পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबव्ी হইয়া এক প্রহর রাত্ৰি হইল। তখন দান শেষ হইল। তখন পয্যন্ত দেবী জলগ্ৰহণ করেন নাই। দেবীর ডাকাইতি এইরপ—অন্য ডাকাইতি নাই। কিছ দিন মধ্যে রঙগপরে গডাল্যান্ড সাহেবের কাছে সংবাদ পৌছিল যে, বৈকুন্ঠপরের জঙ্গলমধ্যে দেবী চৌধরাণীর ডাকাইতের দল জমায়েৎবস্ত হইয়াছে—ডাকাইতের সংখ্যা নাই। ইহাও রাটিল যে, অনেক ডাকাইত রাশি রাশি অর্থ লইয়া ঘরে ফিরিয়া আসিতেছে—অতএব তাহারা অনেক ডাকাইতি করিয়াছে সন্দেহ নাই। যাহারা দেবীর নিকট দান পাইয়া অৰ্থ লইয়া আসিয়াছিল, তাহারা সব মানকির্য—বলে, টাকা কোথা ? ইহার কারণ, ভয় আছে, টাকার কথা শনিলেই ইজারাদারের পাইক সব কাড়িয়া লইয়া যাইবে । অথচ তাহারা খরচ-পত্ৰ করিতে লাগিল —সতরাং সকল লোকেরই বিশ্ববাস হইল যে, দেবী চৌধরাণী এবার ভারী রকম লাঠিতেছে। छाम्रभा •द्रिदृष्छ्न् যথাকালে পিতৃসমীপে উপস্থিত হইয়া ব্রজেশবের তাঁর পদবিন্দনা করিলেন। হরিবল্লভ অন্যান্য কথার পর জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘আসল সংবাদ কি ? টাকার কি হইয়াছে ?” ব্রজেশবের বলিলেন যে, “তাঁহার শবশঙ্কর টাকা দিতে পারেন নাই।” হরিবল্লাভের মাথায় বজাঘাত হইল—হরিবল্লভ চীৎকার করিয়া জিজ্ঞাসা কবিলেন, “তবে টাকা পাও নাই ?” “আমার শবেশীর টাকা দিতে পারেন নাই বটে, কিন্তু আর এক স্থানে টাকা পাইয়াছি—“ হরিবল্লভ। পেয়েছ ? তা আমায় এতক্ষণ বল নাই ? দরগা, বাঁচালেম! ব্ৰ। টাকাটা যে সন্থানে পাইয়াছি, তাহাতে সে গ্রহণ করা উচিত কি না, বলা যায় না। হর। কে দিল ? ব্রজেশবের অধোবদনে মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলিল, “তার নামটা মনে আসাচে না-সেই যে মেয়ে ডাকাইত একজন আছে ?” হর। কে, দেবী চৌধরাণী ? ব্র । সেই । হর । তার কাছে টাকা পাইলে কি প্রকারে ? ব্ৰজেশবরের প্রাচীন নীতিশাস্ত্রে লেখে যে, এখানে বাপের কাছে ভাঁড়াভাঁড়িতে দোষ নাই। ব্রজ বলিল, “ও টাকাটা একটা সহযোগে পাওয়া গিয়াছে।” হর। বন্দ লোকের টাকা! লেখাপড়া কি রকম হইয়াছে ? ব্র। একটা সহযোগে পাওয়া গিয়াছে বলিয়া লেখাপড়া করিতে হয় নাই। বাপ আর এ বিষয়ে বেশী খোঁচাখগুচি করিয়া জিজ্ঞাসা না করে, এ অভিপ্ৰায়ে ব্রজেশবের তখনই কথাটা চাপা দিয়া বলিল, “পাপের ধন যে গ্রহণ করে, সেও পাপের ভাগী হয়। তাই ও টাকাটা লওয়া আমার তেমন মত নয়।” হরিবল্লভ ক্লদ্ধ হইয়া বলিল, “টাকাটা নেব না ত ফাটকে যাব না কি ?” টাকা ধার নেব, তার আবার পাপের টাকা পণ্যের টাকা কি ? আর জাপতপের টাকাই বা কার কাছে পাব ? সে আপত্তি করে কাজ নাই। কিন্তু আসল আপত্তি এই যে, ডাকাইতের টাকা, তাতে আবার লেখাপড়া করে নাই—ভয় হয়, পাছে দেরী হ'লে বাড়ী-ঘর লন্ঠপার্ট করিয়া লইয়া যায়।” ব্রজেশবের চুপ করিয়া রহিল । হর । তা টাকার মিয়াদ কত দিন ? ব্র । আগামী বৈশাখ মাসের শব্লকা সপতমীর চন্দ্রাস্ত পয্যন্ত । হর। তা সে হোলো ডাকাইত। দেখা দেয় না। কোথা তার দেখা পাওয়া যাবে যে, টাকা পঠাইয়া দিব ? ব্র। ঐ দিন সন্ধ্যার পর সে সন্ধানপরে কালসাজির ঘাটে বজরায় থাকিবে। সেইখানে টাকা পৌছাইলেই হইবে । হরিবল্লভ বলিলেন, “তা সেই দিন। সেইখানেই টাকা পাঠাইয়া দেওয়া যাইবে।” ব্রজেশবের বিদায় হইলেন। হরিবল্লভ তখন মনে মনে বন্ধি খাটাইয়া কথাটা ভাল করিয়া বিচার করিয়া দেখিলেন। শেষে স্থির করিলেন, “হাঁঃ, সে বেটীর আবার টাকা শোধ দিতে যাবে! Ꮜ8Ꮈ