পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बर्ताऽका ब्राफ़नाबब्जी অভিমখে চলিলেন। শ্যামপারে পৌঁছিয়া দেখিলেন যে, গঙ্গারাম তাঁহার প্রতীক্ষা করিতেছে। প্রথমেই সীতারাম তাহকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘গঙ্গারাম! তোমার ভগিনী কোথায়?” গঙ্গারাম সীতারাম বিষগ্ন হইয়া বলিলেন, “সব গোল হইয়াছে। সে এখানে আসে নাই ?” १७6ा । ना ! সীতা। তুমি এইক্ষণেই তাহার সন্ধানে যাও। সন্ধানের শেষ না করিয়া ফিরিও না। আমি এইখানেই আছি। তুমি সাহস করিয়া সকল সস্থানে যাইতে না পাের, লোক নিযক্ত করিও। সে জন্য টাকাকড়ি যাহা আবশ্যক হয়, আমি দিতেছি। গঙ্গারাম প্রয়োজনীয় অর্থ লইয়া ভগিনীর সন্ধানে গেল। বহ যত্নপৰ্ব্ববর্তক, এক সপতাহ তাঁহার সন্ধান করিল। কোন সন্ধান পাইল না। নিম্ৰফল হইয়া ফিরিয়া আসিয়া সীতারামের নিকট সবিশেষ নিবেদিত হইল । নবম পরিচ্ছেদ মধমতী নদীর তীরে শ্যামপাের নামক গ্রাম, সীতারামের পৈতৃক সম্পপত্তি। সীতারাম সেইখানে আসিয়া আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। ভূষণায় যে হাওগামা উপস্থিত হইয়াছিল, ইহা যে সীতারামের কার্য্য, তাহা বলা বাহাদুল্য। ভূষণা নগরে সীতারামের অনাগত, বাধ্য প্রজা বা খাদক বিস্তর লোক ছিল। সীতারাম তাহদের সঙ্গে রাত্ৰিতে সাক্ষাৎ করিয়া এই হাওগামার বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন। তবে সীতারামের এমন ইচ্ছা ছিল যে, যদি বিনা বিবাদে গঙ্গারামের উদ্ধার হয়, তবে আর তাহার প্রয়োজন নাই। তবে বিবাদ হয়, মন্দ নয়;—মসলমানের দৌরাত্ম্য বড় বেশী হইয়া উঠিয়াছে, কিছর দমন হওয়া ভাল। চন্দ্রচড়ি ঠাকুরের মনটা সে বিষয়ে আরও পরিস্কার— মসলমানের অত্যাচার এত বেশী হইয়াছে যে, গোটাকতক নেড়া মাথা লাঠির ঘায়ে না ভাঙ্গিলেই নয়। তাই সীতারামের অভিপ্ৰায়ের অপেক্ষা না করিয়াই চন্দ্ৰচড়া তকালঙকার দাঙ্গা আরম্ভ করিয়াছিলেন। কিন্তু শ্ৰাদ্ধটা বেশী গড়াইয়াছিল। —ফকিরের প্রাণবধ এমন গারতের ব্যাপার যে, সীতারাম ভীত হইয়া কিছর কালের জন্য ভূষণা ত্যাগ করাই স্থির করিলেন। যাহারা সে দিনের হাওগামায় লিপত ছিল, তাহারাও সকলে আপনাদিগকে অপরাধী জানিয়া, এবং কোন দিন না। কোন দিন ফৌজদার কর্তৃক দণ্ডিত হইবার আশঙ্কায় বাস ত্যাগ করিয়া, শ্যামপারে সীতারামের আশ্রয়ে ঘর দাবার বাঁধিতে লাগিল। সীতারামের প্রজা, অনচরবগ এবং খাদক, যে যেখানে ছিল, তাহারাও সীতারাম কর্তৃক আহত হইয়া আসিয়া শ্যামপারে বাস করিল। এইরনুপে ক্ষদ্র গ্রাম শ্যামপাের সহসা বহজনাকীণী হইয়া বহৎ নগরে পরিণত হইল। তখন সীতারাম নগর নিম্পমাণে মনোযোগ দিলেন। যেখানে বহজন-সমাগম, সেইখানেই ব্যবসায়ীরা আসিয়া উপস্থিত হয়; এই জন্য ভূষণা এবং অন্যান্য নগর হইতে দোকানদার, শিলপী, আড়ন্দার, মহাজন এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা আসিয়া শ্যামপারে অধিস্ঠিান করিল। সীতারামও তাহাদিগকে যত্ন করিয়া বসাইতে লাগিলেন । এইরনুপে সেই নােতন নগর, হাট, বাজার, গঞ্জ, গোলা, বন্দরে পরিপািণ হইল। সীতারামের পািকব পােরষের সংগহীত অর্থ ছিল, ইহা পাবে। কথিত হইয়াছে। তাহা ব্যয় করিয়া তিনি নতেন নগর সশোভিত করিতে লাগিলেন। বিশেষ এখন প্রজাবাহদুল্য ঘটাতে, তাঁহার বিশেষ আয়বদ্ধি হইয়াছিল। আবার এক্ষণে জনরব উঠিল যে, সীতারাম হিন্দ রাজধানী স্থাপন করিতেছেন; ইহা শনিয়া দেশে বিদেশে যেখানে মসলমানপীড়িত, রাজভয়ে ভীত বা ধৰ্ম্মম রক্ষার্থে হিন্দী রাজ্যে বাসের ইচ্ছােক, তাহারা সকলে দলে দলে আসিয়া সীতাবামের অধিকারে বাস করিতে লাগিল। অতএব সীতারামের ধনাগম সম্যক প্রকারে বন্ধি পাইতে লাগিল। তিনি রাজপ্রাসাদতুল্য আপনি বাসভবন, উচ্চ দেবমন্দির, স্থানে স্থানে সোপােনাবলীশোভিত সরোবর, এবং রাজবাত্ম সকল নিম্পমাণ করিয়া নািতন নগরী অত্যন্ত সশোভিতা ও সমদ্ধিশালিনী করিলেন। প্ৰজাগণও হিন্দী রাজ্যের সংস্থাপন জন্য ইচ্ছাপাকবািক তাঁহাদের ধন দান করিতে লাগিল। যাহার ধন নাই, শারীরিক পরিশ্রমের দবারা নগর নিম্পমাণ ও রােজ্যরক্ষার সহায়তা করিতে লাগিল । সীতারামের কম ঠতা, এবং প্রজাবগের হিন্দরাজ্য স্থাপনের উৎসাহে অতি অলপদিনেই げしf じ