পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা। ] আজিকার ভারতবধ । . }? এখন-পৰ্য্যন্ত উভয় ধৰ্ম্মের মধ্যে শক্রতাই বুঝা বাইবে । ট্ৰিচিনপলি-নগরে, জেসুইটচিরজাগরকে রহিয়াছে । সম্প্রদায়ের খৃষ্টানের, শিবমন্দিরাধিষ্ঠিত কি ভারতবর্ষে, কি অন্তর, মুসলমানদিগের মধ্যে যে অভিন্নভাব দেখা যায়, উহাই উহাদের মহাশক্তি । হিন্দুদিগের মধ্যে ইহার ঠিক বিপরীত ;–উহার বিবিধ বর্ণে বিভক্ত । ভারতবর্ষে, মুসলমানদিগের মধ্যে যে শ্রেণীবিভাগ একেবারে নাই,তাহা নহে; তাহাদের মধ্যেও মহম্মদের বংশধর, ভারতবিজেতার বংশধর ও মুসলমানীকৃত হিন্দু—এই তিন শ্রেণী দেখিতে পাওয়া যায় । ইজিপ্ট কিংবা তুর্কিস্থানের মুসলমানদিগের দ্যায়, ভারতবর্ষীয় মুসলমানসমাজে যদিও ব্যবহারে ততটা অভিন্নভাব দৃষ্ট হয় না, কিন্তু তথাপি, “সকল মুসলমানই সমান”—এই মূলতত্ত্বটির সম্বন্ধে উহাদের মধ্যে কোন মতভেদ নাই। শুধু ভারতবর্ষে কেন—সমস্ত মুসলমানরাজ্যেই বংশ, জাতি, উৎপত্তি ইত্যাদিবিষয়ক ভেদাভেদ ততটা গুরুতর বলিয়া পরিগণিত হয় না ; বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর মধ্যে ষে প্রভেদ,উহাই মুসলমানদিগের নিকট সৰ্ব্বাপেক্ষা গুরুতর । মুসলমানসমাজে সকল মনুষ্যই ভ্রাতৃস্থানীয়, অন্তত ভ্রাতৃরূপে গৃহীতব্য । মুসলমানধৰ্ম্মাধিষ্ঠিত সৰ্ব্বদেশীয় রাজ্যমণ্ডলীই তাহাদের স্বদেশ-ইহা-ছাড়া তাহাদের আর-কোন স্বদেশ নাই । ধৰ্ম্মাধিষ্ঠিত সীমা ভিন্ন তাহীদের দেশের আর-কোন সীমাচিন্তু নাই । ভারতবর্ষে মুসলমানের রাষ্ট্রসম্বন্ধে যুরোপীয়দিগের অধীনতা স্বীকণর করিয়াছে, কিন্তু ধৰ্ম্মসম্বন্ধে কোন অধিকার তাহাদিগকে ছাড়িয়া দেয় নাই । এ বিষয়ে তাহদের কতটা সঙ্কোচ, একটা দুষ্টাত্ত দিলে একটি শৈলের পাদমূলে, জমকালে একটি “কালেজ” নিৰ্ম্মাণ করিয়াছে। সেটি হিন্দুদিগের একটি পুণ্যস্থান ;—তাহার চারিপাশ্বে ই বহু দেবালয় । হিন্দুধৰ্ম্মের এই প্রধান দুর্গটিকে অবরোধ করিবার উদ্দেশে, জেসুইটের ধৈর্য্যসহকারে অনেক কৌশলে ঐ স্থানে অtডড গাড়িয়াছে । তাহারা গির্জার জন্ত একটি দেবালয় হিন্দুদিগের নিকট হইতে ক্রয় করে। তাহদের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া বিক্রেতার তাহাদের নামে আদালতে মোকদ্দামা আনে ; কিন্তু জেসুইটেরা যখন বলিল যে, উচ্চবর্ণের হিন্দু-শৃষ্টানদিগের জঙ্গ সেখানে ভজনাগার স্থাপন করাই তাহদের উদ্দেশু, তখন হিন্দুরা সস্তুষ্ট হইল, আর আপত্তি করিল না । কিন্তু কালেজ-সংলগ্ন বিস্তৃত ভূমির মধ্যে মুসলমান-পীরের একটা সামান্ত লক্ষ্মীছাড়া সমাধিমন্দির ছিল ; তাহ উঠাইয়া অন্ত স্থানে লইবার জন্ত, ক্ষতিপুরণস্বরূপ জেসুইটুর মুসলমানদিগের নিকট অনেক টাকা কবুল করে, কিন্তু .তাহার কিছুতেই সন্মত হয় নাই। বাঙালী মুসলমান-চাকর এদিকে স্বভাবত এত চাপ, কিন্তু ভারতের সীমান্তপ্রদেশে কোন ধৰ্ম্মান্ধ কাবুলী কোন ইংরাজকে গুগুহত্যা করিয়াছে, কোন যুরোপীয়ের মুখে সে যদি শুনিতে পায়, অমনি সে বিচলিত হইয়া উঠে ; সেই বর্ণিত বৃত্তাত্তের মধ্যে যদি কোন ভুলচুক থাকে, অমনি সে শুধরাইয় দেয় ; হত্যাকারীদের ছোরার গঠন কিরূপ ছিল, ত-পৰ্য্যন্ত তাহারা বলিয়া দেয়। ইহাতেই