পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नौडाब्राभ ত্ৰয়োবিংশতিতম পরিচ্ছেদ যোদ্ধাগণ জয়ধবনি করিতে করিতে শ্রেণীবদ্ধ হইয়া, যথায় মণ্ডপাশে বা সীতারাম, জয়ন্তী ও শ্ৰীর মহাগীতি শনিতেছিলেন, সেইখানে আসিয়া জয়ধবনি করিল। রঘবীর মিশ্র জিজ্ঞাসা করিল, “মহারাজের কি হকুম ? আজ্ঞা পাইলে আমরা এই কয় জন নেড়া মন্ডকে হাঁকাইয়া দিই।” সীতারাম বলিলেন, “তোমরা কিয়ৎক্ষণ। এইখানে অপেক্ষা কর। আমি আসিতেছি।” এই বলিয়া রাজা অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিলেন। সিপাহীরা ততক্ষণ নিবিন্টমনা হইয়া অবিচলিত চিত্ত এবং অস্খলিতপ্রারম্ভ হইয়া সেই সন্ন্যাসিনীদ্বয়ের সবগীয় গান শনিতে লাগিল। যথাকালে রাজা এক দোলা সঙ্গে করিয়া অন্তঃপর হইতে নিগতি হইলেন। রাজভূত্যেরা সব পলাইয়াছিল বলিয়াছি। কিন্তু দাই চারি জন প্রাচীন পরাতন ভূত্য পলায় নাই, তাহাও । বলিয়াছি। তাহারাই দোলা বহিয়া আনিতেছিল। দোলার ভিতরে নন্দা এবং বালকবালিকাগণ । রাজা সিপাহীদিগের নিকট প্রত্যাবত্তন করিয়া, তাহাদিগকে শ্রেণীবদ্ধ করিয়া সাজাইয়া অতি প্রাচীন প্রথানসারে একটি অতি ক্ষদ্র সচীবাহ রচনা করিলেন। রন্ধ্রুমধ্যে নন্দার শিবিকা রক্ষা করিয়া স্বয়ং সচিীমখে আশাবারোহণে দন্ডায়মান হইলেন। তখন তিনি জয়ন্তী ও শ্ৰীকে ডাকিয়া বলিলেন, “তোমরা বাহিরে কেন ? সচীর রন্ধ্রুমধ্যে প্রবেশ কর।” জয়ন্তী ও শ্ৰী হাসিল। বলিল, “আমরা সন্ন্যাসিনী, জীবনে মাতুতে প্ৰভেদ দেখি না।” তখন সীতারাম আর কিছ না বলিয়া ‘জয় জগদীশবর! জয় লছমীনারায়ণজী! বলিয়া দ্বারাভিমখে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। সেই ক্ষদ্র সচীবাহ তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিল। ভুখন্তু দুই সন্ন্যাসিনীরা অবলীলারুমে তাঁহার অশের সম্মখে আসিয়া বিশালস্বয় N \S) ר־ן וארא" জয় শিব শঙকর ! ত্রিপািরনিধনকর! রণে ভয়ঙকর ! জয় জয় রে ! চকগদাধর ! কৃষ্ণ পীতাম্বর! জয় জয় হরি হার ! জয় জয় রে! ইত্যাকার জয়ধবনি করিতে করিতে অগ্ৰে অগ্ৰে চলিল। সবিস্ময়ে রাজা বলিলেন, “সে কি ? এখনই পিষিয়া মীরবে যে !” Q শ্ৰী বলিল, “মহারাজ ! রাজাদিগের অপেক্ষা সন্ন্যাসীদিগের মরণে ভয় কি বেশী ?” কিন্তু জয়ন্তী কিছ বলিল না। জয়ন্তী আব্ব দপ করে না। রাজাও, এই স্ত্রীলোকেরা কথার বাধ্য নহে বঝিয়া আর কিছ: বলিলেন না। তার পর দাগ দিবারে উপস্থিত হইয়া রাজা স্বহস্তে তাহার চাবি খলিয়া অগলি মোচন করিলেন। লোহার শিকল সকলে মহা ঝঞ্চনা বাজিল—সিংহদ্বারের উচ্চ গম্বজের ভিতরে তাহার ঘোরতর প্রতিধবনি হইতে লাগিল—সেই অশবগণের পদধবনিও প্রতিধবনিত হইতে লাগিল। তখন যবন সেনাসাগরের তরঙগাভিঘাতে সেই দশচালনীয় লৌহনিশ্চিমত বহৎ কবাটি আপনি উদঘাটিত হইল—উন্মািক্ত দবারপথ দেখিয়া সচীবহেস্থিত রণবাজিগণ নিত্য করিতে লাগিল। এদিকে যেমন বাঁধ ভাঙিগলে বন্যার জল পাব্বিত্য জলপ্রপাতের মত ভীষণ বেগে প্রবাহিত হয়, মসলমান সেনা দাগ দ্বার মন্ত পাইয়া তেমনই বেগে ছটিল। কিন্তু সম্মখেই জয়ন্তী ও শ্ৰীকে দেখিয়া সেই সেনা-তরঙ্গ-সহসা মন্ত্রমাগধ ভুজঙ্গের মত যেন নিশাচল হইল। যেমন বিশ্ববমোহিনী দেবীমত্তি, তেমনই অদ্ভুত বেশ, তেমনই অদভুত, অশ্রাতপািব্ব সাহস, তেমনই সৰবজনমনোমগন্ধকারী সেই জয়গীতি!—মসলমান সুেনা তাহাদিগকে পরিরক্ষাকারিণী দেবী মনে করিয়া সভয়ে পথ ছাড়িয়া দিল। তাহারা ত্রিশাল-ফটলৈকের দবারা পথ পরিভস্কার করিয়া, যবন। সেনা ভেদ করিয়া চলিল। সেই ত্রিশালমন্ত পথে সীতারামের সচীবাহ অবলীলাক্রমে মসলমান সেনা ভেদ করিয়া চলিল। এখন সীতারামের অন্তঃকরণে জগদীশবর ভিন্ন আর কেহ নাই। এখন কেবল ইচ্ছা, জগদীশবার স্মরণ করিয়া তাঁহার নিৰ্দেশ্লািবত্তী হইয়া মরিবেন। তাই সীতারাম Id C. C.