পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যt. ] তাহা হাস্নাইতে বসিয়াছি । গ্রীস ও রোম তাহীদের প্রাচীন বীরত্ব ফিরিয়া পায় নাই । বয়োবৃদ্ধ ও জ্ঞানবৃন্ধের প্রাপ্য মৰ্য্যাদ। দেখাইয়া সসন্ত্রমে যুরোপ তাহাদের স্বাধীনতা রক্ষা করিতেছে মাত্র । উহাদের অপেক্ষ৷ উচ্চত্তর ও উজ্জলতর মর্য্যাদা ভারতের প্রাপ্য। যে তপস্তা আমাদের পুর্বপুরুষগণের ছিল—সেই তপস্তা অক্ষুণ্ণ ও আ প্রতিহত রাখিলে তাহদের প্রদত্ত অমুল্য শাস্ত্র ও ব্রহ্মজ্ঞানে আমাদের অধিকার জন্মিবে । আমাদের মত সেই তপস্ত। কোন জাতি করে নাই এবং যেদিন প্রজ্বলিত গৃহকলহে যুরোপের প্রবৃত্তিসঞ্জাত বিষম প্রতিদ্বন্দ্বিতীর শেষ জাহতি পড়িবে, সেদিন পরিতপ্ত জগৎ ৰ্যাকুলভাবে শাস্তি ও প্রাতি শিক্ষার জন্ত চতুদিকে তাকাইবে, সেইদিন ভারতবর্ষ মহাশিক্ষক—মহtভিষক রূপে তাহার ব্যথিত স্থানে নিবৃত্তি ও পরার্থপ্রীতির হস্ত বুলাইয়া দিবেন এবং অঙ্গুলিসঙ্কেতে সেই মহারাজরাজেশ্বরকে চিনাইয়া দিবেন—যাহার শাস্তিময়, অমৃতময় নিকেতনের আভাস পাইলে মাহুষের ভয় ও অশাস্তি চিরতরে ঘুচিয়া, যায় ; আমাদের কল্পনা এই দৃপ্ত শাকিয়া হৃষ্ট হইতেছে । যে অস্ত্রশস্ত্রের ঝনঝন চারিদিকৃ হইতে শ্রুত হইতেছে—ইহ প্রলয়েয় স্বচনা করিতেছে । ইহ। যুরোপের নানা শিল্পসৌন্দর্য্যে উদ্ভাসিত বিলাসকল৷ শোভিত রাজধানাগুলিকে মহাশ্মশানে পরিণত করিবার আশঙ্কা দেখাইতেছে,--য়ুরোপের আকাশচুম্বী মন্থমেণ্টগুলির শীর্ষে গৃধ্ৰুৱাজ বসিয়া চতুর্দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছেন, এইরূপ মনে হয়। এই অস্ত্রশস্ত্র—মৃত্যুর এই ভয়বই যন্ত্রগুলি যে অগ্নিজাল উদিগরণ করিবে, আমাদের ভষ্ট্ৰী অবতার । లిపిశt তাহাতে হয় ত য়ুরোপে দ্বিতীয় কুরুক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠ হইবে । যাহাদের এত তেজ ও পরস্পরেয় সহিত এত প্রতিদ্বন্দ্বিত, তাহারা এই বিষময় জালা বেশিদিন ধারণ করিয়া রাথিতে পারিবে না ; মহামন্দ্রে বেদিন লৌহযন্ত্রগুলি অগ্নি উদিগরণ করিবে, সেদিন স্পৰ্দ্ধ, বিক্রম ও অহঙ্কারের হয় ত শেষ আহুতি পড়িবে, সেইদিন য়ুরোপের গতি হয় ত ভিন্নদিকে প্রবাহিত হইবে । এই . দুষ্টব্ৰণ উদগীরিত হুইয়া যাউক । এই . যে অৰ্দ্ধপৃথিবী গ্ৰাস করিতে উদ্যত হইয়া রুষভল্লুক রোষকষায়িতনেত্ৰে পৃথিবীর চতুৰ্দ্দিকে দৃষ্টিপাত করিতেছে .ও শান্তিময় ক্ষুদ্র জাপান-রাজ্যখানিকে এক প্রাণান্তক থাবtয় চুর্ণ করিয়া ফেলিবার স্পদ্ধ করিতেছে, এই ভল্ল করাজের উদ্যত পাদমুষ্টিই য়ুরোপের সমৃদ্ধিলক্ষ্মীকে চিরবিনাশের পথে লইয়। যাইবার পূর্বাভাস দিতেছে কি না, কে বলিবে ? কিন্তু নিষ্ঠুরতা ও বৈষম্যের পরে শাস্তির দিন আছে । এমন দিন আসিতে পারে, যখন শান্তির জন্ত জগতে হাঁহাকার উঠিবে। হে ভারতবাসি, তুমি ধারহস্তে সন্ধ্যার ধ্রুবজ্যোতি,—নিবৃত্তির আলো জালাইয়া রাথ। এই হট্টগোলপুর্ণ বিদ্বেষস্থষ্ট কলরবের দিবাবসানে মানবজাতি হয় ত পুনশ্চ এই দীপের অনুসন্ধান করিবে, ইহার নিৰ্ম্মল ভাতিতে তাহার চক্ষে নবজ্যোতি ফিরিয়া আসিবে ; হিন্দু, এই দ্বীপ নিবাইও না । তোমার চরিত্র সংযত হউক, সামাজিক শত শত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করিয়া, নিৰ্ম্মলদেহে নিৰ্ভীক অস্তঃকরণে তপস্ত কর –সত্যনিষ্ঠ, বিষয়ে বৈরাগ্য, অবস্থার প্রতি উপেক্ষা শিখিয়া শরীর ও মনকে ফুঃখকষ্টে অভ্যস্ত কর।