পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శిసెB দিন, আজ অপেক্ষার দিন, আজ অশ্রুজলে মিলনের দিন, আজিকার দিনাস্তের পরিব্যাপ্ত অন্ধকারে ধরাতলে অভিসারের একরজনী আবিভূত হইবে । কোথা হইতে কোথা চলিলাম ? কিন্তু আজিকার দিনে সহজেই রাত্রির কথা মনে পড়ে । দিন আজ রাত্রির মত প্রায়, সমস্ত স্বখ আজি দুঃখের মত প্রায় । নীপ সুন্দরস্মিত সুন্দরি—তোমার হাস্ত আজি সিন্ধু তলের রত্বের মত অন্ধকার । স্মরচাপ-ভন্ধবিলসিতা, তোমার উজ্জ্বল চক্ষুতারকা আজ ঘনঘোর আকাশের মত বাম্পময় অন্ধকারে আবিষ্ট । কোথায় রাত্ৰি ? কোথায় রাত্রিমুখে সন্ধ্যা ? আজ কিরূপে তাহাকে চিনিয়া লইব ? তাহার লীলাকাশভরা কোমলতা নীলাভ হইতে নীলাভায় বিগলিত হইয়া আজ কখন কোথায় অস্তহিত হইয়া যাইবে – ঘনবিন্যস্ত মেঘের রন্ধে কোথাও তাহাকে দেখিতে পাইব কি ? কিন্তু না,—আজিকার সন্ধ্য। অপুৰ্ব্বতর । একি অভিনব সন্ধ্যা । বিকচ-জবাপুপ-রাগরক্ত এই সায়াহুকাল । ক্ষণকালের জন্ত একটি রক্তমেঘ হইতে কোমলতর রক্তাভা নির্গত হইয়া এমনি তীব্ৰ উজ্জ্বলতা ধারণ করিল যে, মনে হইতেছে, যেন বিশ্বকৰ্ম্মার অগ্নিকুণ্ডে দেবসেনাপতির বহ্রিদগ্ধ কঠিন লৌহবৰ্ম্ম নিৰ্ম্মাণ হইতেছে । রক্তাভার নিম্নদেশে পৃথিবাও একটি বনচ্ছবি মিলাইয়া দিল, বৃষ্টিধোঁত মেঘচ্ছায়াচকিত নিবাত-নিষ্কম্প বনচ্ছবি এমনি প্রগাঢ় সবুজ CR, હૈ ছবিটিকে ও যেন কাৰ্ত্তিকেয়ের बछलध्वँम । [ ৩য় বর্ষ, আশ্বিন । একটি কঠিন তাম্র-ঢালের উপরে উৎকীর্ণ বলিয়াই মনে হইতেছে । মেঘে এবং বনে মিলিয়া একখানি রক্ত-পীত-নীল-হরিততরঙ্গায়িত প্রগাঢ়বর্ণ তাম্রপত্রে খচিত বৃহৎ ছবি । - এই চিত্ৰখানির, এই প্রতিমাখানির বেদিকা—এই অপার মুক্তপ্রান্তর,– এই ছায়ামলিন সিক্ত-মুগন্ধি তৃণক্ষেত্র । ধীরে ধীরে সিক্ত মাঠের প্রতি অণুটিতে সন্ধ্যারাগ প্রবেশ করিয়াছে। কোথাও কালো ছায়া পড়িয়া রহিয়াছে। ক্ষেতের স্থানে স্থানে বর্ষীয় জলরাশি সঞ্চিত হইয়া আছে—ঐথানেই আকাশের বর্ণে ভূবেদিক অতিশয় স্বরঞ্জিত। ঐ যে বাধের বর্ষা"ীত তীরতরুমুলচুম্বিত জলরাশি দেখিতে দেখিতে সমস্ত অবয়বে সিলুর হইয়। উঠিয়াছে, কোথাও বা জলকাস্তি জম্বুরসকষাঙ্কিতবৎ ঈষৎ বেগুনী ॥ ধরণী-গগনের সহাহভূতির মধ্যে, পরস্পরের সিলুরী অমুরঞ্জনের মধ্যে বসিয়া মনে হইতেছে, যেন আমার চারিদিকে নানাবর্ণদন্তুর একটি বিরাটু দড়িমফল ফাটিয়া ভাঙিয়া পড়িয়াছে— চারিদিকেই এই স্বচ্ছতা, সরসতা এবং বর্ণবিলাস । আজ আমার স্তম্ভিত দুঃখিত হৃদয় । তাহা না হইলে চিত্তপটে এই মেঘচ্ছবি বিস্থিত হইয়া, শত উপমায় জীবন্ত হইয়া,এক অলকাপুরী নিৰ্ম্মাণ করিয়া ফেলিত । তাহ হইল না,—সন্ধ্যার ছায়ায় আমার অদৃপ্ত বীণা পদতলে ফেলিয়া দিয়া নিস্তব্ধ হইয়া বসিয়া আছি । সিঙ্গুরলেখা ক্রমে মানিমায় বিলীন হইয়া যাইতেছে । తిఙ R!