পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] আজিকার ভারতবর্ষ। لاسياسي في করিতে হইলে, ভারতবর্ষে একটা সাধারণ লোকমত থাকা আবশ্যক। কিন্তু দেখা যায়, অতি অল্প লোকেই সংবাদপত্রাদি পাঠ করে ও শাসনসংক্রাস্ত বিষয়ে ঔৎসুক্য প্রদর্শন করে । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণপ্রভাবে ও যুরোপীয়দিগের সহিত বিষয়কৰ্ম্মের সংস্রবে, যদি যুরোপীয়সুলভ চিন্তা ও মনোভাব ভারতবর্ষে সংক্রামিত না হইত, তাহা হইলে এই জাতীয় আন্দোলনের অস্তিত্বই থাকিত না । এই সকল সম্পত্তিবিহীন ও পদমর্য্যাদাবিহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিধারী দলের অতিপ্রাচুর্য ন। থাকিলে, এই আন্দোলনের কোন বলই থাকি ত না । ইহাদের আন্দোলন ও দাবীদা ওয়ার সহিত আমাদের মধ্যবিত্ত কৃতবিদ্যম গুলীর আন্দোলন ও দাবীদাওয়ার বিলক্ষণ সাদৃশু দেখা যায় । এই সকল অসন্তুষ্ট ব্যক্তিগণ নুতন কায্যপদ্ধতি প্রবৰ্ত্তিত করিতে চাহে ও নিৰ্ব্বাচনমুলক মন্ত্রিসভার সংগঠন প্রার্থনা করে । * * * ইহার দ্বারা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর স্বার্থসাধন হইবারই কথা । বনেদী রাজn মহারাজা ও যে সকল ধনাঢ্য ব্যক্তি সম্মানের উপাধি ইংরাজ-সরকার হইতে লাভ করিয়াছ, কিংবা লাভ করিবার আশা করে, এই আন্দোলনের সহিত তাহাদের কোন সহানুভূতি নাই। পক্ষাস্তরে, শ্রমজীবকযিজীবী প্রভূতি নিরক্ষর ইতরলোকের স্বীয় দুঃখদুর্দশার কারণ কিছুই বুঝিতে পারে নী, সুতরাং তৎপ্রতিক রেয় উপায় ও সরকারকে জানাইতে পারে না ; তাই, এই আন্দোলনে তাহারা যোগ দেয় নাই । আবীর, আমাধের কৃতবিদ্য মধ্যমশ্রেণীর লোকেরা এ সকল বিষয়ে যেরূপ ইতরলোকের সাহায্য প্রার্থনা করে, এখানকার সেই শ্রেণীর লোকের সে-সব-কিছু করে না। নিরক্ষর দরিদ্রশ্রেণীর মধ্যে যুরোপে যেরূপ জাতীয়ভাবের স্ফৰ্ত্তি দেখা যায়, “জাতীয় কংগ্রেস” এই নাম-গ্রহণ-সত্ত্বেও, দেশসাধারণ জাতীয়ভাব ভারতবর্ষে কুত্রাপি cप्तांधं यiश्च नः । ভারতবর্ষে ইংরাজের প্রতি যত-না বিদ্বেষ, তাহ অপেক্ষ হিন্দু-মুসলমান পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষভাব আরও অধিক । তত্রস্থ বিভিন্ন বর্ণের লোকের আপনাদিগকে পরস্পরের সম্বন্ধে যেন বিদেশী বলিয়া অনুভব করে। এ বড় আশ্চর্য্যের বিষয়, কংগ্রেসের এই ক্ষুদ্র কৃতবিদ্যমণ্ডলীর মধ্যেও এই চিরাগত জাতিভেদের স্মৃতি বিলুপ্ত হয় নাই ; তবে, কতকটা ক্ষীণ হইয়া আসিয়াছে বলিতে হইবে । এখনও তাহণদের মধ্যে জাতীয় একতার পুর্ণপ্রতিষ্ঠা হয় নাই । যে-সকল ভাব ও জ্ঞানের কথা প্রাচ্যদেশে কস্মিন কালেও জানা ছিল না, তাহাই প্রতিবাদকারার দল মুদ্রাযন্ত্রের সাহায্যে ও বক্তৃতাযোগে দেশময় প্রচার করিতে সঙ্কল্প করিয়াছেন । এই বিরাষ্ট্র চেষ্টার কথা ভাবিতে গেলে একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া যাইতে হয়। আবার ইংলণ্ডের জনসাধারণ অমুকুল না থাকায় “স্বদেশীয়” দলের পক্ষে কাৰ্য্যসিদ্ধি' আরও কঠিন হইয়া পড়িয়াছে। ইংরাজদিগের মধ্যে আমূল সংস্কারের একটি ক্ষুদ্র দল আছে, তাহারাই এই শিক্ষিত ভারতবাসীদিগের দাবীদাওয়া সাদরে গ্রহণ করে । কিন্তু ইংরজি জাতীয় অধিকাংশ লোকই ইহার