পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । লিখনকৈ সফল’করিতে পারে । এই ভাবিয়া রমেশ নৌকার ছাদে বসিয়া চশমা অঁাটিয়া বই পড়িতে লাগিল। পাড়ার কুতুহলী নারীগণ কলসকক্ষে ঘোমটার ভিতর দিয়া রমেশকে পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া যাইত—তাহাতে সে জক্ষেপমাত্র করিত না । কোন অবগুষ্ঠিত দৃষ্টির সহিত তাহীর চশমাবৃত চক্ষুর সংঘাত স্বটে নাই । খোটায় বাধা গোরু যেমন অদূরে সরস-গুণমল মটর-কলাইয়ের ক্ষেত থাক সত্ত্বেও শুকুনো খড় চিবাইয়া রোমস্থন করিতে থাকে, তেমনি রমেশ তাহার সমস্ত কৌতুহলকে কেবল ছাপ-বহির শুষ্কপত্রেই অবরুদ্ধ _করিষ্কা’ রাখিয়াছিল, তীরবর্তী কলালাপপরায়ণ নারীসম্প্রদায়ের দিকে তাহণকে বিক্ষিপ্ত হইতে দেয়ু নাই। এইরূপে রমেশ আপন খুঁটির প্রতি সন্মানরক্ষণ করিল। হেমনলিনীর চা-পান-মণ্ডপে স্থান পাইবার যোগ্যত সে অতি যত্নে বঁাচাইয়া চলিয়াছিল ! ు) বিবাহের শুভলগ্নকে পৌছিয়া দিবার ভার যে গ্রস্কের উপর ছিল, সে নিজের কর্তব্যে কোন ক্রটি করিল না। প্রাতঃকালে ঢোল-রস্কনচৌকি বাজিয়া গ্রামের কণকগুলাকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করিয়া . তুলিল। তাহারা চীৎকারশব্দে চিস্তাভার লঘু করিবার চেষ্টা করিল—কিন্তু একটি উচ্চশ্রেণীর দ্বিপদ ছিল, বৰ্ত্তমানক্ষেত্রে তাহার উদ্বেগ ও আশঙ্কা পক্ষীদের চেয়ে অনেক বেশি হইলেও আকাশময় শকা করিয়া বেড়াইবার অবারিত ক্ষমতা ও অসঙ্কুচিত অধিकीब ७iशत्र झ्णि ना । बनेि ¢नह भखि थकिङ, তবে সে অস্তু প্রত্যুষে অস্তগামী esي বিদীর্ণ করিয়া দিত । 象 আজি সন্ধ্যাবেলায় রমেশের উদ্ধাহবন্ধন । তাহার পূৰ্ব্বে যথাস্থানে বিদায়পত্র লিখিরার জন্য সে কাগজকলম লইয়া বসিল । কি লিখিবে, কেমন করিয়া লিখিবে ! যে হৃদয় বন্ধনবাক্যের দ্বারা কখনো জড়িত হয় নাই, ভাষা যাহাকে আজো স্পর্শ করে নাই, বাক্যের দ্বারা আজ তাহার গ্রস্থি খুলিবে কি ৷ উপায়ে ? নীরব নেত্রের যেখানে অধিকার আছে, বাক্যের পক্ষে সেখানে পদার্পণ স্পৰ্দ্ধামাত্র। রমেশ লিখিল, “দেবি, অপরাধ করিতে চলিলাম ! ক্ষমা প্রার্থনা করিবার এবং ক্ষম। আশা করিবার অধিকার আগমীর - নাই । যে দুঃখভার আজ হইতে বহন করিতে উদ্যত হইয়াছি, দণ্ডদুণত বিধাতা তাহা অপেক্ষ গুরুতর অভিশাপ অামাকে দিতে পারেন না । তোমাকে যদি বেদনা দিয়া থাকি, চিরজীবনের বেদনার দ্বারা তাহার প্রায়শ্চিত্ত হইবে।” এ কথা শুনিয়া তোমার কোন সুখ আছে কি না, জানি না— কিন্তু বলিয়া আমার তৃপ্তি হয় যে, হৃদয়ের যে অংশ তোমাকে উৎসর্গ করিয়াছি, সেখানে কোনদিন আর কেহ পদার্পণ করিৰে না ।” .এই চিঠি রমেশ অনেক ক্লাটাকুট করিয়া লিখিয়া বহুযত্নে ভাল কাগজে নকল করিয়া থামে পুরিয়া হেমনলিনীর নাম ও ঠিকানা লিখিয়া গাল দিয়া মুড়িয়া একবার অনেকক্ষণ দক্ষিণহস্তে ধরিয়া রাখিল । তাহার-পরে বাক্সর ভিতর রাখিয়া দিল। এ চিঠি রমেশ কখনো ডাকে দেয় নাই । ইহা হেমনলিনীর উদেশে লিখিত্বমাত্র। জীবনটাকে রমেশ যে