পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সীতারাম ফকির। যে দেশে হিন্দ আছে, সে দেশে আর থাকিব না। এই কথা সীতারাম শিখাইয়াছে। বিংশ পরিচ্ছেদ জয়ন্তী প্ৰসন্নমনে মহম্মদপাের হইতে নিগতি হইল। দঃখ কিছই নাই—মনে বড় সািখ । পথে চলিতে চলিতে মনে মনে ডাকিতে লাগিল—“জয় জগন্নাথ ! তোমার দয়া অনন্ত । তোমার মহিমার পার নাই! তোমাকে যে না জানে, যে না ভাবে, সেই ভাবে বিপদ! বিপদৰ কাহাকে বলে প্ৰভু ? তাহা বলিতে পারি না; তুমি যাহাতে আমাকে ফেলিয়াছিলে, তাহা পরম সম্পদ! আমি এত দিন এমন করিয়া বঝিতে পারি নাই যে, আমি ধৰ্ম্মম ভ্ৰমেটা : কেন না, আমি ব্যথা গকেব গবিবর্ণিতা, বথা অভিমানে অভিমানিনী, অহঙ্কারবিমঢ়া। অজ্ঞজনে ডাকিয়াছিলেন, আমিও ডাকিতেছি প্ৰভু, শিখাও প্ৰভু ! শাসন কর! “যচ্ছে0য়ঃ স্যান্নিশ্চিতং ব্রাহি তন্মে শিষ্যস্তেহং সাধি মাং ত্বং প্রপন্নমত।“ জয়ন্তী, জগদীশবরকে সম্মখে রাখিয়া, তাঁর সঙ্গে কথোপকথন করিতে শিখিয়াছিল। মনের সকল কথা খালিয়া বিশবপতির নিকট বলিতে শিখিয়াছিল। বালিকা যেমন মা-বাপের নিকট আবদার করে, জয়ন্তীও তেমনই সেই পরম পিতা-মাতার নিকট আবদার করিতে শিখিয়াছিল। এখন জয়ন্তী একটা আবদার লইল । আবদার, সীতারামের জন্য। সীতারামের যে মতি গতি, সীতারাম ত উৎসন্ন যায়, বিলম্ব নাই। তার কি রক্ষা নাই ? অনন্ত দয়ার আধারে তাহার জন্য কি একটা দয়া নাই ? জয়ন্তী তাই ভাবিতেছিল। ভাবিতেছিল, “আমি জানি, ডাকিলে তিনি অবশ্য শানেন। সীতারাম ডাকে না।--ডাকিতে ভুলিয়া গিয়াছে—নহিলে এমন করিয়া ডুবিবে কেন ? জানি, পাপীর দন্ডই এই যে, সে দয়াময়কে ডাকিতে ভুলিয়া যায়। তাই সীতারাম তাঁকে ডাকিতে ভুলিয়া গিয়াছে, আর ডাকে না। তা, সে না ডাকুক, আমি তার হইয়া জগদীশবরকে ডাকিলে তিনি কি শনিবেন না ? আমি যদি বাপের কাছে আবদুর করি যে, এই পাপিষ্ঠ সীতারামকে পাপ হইতে মোচন কর, তবে কি তিনি শনিবেন না ? জয় জগন্নাথ! তোমার নামের জয়! সীতারামকে উদ্ধার করিতে হইবে।” তার পর জয়ন্তী ভাবিল যে, “যে নিশ্চেন্ট, তাহার ডাক ভগবান শানেন না। আমি যদি নিজে সীতারামের উদ্ধারের জন্য কোন চেন্টা না করি, তবে ভগবান কেন আমার কথায় কৰ্ণপাত করিবেন ? দেখি, কি করা যায়। আগে শ্ৰীকে চাই। শ্ৰী পলাইয়া ভাল করে নাই। অথবা না পলাইলেও কি হইত বলা যায় না। আমার কি সাধ্য যে, ভগবান্নিন্দিভট কায্যকারণ পরম্পরা বঝিয়া উঠি।” জয়ন্তী তখন শ্রীর কাছে চলিল। যথাকালে শ্ৰীীর সঙেগ সাক্ষাৎ হইল। জয়ন্তী শ্ৰীীর কাছে সমস্ত বক্তান্ত সবিশেষ বলিল। শ্ৰী বিষগ্ন হইয়া বলিল, “রাজার অধঃপতন নিকট। তাঁহার উদ্ধারের কি কোন উপায় নাই ?” জয়ন্তী। উপায় ভগবান। ভগবানকে তিনি ভুলিযা গিয়াছেন। ভগবানকে যে দিন আবার তাঁর মনে হইবে, সেই দিন তাঁহার আবার উন্নতি আরম্ভ হইবে। শ্ৰী।। তাহার উপায় কি ? আমি যখন তাঁহার কাছে ছিলাম, তখন সববিদ্যা ভগবৎপ্রসঙগই তাঁর কাছে কহিতাম। তিনি মনোযোগ দিয়া শনিতেন। জয়ন্তী। তোমার মাখের কথা, তাই মনোযোগ দিতেন। তোমার মািখপানে হাঁ করিয়া চাহিয়া থাকিতেন, তোমার রাপে ও কণ্ঠে মগধ হইয়া থাকিতেন, ভগবৎপ্রসঙ্গ তাঁর কাণে প্রবেশ করিত না। তিনি কোন দিন তোমার এ সকল কথার কিছ: উত্তর করিয়াছিলেন কি ? কোন দিন কোন তত্ত্বের মীমাংসা জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন কি ? হরিনামে কোন দিন উৎসাহ দেখিয়াছিলে কি ? ॐी । ना । ऊा दएट क्लभा दर्शद्ध नाथे । জয়ন্তী। তবে সে মনোযোগ তোমার লাবণ্যের প্রতি—ভগবৎপ্রসঙেগ নয়। শ্ৰী। তবে, এখন কি কৰ্ত্তব্য ? సి 5ఏ