পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s२४8 l) যে হিন্দুরা ইলোরার পর্বত কাটির স্বর্গোপম কৈলাসসমন্বিত গিরিগহবরমালা প্রস্তুত করেন, র্যাহারা সঙ্কটসস্কুল সমুদ্র পার হইয়া সিংহল, বালি, যবদ্বীপ প্রভৃতিস্থানে উপনিবেশ সংস্থাপন করেন, র্যাহার জ্যোতিৰ্ব্বিদ্যা ও চিকিৎসাবিদ্যার অনেক উন্নতিসাধন করেন, যাহার এই বিশ্বমণ্ডলের স্বষ্টিসম্বন্ধে নানাপ্রকার মত উদ্ভাবন করেন, র্তাহারা যে নৈসর্গিক শক্তি দেখিয়া শঙ্কিত হইয়। তদনুবৰ্ত্তা হইতেন, এমন বোধ হয় না; বরং ঋষিদিগের মধ্যে জগদ্বশীকরণের ইচ্ছা প্রবল দেখা যায়। এতদ্দেশে এবং চীনে সামাজিক অবস্থা ৰহুকাল একরূপ থাকিবার কারণ বোধ হয় এই ; যৎকালে ভারতবর্ষের ও চীনের লোকেয়া সভ্য হন, তৎকালে পাশ্ববর্তী প্রদেশসমূহের অধিবাণীরা এত অসভ্য ছিল,যে তাহাদিগের সহিত তুলনায় স্বদেশপ্রচলিত মত ও অনুষ্ঠানগুলির প্রতি র্তাহাদিগের অতিশয় ভক্তি জন্মিয়াছিল, এবং এই নিমিত্তই বহুকাল তাহারা আপনাদিগের অবস্থা পরিবর্তন করিতে সচেষ্ট হন নাই। কোন কোন রাজ্য বা জাতির পতন সংঘটনস্বীয়া এসিয়া ও আফ্রিকার অনেক স্থানে সভ্যতার তিরোভাব বা হ্রাস হইয়াছে। কিন্তু এরূপ বিপ্লব প্রায় সামাজিক কারণের ফল। প্রাচীন য়াজ্যমাত্রেই বহুসংখ্যক দাস ছিল। যাহাদিগের হাতে আধিপত্য ছিল, তাহারা অপেক্ষাকৃত অল্পসং'খ্যক। এই উভয়ের মধ্যে পীড়িত ও সভ্যত । ১২৩ পীড়ক প্রায় সৰ্ব্বত্রই এই সম্বন্ধ ছিল । আমরা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, যে যেখানে এপ্রকার গুহবিচ্ছেদ সেথানে সমাজ স্থায়ী হইতে পারে না । ঈদৃশ অবস্থায় বিষময় ফল সৰ্ব্বত্রই ফলিবে, ইউরোপ, এসিয়া ও আফ্রিকা যেখানেই হউক না কেন। যেমন আফ্রিকায় মিসরের, এসিয়ায় ব্যাবিলন প্রভৃতির, তেমনই ইউরোপে প্রাচীন গ্রীস ও রোমের পতন ঘটিয়াছে। সত্য বটে, গ্রীস ও রোম পৃথিবীর অনেক উপকার করিরা গিয়াছে। রোম তাহার আইন,গ্রীস তাহারবিজ্ঞান, শিল্প, ইতিহাস ও সাহিত্য জগতের মঙ্গল সাধনার্থে রাখিয়া গিয়াছে। কিন্তু এ বিষয়ে ভারতবর্ষ তাহাদিগের অপেক্ষা কম নহে। ভারতবর্ষ প্রেমময় বৌদ্ধধৰ্ম্ম স্বষ্টি করিয়াছে। ভারতবর্ষ আরবদিগকে দিয়া স্বীয় পাটীগণিত,বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি ও রসায়ন ইউরোপ-খণ্ডে পাঠfইয়া তথাকার বৈজ্ঞানিক উন্নতির পথ খুলিয়া দিয়াছে; এবং ভারতবর্ষীয় বৈয়াকরণদিগের গবেষণা অবলম্বন করিয়াই ভাষা তত্ত্ববিদ্যার মূল পত্তন হইয়াছে। বস্তুতঃ প্রকৃতির শক্তি, আদে প্রবল হইলেও সভ্যতাবৃদ্ধি সহকারে ক্রমশঃ কমিয়া যায়, যদিও উহা একেবারে শূন্যবৎ বা অগ্রাহ্য হইবার নহে। আদিম মনুষ্য, নিকৃষ্টজীবগণের ন্যায়, নৈসর্গিক নিৰ্ব্বাচন স্রোতের বশবৰ্ত্তী ছিলেন। সেই আদিমকালীন পিতৃগণ কিরূপে অগ্নি উৎ পাদন করিতে হয় এবং তাঁহা কি কাজে