পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6* বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ । মন্দিরের মধ্যস্থলে দেবীমূৰ্ত্তি। মুক্তির মস্তক- পূজা শেষ হইল। প্রধান লামা প্রসাদ স্থিত অত্যুজ্জল গিন্টি-করা মুকুট হইতে স্ববর্ণের বণ্টন করিলেন। পূৰ্ব্বে আমার প্রসাদ স্তায় ভাস্বর আভা উদ্ভাসিত হইয়া মন্দিরটিকে মনোরম করিয়া তুলিয়াছে। মন্দিরের সর্বত্র পুরাতন চিত্রপট । দেবীর অলঙ্কারগুলি ধাতুনিৰ্ম্মিত—কণ্ঠে কাষ্ঠগুচ্ছের মালা, কপালে সিন্দুরতিলক । মন্দিরাভ্যস্তরে দুইজন লামা উপবিষ্ট । পুজার আয়োজন সমস্তই প্রস্তুত—ধূপধুনার গন্ধে চতুদিক আমোদিত । দেবীকে প্রণাম করিয়া আণময়৷ সে মুন্দির হইতে নিষ্ক্রান্ত হইরা ষষ্ঠ মন্দিরে "প্রবেশ করিলাম । - ইহার সম্মুখে তিনজন লাম। ঘণ্টা, কাসর ও শঙ্খ বাজাইতেছেন-—পুজা আরম্ভ হইয়াছে। সম্মুখেই দেবীমূত্তি। মুক্তকেশী ছিন্নকণ্ঠ রক্তধারাভিষিক্ত ভয়ঙ্করী মূৰ্ত্তি দেখিয়া ইহাকে ছিন্নমস্তা বলিয়া চিনিয়া লইতে কোনই কষ্ট হইল না । এখানকার ছিন্নমস্তামূৰ্ত্তিও ভারতের ছিন্নমস্তামূৰ্ত্তি হইতে কিছু পৃথক। ভারতবর্ষের মত দেবীর মস্তক স্কন্ধবিচু্যত ও হস্তস্থিত নহে। অৰ্দ্ধবিচ্ছিন্ন কণ্ঠদেশ হইতে রুধিরধারা নির্গত হইতেছে । এই পরিবর্তনে চীনকারিকরের রুচির নিনা করিতে পারিলাম না। এই মূৰ্ত্তি কতকটা স্বাভাবিক বলিয়া ইহাঁর ভীষণতা আরও বদ্ধিত হইস্বাছে । দেবীর সর্বাঙ্গ উজ্জল রজতবর্ণে চিত্রিত । পদতলে চীনে ফুল ও আমাদের বিশ্বপত্র অপেক্ষ ক্ষুত্রাকৃতি একপ্রকার বিস্বপত্রের রাশিশু পীকৃত। সন্মুখে ইষ্টট ছিন্নকন্ঠ মেষশিশু নিপতিত্ত। t” - সঙ্গন্ধে যেরূপ বিভীষিকা জন্মিয়াছিল, এখানকার প্রসাদ দেখিয়া সে ভাব আর রছিল না । এখানকার প্রসাদ আমাদের দেশেরই মত –পুষ্পসংযুক্ত চিনির ডেলা—তেলাপোকা বা শূকরের তরকারি নহে। ভক্তিভরে প্রসাদ ভোজন করিলাম। কিন্তু প্রসাদপুত হস্ত মস্তকে মুছিলাম না বলিয়া লামারী কিছু বিরক্ত হইলেন, মনে হইল। এমন-সময় গভীর নিকণে চড়চড়া বাজিয়া উঠিল । সানাই আনন্দের স্বর ধরিল—মুহুমুহ শঙ্খ ধ্বনিত হইতে লাগিল অবিশ্রান্ত ঘণ্টণরব শুনা যাইতে লাগিল । আমরা চমকিয়া উঠিলাম । দেখিলাম, একএকজন লামা ত্বরিতপদে সপ্তম "মন্দিরের দিকে ধাবিত হইতেছেন, আমরাও তাহণদের অনুসরণ করিয়া সপ্তম মন্দিরে উপস্থিত হইলাম । ষষ্ঠ মন্দিরের পশ্চাতেই সপ্তম মন্দির । মন্দিরের সম্মুখেই বাস্তধবনি হইতেছে । অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়া আমরা অতিশয় ৰিস্মিত হইলাম । এমন প্রকাগু মূৰ্ত্তি আমি আর কখনও দেখি নাই। শুনিলাম, ইহা পঞ্চামুনিনামক বিখ্যাত মুনিবরের মুৰ্ত্তি । মূৰ্ত্তিটি লম্বায় প্রায় . . ৫•হাত এবং বিস্তারে প্রায় ৭হাঙ7 - শুনিলাম, এই মুনিমুৰ্ত্তি একটি অখণ্ড শালবৃক্ষ খোদাই করিয়া গঠিত । - অত্যন্ত দুরতাবশত নীচে দাড়াইয় মূৰ্ত্তির নাক, মুখ, চোখ, কাণ, কিছুই ভাল দেখা যায় না । - - বৃক্ষটির দৈর্ঘ্য সম্পূর্ণ বজায় রাখিয়া অঙ্গরূপ হস্তপদাদির সংৰেজিনে চীনশিল্পী যথেষ্ট