পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উঠিয় কমলাকে একটা কামরায় বসাইয়৷ আসিল – এবং তাড়াতাড়ি কিছু দুধ, চালডাল এবং একছড়া কলা কিনিয়া লইল । এদিকে অক্ষয় অন্ত ষ্টীমারে সকল আরোহীর আগে উঠিয়া মুড়িসুড়ি দিয়া, এমন একটা জায়গায় দাড়াইয়া রহিল, যেখান হইতে অদ্যান্ত বাত্রীদের গতিবিধি পৰ্য্যবেক্ষণ করা যায় । যাত্ৰিগণের বিশেষ তাড়া ছিল না । জাহাজ ছাড়িবার দেরি অাছে—তাহার এই অবকাশে মুখ-হাত ধুইয়া, স্নান করিয়া, কেহ কেহ বা তীরে রাধাবাড়া করিয়া খাইয়া লইতে লাগিল । অক্ষয়ের কাছে গোয়ালন্দ পরিচিত নহে । সে মনে করিল, নিকটে কোথাও হোটেল বা কিছু আছে, সেইখানে রমেশ কমলাকে খাওয়াইয়া লইতেছে । অবশেষে ষ্টীমারে বঁাশী দিতে লাগিল । তখনো রমেশের দেখা নাই । কম্পমান তক্তার উপর দিয়া যাত্রীর দল জাহাজে উঠিতে আরম্ভ করিল । ঘনঘন বঁাশীর ফুৎকারে লোকের তাড়া ক্রমেই বাড়িয়া উঠিতে লাগিল। কিন্তু আগত ও আগন্তুকদের মধ্যে রমেশের কোন চিহ্ল নাই । যখন আরোহীর সংখ্যা শেষ হইয়া আসিল—তৰণ টানিয়া লইল এবং সারেং নোঙর তুলিৰার হুকুম করিল, তখন অক্ষয় ত্যপ্ত হইয়া কছিল, “আমি নামিয়া যাইব”—কিন্তু খালাসিরা তাহার কথায় কর্ণপাত করিল না । ডাঙ। দূরে ছিল না, অক্ষয় ষ্টীমার হইতে লাফ দিয়া পড়িল । তীরে উঠিয়। রমেশদের কোন খবর পাওয়া গেল না । অল্পক্ষণ হইল, গোয়ালন্দ হইতে সকালবেলাঙ্গর প্যাসেঞ্জার-ট্রেন কলি वेंछत्र-ब्नेि । [ ৩য় বর্ষ, পৌৰ । - কাতা-অভিমুখে চলিয়া গেছে । অক্ষয় মনে মনে ভাবিল, কাল রাত্রে গাড়িতে উঠিবtল্প সময়কার টানাটানিতে নিশ্চয় সে রমেশের দৃষ্টিপথে পড়িয়াছে এবং রমেশ তাহার কোন বিরুদ্ধ অভিসন্ধি অনুমান করিয়া দেশে না গিয়! আবার সকালের গাড়িতেই কলিকাতায় ফিরিয়া গেছে । কলিকাতায় যদি কেশন লোক লুকাইবার চেষ্টা করে, তৰে ত তাহাকে বাহির করাই কঠিন হইবে । “及8 অক্ষয় সমস্তদিন গোল্লালন্দে ছট্‌ফট্‌ করিয়া কাটাইয়া সন্ধ্যার ডাকগাড়িতে উঠিয়া পড়িল । পরদিন ভোরে কলিকাতায় পৌছিয়া প্রথমেই সে রমেশের দর্জিপাড়ার বাসায় আসিয়া দেখিল, তাহার দ্বার বন্ধ--খবর লইয়া জানিল, সেখানে কেহই আসে নাই । কলুটোলায় আসিয়া দেখিল, রমেশের বাস শুন্ত । অন্নদীবাবুর বাসায় আসিয়া যোগেঞ্জকে কহিল “পালাইয়াছে—ধরিতে পারিলাম না ।” যোগেন্দ্ৰ কহিল—“সে কি কথা ?” অক্ষয় তাহার ভ্রমণবৃত্তান্ত বিবৃত করিয়া বলিল । 季 অক্ষয়কে দেখিতে পাইয়া রমেশ কমলাকে স্বদ্ধ লইয়া পালাইয়াছে, এই খবরে রমেশের বিরুদ্ধে বোগেন্দ্রেয় সমস্ত সন্দেহ নিশ্চিত বিশ্বাসে পরিণত হইল । যোগেন্দ্র কহিল—“কিন্তু অক্ষয়, এ সমস্ত যুক্তি কোন কাজেই লাগিৰে ন.। শুধু হেমনলিনী কেন, বাবা-মৃদ্ধ ঐ এক বুলি ধরিয়াছেন—তিনি বলেন, রমেশের নিজের মুখে শেষ কথা না শুনিয়া তিনি রমেশকে জৰিশ্বাস