পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] কাগজ স্থখানিই অন্নদণবাবু হাতে রাখিয়াছিলেন, কোনটিতে হাতের-পাচ রক্ষণ হইবে, খেলা শেষের দিকে আসিবার পূৰ্ব্বে তাহ ঠিক বুঝা.বাইতেছে না । রমেশ বুঝিয়াছিল, স্পষ্টকথা ন হইলেও সে যেন পণে আবদ্ধ । সাহিত্য পড়িয়া তাহার যতটুকু অভিজ্ঞতা হইয়াছিল, তাহাতে সে বুঝিয়াছিল, হেমনলিনী তাহার প্রতি বিমুখ নহে । কবি বলেন, শ্রত রাগিণীর চেয়ে আশ্রত রাগিণী মিষ্টতর—হুেমনলিনীর সম্বন্ধে রমেশের সেই রাগিণীরই চর্চা বেশি করিয়া, হইতেছিল । উচ্চারিত প্রতিজ্ঞার -rচয়ে- অমুচ্চারিত প্রতিজ্ঞার বাধন লোকবিশেষের কাছে দৃঢ়তর—রমেশ সেই ধাতুর লোক । o সেদিন চারের টেবিলে খুব একটা তর্ক উঠিয়াছিল । অক্ষয় ছেলেটি বেশি • পাস করিতে পারে নাই । কিন্তু তাই বলিয়া সে বেচারার চা-পানের এবং অদ্যান্ত শ্রেণীর তৃষা পাসূ-করা ছেলেদের চেয়ে কিছু কম ছিল, তাহা নহে । সুতরাং হেমনলিনীর চায়ের টেবিলে তাহাকেও মাঝে মাঝে দেখা যাইত । সে তর্ক তুলিয়াছিল যে, মেয়েদের পাস করাটা বিড়ম্বন । মেয়েদের পক্ষে লজিক্‌ মুখস্থ করা বৃথা-কারণ, স্বভাবে যাহা নাই, শিখিয়া তাহা হয় না, অন্ধের পক্ষে আলোক অনাবস্তক। মেয়ের হাজার পাস করুকু, তৰু একজন অল্প-পাদ-কৱল পুরুষ তাহাদিগকে সকল বিষয়েই নির্ভর দিতে পারে । কারণ পুরুষের বুদ্ধি গঙ্গের মত, শান বেশি ন৷ দিলেও কেবল ভারে অনেক কাজ করিতে পারে ; মেয়েদের বুদ্ধি কলমকাট ছুরির মত, Gł নৌকাডুৰি। రిరి যতই ধার দাও না কেন, তাঁহাতে কোন বৃহৎ কাজ চলে না—ইত্যাদি । হেমনলিনী অক্ষয়ের এই প্ৰগলভতা নীরবে উপেক্ষণ করিতে প্রস্তুত ছিল । কিন্তু স্ত্রীবুদ্ধিকে খাট করিবার পক্ষে তাহার ভাই যোগেন্দ্রও যুক্তি অনিয়ন করিল । তখন রমেশকে আর ঠেকাইয়া রাখা গেল না । সে উত্তেজিত . হইয়া উঠিয়া স্ত্রীজাতির স্তবগান করিতে . আরম্ভ করিল । ৮ সে এই কথা বলিল যে, একসময় পৃথিবীতে ম্যtষ্টডন, ডাইনোসরাস প্রভৃতি বিপুলদেহ জন্তুর প্রাদুর্ভাব ছিল, . এখন কোমলকায় স্বল্পস্নায়ু মানুষের রাজত্ব । তেমনি সভ্যতার যত উন্নতি হইবে, ততই । পুরুষের প্রভাব খৰ্ব্ব হইয়া স্ত্রীজাতির প্রভাবুই বাড়িতে থাকিবে । স্ত্রীলোককে ছোট মনে . করা তাহার মতে বর্বরতার লক্ষণ। মানুষের সভ্যত ক্রমশই নারীপুজার দিকে অগ্রসর হইতেছে । এইরূপে রমেশ যখন নারীভক্তির-উচ্ছ - সিত উৎসাহে অন্তদিনের চেয়ে দু-পেয়ালা চা বেশি খাইয়া ফেলিয়াছে, এমন-সময় বেহীরা তাহার হাতে একটুকুর চিঠি দিল । বহির্ভাগে তাহার পিতার হস্তীক্ষরে তাহার নাম লেখা । চিঠি পড়িয়া তর্কের মাঝখানে ভঙ্গ দিরা রমেশ শশব্যুস্তে উঠিয়া পড়িল । ক্ষকলে - জিজ্ঞাসা করিল, “ব্যাপারটা কি ?” রমেশ কঙ্গিল, “বাবা দেশ হইতে আসিয়াছেন।” * হেমনলিনী বোগেন্দ্রকে কহিল, "দাদা, রমেশবাবুর বাবাকে এইখানেই ডাকিয়া আন না,কেন, এখানে চায়ের সমস্ত প্রস্তুত আছে ।” রমেশ তাড়াতাড়ি কহিল, “না, আজি থাক, उप्रांभि शtझे ।”