পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

व७कञ ज्ञाप्ननाबव्नी মুকুত মারাত দুর্গের বাহিরে লইয়া গেল। পরে অনেক লাঞ্ছনা করিয়া, প্রাণ মাত্র রাখিয়া ছাড়য়া দিল । নন্দা জয়ন্তীকে বলিল, “মা ! দয়া করিয়া অভয় দাও । মা ! আমার বড় ভয় হইতেছে, পাছে কোন দেবতা ছলনা করিতে আসিয়া থাকেন। মা ! অপরাধ লইও না। একবার অন্তঃপরে পায়ের ধােলা দিবে চল, আমি তোমার পজা করিব।” তখন রাণী পৌরস্ত্ৰীগুণ সমভিব্যাহারে জয়ন্তীকে ঘেরিয়া অন্তঃপরে লইয়া চলিলেন। রাজা কিছ করিতে না পারিয়া সিংহাসন হইতে উঠিয়া গেলেন। তখন মহাকোলাহলপাকবািক, এবং নন্দাকে আশীৰ্ব্ববাদ করিতে করিতে দশকমন্ডলী দাগ হইতে নিম্প্রক্রিান্ত হইল। অন্তঃপরে গিয়া জয়ন্তী ক্ষণকালও অবস্থিতি করিল না। নন্দা অনেক অনানয় বিনয় করিয়া, স্বহস্তে গঙ্গাজলে জয়ন্তীর পা ধয়াইয়া, সিংহাসনে বসাইতে গেলেন। কিন্তু জয়ন্তী হাসিয়া উড়াইয়া দিল । বলিল, “মা ! আমি কায়মনোবাক্যে আশীৰ্ব্ববাদ করিতেছি, তোমাদের মণ্ডগল হউক। ক্ষণমাত্র জন্য মনে করিও না যে, আমি কোন প্রকার রাগ বা দঃখ করিয়াছি। ঈশবর না করন, কিন্তু যদি কখনও তোমার বিপদ পড়ে, জানিতে পারিলে আমি আসিয়া আমার যথাসাধ্য উপকার করিব। কিন্তু রাজপরীমধ্যে সন্ন্যাসিনীর ঠাঁই নাই। অতএব আমি চলিলাম।” নন্দা এবং পৌরবগাঁ জয়ন্তীর পদধলি লইয়া তাঁহাকে বিদায় করিল। উনবিংশ পরিচ্ছেদ রাজবাড়ীর অন্তঃপরের কথা বাহিরে যায় বটে, কিন্তু কখনও ঠিক ঠিক যায় না। সত্ৰীলোকের মখে মাখে। যে কথাটা চলিয়া চলিয়া রটিতে থাকে, সেটা কাজেই মাখে মাখে বড় বাড়িয়া যায়। বিশেষ যেখানে একটখানি বিস্ময়ের গন্ধ থাকে, সেখানে বড় বাড়িয়া যায়। জয়ন্তী সম্পবন্ধে অতিপ্রাকৃত রটনা পাবেব যথেষটই ছিল, নাগরিকদিগের কথাবাৰ্ত্তায় আমরা দেখিয়াছি। এখন জয়ন্তী রাজপরীমধ্যে প্রবেশ করিয়াই বাহির হইয়া চলিয়া গিয়াছিল, এই সোজা কথাটা যেরপে বাহিরে রাটিল, তাহাতে লোকে বঝিল যে, দেবী অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিয়াই অন্তদ্ধান হইলেন, আর কেহ তাঁহাকে দেখিতে পাইল না। কাজেই লোকের দািঢ় প্রত্যয় হইল যে, তিনি নগরের অধিস্ঠিাত্রী এবং রক্ষাকত্ৰী দেবতা, রাজাকে ছলনা করিয়া, এক্ষণে ছল পাইয়া রাজ্য পরিত্যাগ করিয়া গিয়াছেন। অতএব রাজ্য। আর থাকিবে না। দভাগ্যক্ৰমে এই সময়ে জনরব উঠিল যে, মরশিদাবাদ হইতে নবাবী ফৌজ আসিতেছে। কাজেই রাজধবংস যে অতি নিকটে, সে বিষয়ে আর বড় বেশী লোকের সন্দেহ রহিল না। তখন নগরমধ্যে বোেচকা বাঁধিবার বড় ধর্ম পড়িয়া গেল। অনেকেই নগর ত্যাগ করিয়া চলিল । সীতারাম এ সকলের কোন সংবাদ না রাখিয়া চিত্তবিশ্রামে গিয়া একাকী বাস করিতে লাগিলেন। এখন তাঁহার চিত্তে ক্ৰোধই প্রবল-সে ক্ৰোধ সব্বব্যাপক, সকবািগ্রাসক। অন্যকে ছাড়িয়া ক্ৰোধ শ্ৰীর উপরেই অধিক প্রবল হইল । উদভ্ৰান্তচিত্তে সীতারাম কতকগলি নীচব্যবসায়ী নীচাশয় অনাচরবগকে আদেশ করিলেন, “রাজ্যে যেখানে যেখানে যে সন্দরী সত্ৰী আছে, আমার জন্য চিত্তবিশ্রামে লইয়া আইসি।” তখন দলে দলে সেই পামরেরা চারি দিকে ছটিল। যে অর্থের বশীভুতা, তাহাকে অর্থ দিয়া লইয়া আসিল । যে সাধবী, তাহাকে বলপাকবািক আনিতে লাগিল। রাজ্যে হাহাকারের উপর আবার হাহাকার পড়িয়া গেল। এই সকল দেখিয়া শনিয়া চন্দ্ৰচড় ঠাকুর এবার কাহাকে কিছ না বলিয়া তলিপি বাঁধিয়া মটের মাথায় দিয়া তীর্থযাত্রা করিলেন। কুঁহজীবনে আর মহম্মদপরে ফিরিলেন না। • পথে যাইতে যাইতে চাঁদশাহ ফকিরের সঙ্গে তাঁহার সাক্ষাৎ হইল। ফকির জিজ্ঞাসা করিল, চন্দ্র। কাশী ।--আপনি কোথায় যাইতেছেন ? ফকির। মোক্কা । চন্দ্র। তীর্থযাত্রায় ? SS f