পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/২৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sb8 বিপদের সময় একবার কি দেখা দিতে পারিস না—মরিলে কি আর দেখা দেয় না ?--” . প্রমর তখন যুক্ত করে, মনে মনে,উদ্ধমুখে, অথচ অস্ফুটবাক্যে দেবতাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল—“ কেহ আমাকে বলিয়া দাও--তামার কি দোষে, এই সন্তের বৎসর মাত্র বয়সে এমন অসম্ভব দুৰ্দ্দশ ঘটিল ; আমার পুত্ৰ মরিয়াছে— আমায় স্বামী ত্যাগ করিল—আমার তর বৎসর মাত্র বয়স। আমি এই বয়সে স্বামীর ভালবাসা বিন। আর কিছু ভালবাসি নাই—আমার ইহলোকে আর কিছু কামনা নাই—তার কিছু কামনা করিতে শিখি নাই—অামি তাজ, এই সতের বৎসর বয়সে তাস্থাতে নিরাশ হই লাম কেন ?” ভ্রমর কাদির কাটিয়া সিদ্ধান্ত করিল— দেবতার নিতান্ত নিষ্ঠৰ । যখন দেবতা নিষ্ঠুর তখন মনুষ্য আর কি করিবে— কেবল র্কাদিবে ? ভ্রমর কেবল কঁদিতে লাগিল । এ দিকে গোবিন লাল, ভ্রমরের নিকট বিদায় হইয়া, ধীরে বহিৰ্ব্বাটন্তে আসিলেন। আমরা সত্য কথা বলিব—গোবিন্দলাল চক্ষের জল মুছিতে ২ আসিলেন । বালিকার, অতি সয়ল যে . প্রীতি,— অকৃত্রিম, উদ্বেলিত, কথায়২ ব্যক্ত, যাহার প্রবাহ দিন রাত্র ছুটতেছে-ভ্রম্বরের কাছে সেই অমূল্য প্রীলি পাষ্টয়া গোবিন্দ- 攀 লাল সুধী হুইয়াছিলেন, গোবিন্দলালের বঙ্গ দশল । ( আশ্বিন । এখন তাহা মনে পড়িল। মনে পড়িল যে যাহা ত্যাগ করিলেন, তাহ আর পৃথিবীতে পাইবেন না। ভাবিলেন যাহা করিয়াছি তাহ আর এখন ফিরে না-- এখন ত যাই । এখন যাত্রা করিয়াছি, এখন যাই । বুঝি আর ফেরা হইবে না। যাই হউক, যাত্রা করিয়াছি এখন যাই । সেই সময়ে যদি গোবিন্দলাল দুই প৷ ফিরিয়া গিয়া, ভ্রমরের রুদ্ধ দ্বার ঠেলিয়া একবার বলিতেন—ভ্রমর, আমি আবার আসিতেছি, তবে সকল মিটিত । গোবিন্দলালের, অনেকবার সে ইচ্ছা হইয়াছিল। ইচ্ছা হইলেও তাহা করিলেন না । ইচ্ছা হইলেও, একটু লজ্জা করিল। ভাবিলেন এত তাড়াতাড়ি কি ? যখন মনে করিব তখন ফিরিব । ভ্রমরের কাছে গোবিন্দলাল অপরাধী। আবার ভ্রমরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে সাহস য। হয় একটা স্থির করিবার বুদ্ধি হইল না। যে পথে যাইতেছেন সেই পথে চলিলেন। তিনি চিস্তাকে বর্জন করিয়া--বহিৰ্ব্বাটীতে আসিয়া সজ্জিত অশ্বে আরোঙ্গণ পূৰ্ব্বক, কষাঘাত করিলেন। পথে যাইতেই রোহিণীর রূপরাশি হৃদয়ৰ্মধ্যে ফুটিয়া উঠিল । হইল না । দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ । প্রথম বৎসর । হরিদ্রাগ্রামের বাড়ীতে সম্বাদ আসিল, গোবিন্দলাল,মাতা প্রভৃতি সঙ্গে, নিৰ্ব্বিম্নে মস্থ শরীরে কাশীধামে পৌঁছিয়াছেন ।