পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्नीडाद्वाञ्ध তখন মিশ্রদেব প্রসন্ন হইয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোম। ভান্ডারী লেকে কেয়া করোগে ?” পাঁচকড়ির মা। কি আর করিব ? আমার ঘরে কতকগলো। নাউ কুমড়া তরকারি হয়েছে, তাই বলে যাব যে, কাল গিয়ে যেন কেটে নিয়ে আসে। দ্বারবান। আচ্ছা, সো হাম বোলেণ্ডেগ। তোম ঘরমে যাও। পাঁচকড়ির মা। ঠাকুর, তুমি বলিলে কি আর সে ঠিকানা পাবে কার ঘরে তরকারি হয়েছে ? দবারবান। আচ্ছা। তোমারি নাম বোলকে যাও । পাঁচকড়ির মা। যা আবাগির বেটা! তোকে একটা নাউ দিতাম, তা তোর কপালে হলো না। দবারবান। আচ্ছা, তোম খাড়ি রহে। হাম ভান্ডারীকো বোলাতে হে”। তখন মিশ্রষ্ঠাকুর গান গন করিয়া পিল ভাঁজিতে ভাঁজিতে অট্টালিকামধ্যে প্রবেশ করিলেন, এবং অচিরাৎ জীবন ভান্ডারীকে সংবাদ দিলেন যে, “একঠো তরকারিওয়ালি আয়ি হৈ। মােঝ কো কুছ মেলেগা, তোমকো বি কুছ মেল সকতা হয়। তোম জলদী আও।” জীবন ভান্ডারীর বয়স কিছ বেশী, কতকগলো। চাবি ঘনসিতে ঝোলান। মাখ বড় রক্ষ। কিঞ্চিৎ লাভের প্রত্যাশা পাইয়া সে শীঘ্ৰ বাহির হইয়া আসিল। দেখিল, দাইটি স্ত্রীলোক দাঁড়াইয়া আছে। জিজ্ঞাসা করিল, “কে ডেকেছ গা ?” পাঁচকড়ির মা বলিল, “এই আমার ঘরে কিছ তরকারি হয়েছে, তাই ডেকেছি। কিছ, বা তুমি নিও, কিছ বা দরওয়ানজীকে দিও, আর কিছ: সরকারীতে দিও।” জীবন ভান্ডারী। তা তোর বাড়ী কোথা বলে যা, কাল যাব। পাঁচকড়ির মা। আর একটি দঃখী অনাথা মেয়ে এসেছে, ও কি বলবে একবার শোেন। শ্ৰী গলা পৰ্যন্ত ঘোমটা টানিয়া প্রাচীরে মিশিয়া এক পাশে দাঁড়াইয়াছিল। জীবন ভান্ডারী তাহার প্রতি দল্টিপাত করিয়া রক্ষভাবে বলিল, “ও ভিক্ষে-শিক্ষের কথা আমি হজারে কিছ: বলিতে পারিব না।” পাঁচকড়ির মা তখন অসফট সবরে ভান্ডারী মহাশয়কে বলিল, “ভিক্ষে যদি কিছ পায় তা অন্ধেক তোমার।" ভান্ডারী মহাশয় তখন প্ৰসন্নবদনে বলিলেন, “কি বল মা ?” ভিখারীর পক্ষে ভান্ডারীর প্রভুর দাবার অবারিত। শ্ৰী ভিক্ষার অভিপ্রায় জানাইল, সতরাং ভান্ডারী মহাশয় তাহাকে নিবের কাছে লইয়া যাইতে বাধ্য হইলেন। ভান্ডারী শ্ৰীকে পৌছাইয়া দিয়া প্রভুর আজ্ঞামত চলিয়া গেল। শ্ৰী আসিয়া দাবারদেশে দাঁড়াইল। অবগঠিনবতী, বেপমানা। গাহকৰ্ত্তা বলিলেন, “তুমি কে ?” শ্ৰী বলিল, “আমি শ্ৰী।” “শ্ৰী ! তুমি তবে কি আমাকে চেন না ? না চিনিয়া আমার কাছে আসিয়াছ ? আমি সীতারাম রায় ।” তখন শ্ৰী মাখের ঘোমটা তুলিল। সীতারাম দেখিলেন, অশ্রাপণ, বিষােবারি-নিষিক্ত পদ্মের ন্যায়, অনিন্দ্যসািন্দরমখেী। বলিলেন, “তুমি শ্ৰী! এত সন্দিরী!” শ্ৰী বলিল, “আমি বড় দঃখী । তোমার ব্যঙ্গের যোগ্য নাহি৷” শ্ৰী কাঁদিতে লাগিল। সীতারাম বলিলেন, “এত দিনের পর কেন আসিয়াছ ? আসিয়াছ ত অত কাঁদিতেছ। কেন ?” শ্ৰী তব কাঁদে–কথা কহে না। সীতারাম বলিল, “নিকটে এসো।” তখন শ্ৰী অতি মদ স্বরে বলিল, “আমি বিছানা মাড়াইব না—আমার অশৌচ ৷” সীতা । সে কি ? গদগদ স্বরে অশ্রপািণলোচনে শ্ৰী বলিতে লাগিল, “আজ আমার মা মরিয়াছেন।” সীতারাম। সেই বিপদে পড়িয়া কি তুমি আজ আমার কাছে আসিয়াছ ? শ্ৰী। না—আমার মার কাজ আমিই যথাসাধ্য করিব। সে জন্য তেমায়। দঃখ দিব না। কিন্তু আমার আজ ভারি বিপদ! সীতা। আর কি বিপদ!! শ্ৰী। আমার ভাই যায়। কাজি সাহেব তাহার জীয়ন্তে কবরের হকুম দিয়াছেন। সে এখন হব জখানায় আছে । do CA 6