পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3е в সম্ভাবনাও নাই। কেবল তাহাকে মনে করিয়া স্বতই যাহা আমার মনে উদয় হইতেছে, তাহাই লিখিতেছি । হেমবাৰু যে বঙ্গভাষাকে অমূল্য সম্পদ দান করিয়াছেন, ইহা বুদ্ধিমান মাত্রেই স্বীকার করেন । তাহার “বৃত্রসংহার” ও “দশমহাবিদ্যা”র দ্যায় কাব্য বঙ্গভাষায় পুৰ্ব্বে আর লিখিত হয় নাই। র্তাহার মৃত্যুর পর এই কয় দিনে এই কলিকাতাসহরে তাহার সম্বন্ধে অনেক আলোচনা হইয়াছে। কেবল একটি কথা কেহ আলোচনা করেন নাই । সেই কথা আমি বলিব মনে করিয়াছি । হেমবাবুর কবিতায় আমরা তাহার মানসিক বিকাশের ষে একটি পদ্ধতি দেখিতে পাই, আজ শুধু আমরা তাহারই আলোচনা করিব । প্রথমেই ধর, তাহার “কবিতাবলী” । ইহাতে দেখিতে পাওয়া যায় যে, তাহার দৃষ্টি নিজের ভিতরেই নিবদ্ধ—কোথায় প্রতিভার পরিচয়, কোথাও বিদ্যার পরিচয় । তাহার “মদনপারিজাত” স্ল্যালেকজাণ্ডার পোপের Eloisa to Abelardএর নকল ; তাহার “কমলবিলাসী disfrrscara Lotos-Eaters sa নকল ; তাহার ইন্দ্রের স্থধাপান” ড্রাইডেনের Alexander’s Feastern ords ; Śtotă *হতাশের অণক্ষেপ” এবং “কোন একটি পার্থীর প্রতি” কেবল ব্যক্তিবিশেষের অস্তরের হাহাকার । ইহাতে এই বুঝিলাম যে, যে সময়ে তিনি “কবিতাবলী” প্রণয়ন করিয়াছিলেন, তখনও তাহtর প্রতিভা আপনাতেই সম্বন্ধ । তাহার পর দেখিতে পাইবে, তাহার প্রতিভা ইহসংসারের ব্যাখ্যায় নিযুক্ত। জগতে যে, শক্তিরই জয়, তাহ। ত আমরা প্রতিনিয়ত 歌 ● वल्लणव्यिनि ॥ ৩য় বর্ষ, গ্রীবঙ্গ । প্রত্যক্ষ করিতেছি । “বৃত্রসংহারে” সেই চিত্রই চিত্রিত হইয়াছে । শক্তির জয়ের, ঐতিহাসিক কালেও পরিচয় পাইয়াছি নেপোলিয়নের জীবনে, কিন্তু শক্তি কি সৰ্ব্বজয়ী ? বৃত্ৰাসুরে এবং নেপোলিয়নে কোথাও ত সেরূপ পরিচয় পাওয়া যায় না । দেখিতে পাওয়া যায় যে, অধৰ্ম্ম আসিয়া জুটিলেই শক্তির ধবংস হয় । বৃত্ৰাক্ষর এবং নেপোলিয়ন, উভয়েই জগতে শক্তিতে অজেয় । অধৰ্ম্মাচরণ উভয়েরই ধবংস হইল । শেষে উভয়কেই কাদিতে হইয়াছে । একজনকে র্কাদিয়া বলিতে হইল— “হ শস্তু, তুমিও বাম ” অার জনকেও কাদিয়া বলিতে হইয়াছিল— St. Helena was written in destiny. চিরদিনই অধৰ্ম্মে এইরূপ বিলাপ করিতে হয় । সংসারে শক্তির জয় হইবে, ইহা যেমন সত্য ; অধাৰ্ম্মিক শক্তির ক্ষয়ও তেমনি সত্য । হেমবাবু তাহার “বৃত্রসংহারে এই প্রগাঢ় নীতির অবতারণা করিয়াছেন । তাহার পর দেখিতে পাই যে, হেমবাবুর প্রতিভা সংসারকেও ছাড়াইয়া বিশ্বকে অলিঙ্গন করিয়াছে—তাহার পরিচয় “দশমহাবিদ্যায়” । প্রতিভার এইরূপ পরিণতি সচরাচর দেখা যায় না । পুৰ্ব্বেই বলিয়াছি, আমি আজ তাঙ্গার সমালোচনা করিতে প্রবৃত্ত নহি ; তাহাকে যে হারাইয়াছি, আজ সেই ছঃখের . কথাই বলিতেছি । যেমন যায়, তেমনটি আর পাওয়া যায় না, ইহা আমাদের দেশের চিরপ্রচলিত কথা । হেমচন্দ্র ত চলিয়া গেলেন ; আবার কি আমরা তেমন পাইব ? জগদীশ্বর জানেন । - ঐচন্দ্রশেখর মুখোপাধ্যায়।