকে সকল কাজ করিতে হয় । তাহতে প্রফল্পের কন্ট নাই।--মাতার গনুহেও সকল কােজ নিজে করিতে হইত। প্রথম বৎসর তাহার আহারের জন্য ভবানী ঠাকুর ব্যবস্থা করিয়াছিলেন—মোটা চাউল, সৈন্ধব, ঘি ও কাঁচকলা। আর কিছুই না। নিশির জন্য তাই। প্রফল্পের তাহাতেও কোন কাল্ট হইল না। মার ঘরে সকল দিন এত জটিত না। তবে প্ৰফল্লি এক বিষয়ে ভবানী ঠাকুরের অবাধ্য হইল। একাদশীর দিন সে জোর করিয়া মাছ খাইত— গোবরার মা হাট হইতে মাছ না আনিলে, প্রফতুল্প খানা, ডোবা, বিল, খালে আপনি ছাঁকা দিয়া মাছ ধরিত; সপুতরাং গোবরার মা হাট হইতে একাদশীতে মাছ আনিতে আর আপত্তি করিত না । দ্বিতীয় বৎসরে নিশির আহারের ব্যবস্থা পৰ্ব্বমত রহিল। কিন্তু প্রফক্সের পক্ষে কেবল নতুন লণ্ডকা ভাত আর একাদশীতে মাছ। তাঁহাতে প্রফল্পে কোন আপত্তি করিল না। তৃতীয় বৎসরে নিশির প্রতি আদেশ হইল, তুমি ছানা, সন্দেশ, ঘাত, মাখন, ক্ষীর, ননী, ফল, মল, অন্ন, ব্যঞ্জন উত্তমরাপে খাইবে, কিন্তু প্রফল্পের নতুন লণ্ডকা ভাত। দাই জনে একত্র বসিয়া খাইবে । খাইবার সময়ে প্রফতুল্ল ও নিশি দলই জনে বসিয়া হাসিত। নিশি ভাল সামগ্রী বড় খাইত না-গোবরাব মাকে দিত। এই পরীক্ষাতেও প্রফতুল্ল উত্তীণ হইল। চতুৰ্থ বৎসরে প্রফল্লের প্রতি উপাদেয় ভোজ খাইতে আদেশ হইল। প্রফতুল্ল তাহ! খাইল । ਸ਼ বৎসরে তাহার প্রতি যথেচ্ছ ভোজনেৰ উপদেশ হইল। প্রফতুল্ল প্রথম বৎসরের মত শয়ন, বসুন, স্নান, নিদ্রা সম্পবন্ধে এতদনরাপ অভ্যাসে ভবানী ঠাকুর শিষ্যাকে নিযক্ত করিলেন। পরিধানে প্রথম বৎসরে চারিখানা কাপড়। দ্বিতীয় বৎসরে দইখানা। তৃতীয় b > じ