পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकब्रा ब्रष्नाबव्ी জ। তুমি করিবে কি ? তুমি ত বলিয়াছ যে, তুমি সন্ন্যাসিনী, তোমার কৰ্ম্মম নাই ? শ্ৰী। যেমন শিখাইয়ােছ। জ। আমি কি তাই শিখাইয়াছিলাম ? আমি কি শিখাই নাই যে, অনন্ঠেয় যে কম্পমা, অনাসক্ত হইয়া ফলত্যাগপৰ্ব্ববর্তক তাহার নিয়ত অনন্ঠান করিলেই কম্পমত্যাগ হইল, নচেৎ হইল। না ?* সর্বামিসেবা কি তোমার অনন্ঠেয় কৰ্ম্মম নহে? শ্ৰী। তবে আমাকে পলাইতে পরামর্শ দিয়াছিলে কেন ? জ। তুমি যে বলিলে, তোমার শত্র, রাজা নিয়া বার জন্য। যদি ইন্দ্ৰিয়গণ তোমার বশ্য নয়, তবে তোমার সর্বামিসেবা সকাম হইয়া পড়িবে। অনাসক্তি ভিন্ন কম্পমানন্ঠানে কম্পমত্যাগ ঘটে না। তাই তোমাকে পলাইতে বলিয়াছিলাম। যার যে ভার সয় না, তাকে সে ভার দিই না। “পদং সহেত। ভ্ৰমরস্য পোলবং” ইত্যাদি উপমা মনে আছে ত ’ শ্ৰী বড় লডিজত হইল। ভাবিয়া বলিল, “কাল ইহার উত্তর দিব।” । সে দিন। আর সে কথা হইল না। শ্ৰী সে দিন জয়ন্তীর সঙ্গে বড় দেখা-সাক্ষাৎ করিল না। পরে জয়ন্তী তাহাকে ধরিল। বলিল, “আমার কথার কি উত্তর সন্ন্যাসিনী ? “ শ্ৰী বলিল, “আমায় আর একবার পরীক্ষা কর।” জয়ন্তী বলিল, “এ কথা ভাল। তবে মহম্মদপাের চল। তোমার আমার অনন্ঠেয় কম কি, পথে তাহার পরামশা করিতে করিতে যাইব ।” দই জনে তখন পানববাের মহম্মদপত্র অভিমখে যাত্ৰা করিল। একবিংশতিতম পরিচ্ছেদ গঙ্গারাম গেল, রমা গেল, শ্ৰী গেল, জয়ন্তী গেল, চন্দ্রচড়ি গেল, চাঁদশাহ গেল। তব সীতারামের চৈতন্য নাই। বাকি মন্ময় আর নন্দা। নন্দা এবার বড় রাগিল—আর পতিভক্তিতে রাগ থামে না। কিন্তু নন্দার আর সহায় নাই। এক মন্ময় মাত্ৰ সহায় আছে। অতএব নন্দা কত্ত ব্যাকৰ্ত্তব্য সিথর করিবার জন্য এক দিন প্রান্ত মন্ময়কেই ডাকিতে পাঠাইল। সে ডাক মন্ময়ের নিকট পৌছিল না। মন্ময় আর নাই। সেই দিন প্রাতে মন্ময়ের মাতুত্যু হইয়াছিল। প্রাতে উঠিয়াই মন্ময় সংবাদ শানিলেন যে, মসলমান সেনা মহম্মদপর আক্রমণে আসিতেছে —আগতপ্রায়-প্রায় গড়ে পৌছিল। বজাঘাতের ন্যায়। এ সংবাদ মন্ময়ের কণে প্রবেশ করিল। মন্ময়ের যন্ধের কোন উদ্যোগই নাই। এখন আর চন্দ্রচাড়ের সে গপতচর নাই যে, পববাহে সংবাদ দিবে। সংবাদ পাইবামাত্র মন্ময় সবিশেষ জানিবার জন্য স্বয়ং আশাবারোহণ করিয়া যাত্রা করিলেন। কিছ দীর গিয়া মসলমান সেনার সম্মখে পড়িলেন। তিনি পলাইতে জানিতেন না, সতরাং তাহদের দবারা আক্রান্ত হইয়া নিহত হইলেন। মসলমান সেনা আসিয়া সীতারামের দাগ বেন্টন করিল—নগর ভাঙিগয়া অবশিস্ট নাগরিকেরা পলাইয়া গেল। চিত্তবিশ্রামে যেখানে সন্দরীমন্ডলীপরিবেষ্টিত সীতারাম লীলায় উন্মত্ত, সেইখানে সীতারামের কাছে সংবাদ পৌছিল যে, “মন্ময় মরিয়াছে। মসলমান সেনা আসিয়া দাগ ঘেরিয়াছে।” সীতারাম মনে মনে বলিলেন, “তবে আজ শেষ। ভোগবিলাসের শেষ ; রাজ্যের শেষ ; জীবনের শেষ।” তখন রাজা রমণীমন্ডল পরিত্যাগ করিয়া গাত্ৰোখান করিলেন। বিলাসিনীরা বলিল, “মহারাজ, কোথা যান ? আমাদের ফেলিয়া কোথা যান ?” সীতারাম চোপদারকে আজ্ঞা করিলেন, “ইহাদের বেত মারিয়া তাড়াইয়া দাও।” সত্ৰীলোকেরা খিল-খিল করিয়া হাসিয়া হরিবোল দিয়া উঠিল। তাহাদিগের থামাইয়া ভানমতী নামে তাহাদিগের মধ্যস্থ এক সন্দরী রাজার সম্পমখীন হইয়া বলিল, “মহারাজ ! আজি জানিলে বোধ হয় যে, সত্যই ধৰ্ম্মম আছে। আমরা কুলকন্যা, আমাদের কুলনাশ, ধৰ্ম্মম নাশ করিয়াছ, মনে করিয়াছ কি, তার প্রতিফল নাই ? আমাদের কাহারও মা কাঁদিতেছে, কাহারও বাপ

  • কাৰ্যমিত্যেব যৎ কৰ্ম্মম নিয়তং ক্ৰিয়তেহওজািন।

সঙ্গং ত্যন্ত বা ফলঞ্চৈব স ত্যাগঃ সাত্ত্বিকো মতঃ ॥— গীতা, ১৮ ॥৯ SCO