পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بیلاعاج बत्रल-मि । [ ৩য় বর্ষ, ভাত্র । ভারতবর্ষে মুসলমান-শাসন বিস্তৃত হইবার সময়ে জায়গীর ও সনন্দ দানের প্রথাই রাজ্যবিস্তারের প্রধান সহায় হইয়া উঠিয়াছিল । এখন ইউরোপীয়গণ যেমন অসভ্যদেশগুলি আপনাদের রাজ্য মনে করিয়া আপনাদের মধ্যে তাহার অধিকার বণ্টন করিয়া লইতেছেন, সেকালে মুসলমান সুলতানও সেইরূপ করিয়াছিলেন । সুলতান মহম্মদঘোরী কুতবউদ্দীনকে সমগ্র ভারতবর্ষ দান করেন । বলা বাহুল্য, তখন পর্য্যন্ত ভারতের অত্যন্ত্র ভাগই মুসলমানের অধিকারভুক্ত হইয়াছিল। কুতবউদ্দীন আবার নিজ পাত্রমিত্র, সেনাপতি বা সাহসী মুসলমানবীরকে ভারতের নানা অংশ দান করিতে আরম্ভ করেন। বক্তিয়ার খিলিজি একজন সমরকুশল সেনাপতিরূপে পরিচিত হইবামাত্র, সম্রাটু তাহাকে লাহোরে আহবান করিয়া, তাহাকে বিহার ও মুঙ্গেরের শাসনকর্তৃত্বের সনন্দ দান করিলেন । বলা বাহুল্য, বিহার বা মুঙ্গেরে তখনও মুসলমানশাসন প্রবর্তিত হয় নাই । @ বক্তিয়ার এইরূপে প্রথমে জায়গীর এবং পরে বিহার ও মুঙ্গেরের শাসনকর্তৃত্ব লাভ করিয়া যুদ্ধসজ্জায় নিযুক্ত হন । সম্রাটু তাহাকে ডাকিয়া লইয়া সনন্দ না দিলে, তিনি জায়গীরদার থাকিয়াই জীবনবিসৰ্জ্জন করিতেন । বক্তিয়ার সনন্দলাভ করিয়া কিরূপে কতদিনে বিহারজয় করেন, মুসলমান-লিখিত ইতিহাসে তাহার দুইটি ভিন্ন ভিন্ন বিবরণ দেখিতে পাওয়া. যায় ; তাহার একটি মিনহাজকর্তৃক সঙ্কলিত জনশ্রুতি ; অপরটি সুমসাময়িক লেখকগণের সুবিজ্ঞাত ঐতিহাসিক তথ্য । মিন্‌হাজের সঙ্কলিত জনশ্রুতি এদেশের জনশ্রুতি নহে ; তিনি বক্তিয়ারের বিহারবিজয়ের প্রায় অৰ্দ্ধশতাব্দী পরে (১২৪৩ খৃষ্টাব্দে ) নিজামুদ্দীন ও সামসুদ্দীন নামক বক্তিয়ারের সেনাদলভুক্ত দুই ভ্রাতার নিকট গল্প শুনিয়াছিলেন,— “বক্তিয়ার দুইশত অশ্বারোহী লইয়া দুর্গদ্বারে উপনীত হইবামাত্র বিহারজয় সুসম্পন্ন হয় ।” অদ্যান্ত ইতিহাসে দেখিতে পাওয়া যায়, বিহারজয় এরূপ অবলীলাক্রমে সম্পন্ন হয় নাই ; দুই বৎসরের অবিশ্রান্ত বধ, যুদ্ধ ও লুণ্ঠনের পর বিহার বক্তিয়ারের করতলগত হইয়াছিল, এবং তাহাকে সম্পূর্ণরূপে অধিকারভুক্ত করিয়া মুসলমান-শাসন প্রবত্তিত করিতে আরও এক বৎসর অতীত হইয়াছিল । তিনবৎসরব্যাপী অসংখ্য সংগ্রামকলহের বিস্তৃত বিবরণ প্রাপ্ত হইবার উপায় নাই ; কিন্তু মুসলমানলিখিত ইতিহাসে ও দেখিতে পাওয়া যায়—বিহাররক্ষার্থ লক্ষ লক্ষ লোক জীবনবিসর্জন করিয়াছিল । অবশেষে তোরণ, প্রাচীর, দুর্গ, প্রাসাদ, সমস্ত চুৰ্ণবিচূর্ণ হইলে, বিহার বিজেতার করতলগত হয় । দুইশত অশ্বারোহার এত কাৰ্য্য সম্পন্ন করা অারব্যোপন্যাসের গল্পে শোভা পায় ; ইতিহাস তাহাকে সত্য ঘটনা বলিয়া গ্রহণ করিতে সন্মত হইবে না । মিনহাজের ইতিহাসের অনুবাদক মেজর রাভাটি ও অধ্যাপক ব্লকম্যান উভয়েই স্বলতানের সনন্দবলে বক্রিয়ারের রাজ্যবিস্তারের কথায় আস্থাস্থাপন করেন নাই । তাহার বলেন,-বক্রিয়ার স্বতন্ত্রভাবেই দেশজন্ম করিয়াছিলেন ; কেবল সুলতানের প্রণা