পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম সংখ্যা । ] - সূক্ষমশরীর। স্কুলশরীরের সহিত স্বাক্ষশরীরের মিল রহিস্বাছে, ইহা বলা বাহুল্য ; কেন না তাহ থাকিৰারই কথা । মিল আছে, তাহা সকলেই জানে ; কিন্তু “মিল আছে” জানিয়া, বলিয়৷ থাকিলে চলিবে না; মিল কোনখানে কিরূপ, তাহা খুজিয়া-পাতিয়া বাহির করা চাই । আমরা দেখিতেছি মিল আপাদ-মস্তক খাপেখাপে । এইমাত্র আমরা দেখিলাম যে, স্থলশরীরের মূল প্রদেশে শিকড় ফাদির রহিয়াছে (১) চেতোবহী, (২) কৰ্ম্মবহা, (৩) মৰ্ম্মবহ, এই তিন শ্রেণীর তৈজস-নাড়ী। ঐ তিন শ্রেণীয় নাড়ীর মধ্য দিয়া তিনপ্রকার শক্তি স্বস্ব গন্তব্যপথে পদসংক্রমণ করে ; চেতোবহt'র মধ্য দিয়া পদসংক্রমণ করে ধীশক্তি, কৰ্ম্মবহা’র মধ্য দিয়া ইচ্ছাশক্তি, মৰ্ম্মবহা’র মধ্য দিয়া জীবনী শক্তি । ঐ তিনপ্রকার শক্তির কৰ্ম্মস্থান হ’চ্চে দশেন্দ্রিয় ; বাসস্থান হ’চ্চে বুদ্ধি, মন, প্ৰাণ । দশেন্দ্রিয় বলিতে দশেন্দ্রিয়ের স্থল আবরণ বুঝিলে চলিবে না— চক্ষুকৰ্ণাদি বুঝিলে চলিবে না। এটা দেখ। চাই যে, দর্শনশ্রবণাদি ইন্দ্রিয়গণ জাগ্রৎকালেও যেমন, ‘স্বপ্নকালেও তেমনি, দুই কালেই স্বস্ব কার্য্যে ব্যাপৃত হয় ; আর সেই সঙ্গে এটাও দেখ। চাই যে , চক্ষুঃশ্রোত্রাদির কপাট জাগ্রৎকালেই খোলা থাকে ; স্বপ্নকালে বন্ধ থাকে। এখন কথা হ’চ্চে এই যে, চক্ষুঃশ্ৰোত্রাদির কপাট খোলা থাকৃ বা না থাকৃ— এটা স্বীকার-করিতেই হইবে যে, উভয় অবহাতেই শ্রবণকাৰ্য্য শ্রবণেন্দ্ৰিয়েরই কাৰ্য্য, দর্শনকাৰ্য্য দর্শনেঞ্জিয়েরই কাৰ্য । ফল কথা এই ৰে, চক্ষুঃশ্রোত্রাদি কেবল দৰ্শন সার সত্যের আলোচনা। 893 শ্রবণাদির স্থল অবিরণ, তা বই তাহার। সাক্ষাৎ দর্শনশ্রবণাদি নহে । দর্শনশ্রবপাদি হ’চ্চে তলোয়ার, চক্ষুঃশ্রোত্রাদি হ’চ্চে খাপ । ইহাতে দাড়াইতেছে এই ( শাস্ত্রেও লেখে তাই ) যে, দশেন্দ্রিয় স্বল্পশরীরেরই অঙ্গ—তবে কিনা বহিরঙ্গ ; অস্তরঙ্গ হ"চ্চে প্রাণ, মন, বুদ্ধি ; আর, হরের মধ্যবর্তী বন্ধনরজজু হ’চ্চে জীবনী শক্তি, ইচ্ছাশক্তি এবং ধীশক্তি । স্বল্পশরীরের বহিরঙ্গের এ-মুড়া হইতে অস্তরঙ্গের ও-মুড়া পৰ্য্যস্ত জ্ঞানপরিস্ফুটনের কেমন যে সুচারু সোপানব্যবস্থা, তাহার একটা নমুনা দেখাই; তাহা হইলেই স্বাক্ষশরীরের কলকারখানার কার্য্যনিৰ্ব্বাহপদ্ধতির অনেকটা সন্ধান পাওয়া যাইতে পরিবে । a দর্শনেন্দ্রিয়ের কার্য্য হ’চ্চে দ্যাখা । কিন্তু মঙ্গুষ্যের দ্যাথা একরকমের দ্যাথা ; অপরাপর জন্তুদিগের দ্যাথা আরেক রকমের দ্যাথী ; দুই রকমের এই দুই দ্যাথার মধ্যে প্রভেদ রহিয়াছে খুবই স্পষ্ট। বহুরূপিনামক জস্তর। অষ্টপ্রহর অমনস্কভাবে চক্ষুরুন্মীলন করিয়া চাহিয়া থাকে, কিন্তু দ্যাখে যে কি, তাহা তাহারাই জানে । নিদ্ৰিত ব্যক্তির নেত্র দৈবক্রমে অৰ্দ্ধোশ্মীলিত হইলে তাহা যেমন পলকশূন্ত অচল-ভাবে চাহিয়া থাকে মাত্র—বহুরূপীদের পলকপূন্ত চক্ষের স্বাঞ্চ । অনেকটা সেই রকমের স্বাখা । বহুরূপী জন্তুর চক্ষের চাহনি'র ভাব দেখিলে এটা বেশ বুঝিতে পারা বায় যে, তাহার নিকটে সন্মুখস্থিত দূপ্তের কোনো খবরই নাই । শিকারান্বেষী ব্যান্ত্রের স্বাখা আবার আর-একরকম। শিকারান্বেষী ব্যাক্স যখন