পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবী চৌধরাণী উঠিবে, সেই দন্ডে আবার যন্ধ আরম্ভ জানিবেন। আমার কথায় তিনি স্বীকৃত হইলে, তাঁহাদের কাহাকে এখানে আসিতে হইবে না। আমি নিজে তাঁহার ছিপে যাইব । রঙ্গরাজ বঝিল, ভিতরে একটা কি গভীর কৌশল আছে। দৌত্যে স্বীকৃত হইল। তখন দেবী তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভবানী ঠাকুর কোথায় ?” রঙ্গ। তিনি তীরে বরাকান্দাজ লইয়া যাদ্ধ করিতেছেন। আমার কথা শোনেন নাই। বোধ করি, এখনও সেইখানে আছেন। দেবী। আগে তাঁর কাছে যাও। সব বীরকন্দাজ লইয়া নদীর তীরে তীরে সর্বস্থানে যাইতে বল। বলিও যে, আমার বজরার লোকগালি রাখিয়া গেলেই যথেস্ট হইবে। আর বলিও যে, আমার রক্ষার জন্য আর যন্ধের প্রয়োজন নাই-আমার রক্ষার জন্য ভগবান উপায় করিয়াছেন। ইহাতে যদি তিনি আপত্তি করেন, আকাশ পানে চাহিয়া দেখিতে বলিও—তিনি বঝিতে পরিবেন। রঙগরাজ তখন সর্বয়ং আকাশ পানে চাহিয়া দেখিল—দেখিল, বৈশাখী নবীন নীরদমালায় গগন অন্ধকার হইয়াছে। রঙগরাজ বলিল, “মা! আর একটা আজ্ঞার প্রার্থনা করি । হরিবল্লভ রায় আজিকার গোইন্দা। তার ছেলে ব্ৰজেশবরকে নৌকায় দেখিলাম। অভিপ্রায়টা মন্দ, সন্দেহ নাই। তাহাকে বধিয়া রাখিতে চাহি ।” শনিয়া নিশি ও দিবা খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিল। দেবী বলিল, “বাঁধিও না। এখন গোপনে ছাদের উপর বসিয়া থাকিতে বল। পরে যখন দিবা নামিতে হকুম দিবে, তখন নামিবেন । ” আজ্ঞামত রঙগরাজ আগে ব্রজেশবরকে ছাদে বসাইল। তার পর ভবানী ঠাকুরের কাছে গেল, এবং দেবী যাহা বলিতে বলিয়াছিলেন, তাহা বলিল । রঙগরাজ মেঘ দেখাইল—ভবানী দেখিল। ভবানী আর আপত্তি না করিয়া, তীরের ও জলের বরকন্দাজ সকল জমা করিয়া লইয়া ত্রিস্রোতার তীরে তীরে সর্বস্থানে যাইবার উদ্যোগ করিল। এদিকে দিবা ও নিশি, এই অবসরে বাহিরে আসিয়া, বীরকন্দাজবেশী দাঁড়ী-মাঝিদিগকে চুপি চুপি কি বলিয়া গেল। ষািঠ পরিচ্ছেদ এদিকে ভবানী ঠাকুরকে বিদায় দিয়া, রঙগরাজ্য সাদা নিশান হাতে করিয়া, জলে নামিয়া লেফটেনাণ্ট সাহেবের ছিপে গিয়া উঠিল। সাদা নিশান হাতে দেখিয়া কেহ কিছল বলিল না। দিবে। ছিপে উঠিলে সাহেব তাহাকে বলিলেন, “তোমরা সাদা নিশান দেখাইয়াছ ধরা יי ק বঙ্গ। আমরা ধরা দিব কি ? যাঁহাকে ধরিতে আসিয়াছেন, তিনিই ধরা দিবেন, সেই কথা বলিতে আসিয়াছি। সাহেব । দেবী চৌধরাণী ধরা দিবেন ? রঙ্গ। দিবেন। তাই বলিতে আমাকে পাঠাইয়াছেন। স। । আর তোমরা " রঙগ । অমর কার পি সা। দেবী চৌধরাণীর দল। রঙ্গ। আমরা ধরা দিব না। ) সা। আমি দলশদ্ধ ধরিতে আসিয়াছি। রঙগ। এই দল কারা ? কি প্রকারে এই হাজার বরকন্দাজের মধ্যে দল বেদলি চিনিবেন ? যখন রঙগরাজ এই কথা বলিল, তখন ভবানী ঠাকুর বীরকন্দাজ সৈন্য লইয়া চলিয়া যান নাই। যাইবার উদ্যোগ করিতেছেন। সাহেব বলিল, “এই হাজার বরকন্দাজ সবাই ডাকাইত : কেন না, উহারা ডাকাইতের হইয়া সরকারের সঙ্গে যাদ্ধ করিতেছে।” রঙ্গরাজ। উহারা যাদ্ধ করিবে না, চলিয়া যাইতেছে দেখন। bio G, G