পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8¢bዎ পায় । “আমি গোলাপফুল দেখিতেছি” এই বিশেষ-জ্ঞানে দৃশুমান গোলাপফুলের সত্তাই প্রকাশ পায় । কেহ বলিতে পারেন—“বিশেষ-জ্ঞানে দৃশুমান গোলাপফুলের সত্তা প্রকাশ পায়” এ যাহা তুমি বলিতেছ, এ কথা আমি মানি ; কিন্তু *সামান্ত-জ্ঞানে আত্মসত্তা প্রকাশ পায়” এ কথাটা আমার নিকটে তেমন প্রামাণিক বলিয়া প্রতীয়মান হইতেছে না । সত্য বটে যে, সামান্ত-জ্ঞানে জ্ঞানের নিজ-সভা প্রকাশ পায়, কিন্তু জ্ঞানের নিজ-সভা তো আর আত্মসত্তা নহে, জ্ঞাতা’র নিজ-সত্তাই আত্মসত্তা । ইহার উত্তরে পাতঞ্জল-যোগস্থত্রের প্রসিদ্ধ বৃত্তি-কার ভোজরাজ কি বলিতেছেন —তাহ প্রণিধান কর । পাতঞ্জল-যোগশাস্ত্রের সমাধিপাদের নবম স্বত্র এই যে, “শব্দজ্ঞানামুপাতী বস্তুশুন্তো বিকল্পঃ ” শব্দ-জ্ঞানের পাছু-পাছু দৌড়ায় যেএকপ্রকার বস্তুশূন্ত অধ্যবসায় (অর্থাৎ কঁকো আtওয়াজ ), তাহারই নাম বিকল্প । বৃত্তিকার ইহার ভাবার্থ খোলসা করিয়া ভাঙিয়া বলিতেছেন এইরূপ s— বত্তনস্তথাত্বমনপেক্ষমাণে যেহিধ্যবসায়: স বিকল্প উচ্যতে। যথা পুরুষপ্ত চৈতন্যং স্বরূপমিতি । অত্র দেবদত্তস্ত কম্বল ইতি শব্দজলিতে জ্ঞানে ষষ্ঠ্য যোহধ্যবসিতে ভেদস্তমিহাবিদ্যমানমপি সমারোপ্য প্রবর্ততেহধ্যবসায়3। বস্তুতন্তু চৈতস্কমেব পুরুষঃ I” ইহার অর্থ।—বস্তটা যে কি,তাহার প্রতি দৃষ্টি না করিস্থা যদি কোনো কথা শূদ্যের উপরে লিডু করানো হয়, তবে তাহারই নাম বিকল্প ; যেমন, “পুরুষের (অর্থাৎ আত্মার ) চৈতন্য” এই একটি কথা। আত্মার চৈতন্ত বলিলে বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ মাঘ । বুঝায়—দেবদত্তের কম্বলের স্তায় চৈতন্ত যেন আত্মার উপরে বাহির হইতে চাপানো হইয়াছে। বস্তুত চৈতন্যই আত্মা । স্কট্‌লাগুদেশীয় প্রসিদ্ধ দর্শনকার হামিণ্টনও তাঁহাই বলেন । চৈতন্ত কিনা Selfconsciousness | * PRforE &TFTG TCsI=I—“zIsfsS"Ð (consciousness) আত্মা l তিন কালের তিন মহাপণ্ডিত একবাক্যে বলিতেছেন যে, চৈতন্তই আত্মা | এরূপ একটা সৰ্ব্ববাদিসম্মত কথা’র ছল ধরিতে চেষ্টা না করিয়া উহার তাৎপর্য্য এবং মৰ্ম্ম সবিশেষ প্রণিধানপুৰ্ব্বক বুঝিয়া দেখাই শ্ৰেয়ঃকল্প । এ কথা তে কেহ অস্বীকার করিতে পারিবেন না যে, চৈতন্ত আপনি আপনার নিকটে প্রকাশ পায় । তবেই হইতেছে যে, চৈতন্য আপনিই জ্ঞান, আপনিই জ্ঞাত, আপনিই জ্ঞেয়, তিনই একাধারে । অতএব এটা স্থির যে, চৈতন্তরূপী সামান্ত-জ্ঞানে আত্মসত্তা স্বতঃপ্রকাশমান । তা ছাড়া, ংখ্যসারনামক একখানি অনতিপ্রাচীন গ্রন্থে এইরূপ লেখে যে, "ভ্রষ্টা সামান্ততঃ সিদ্ধে জানেইহুমিতি ধীবলাৎ ” “সামান্তত ‘জানিতেছি? এইরূপ -বুদ্ধির বলেই দ্রষ্টা সিদ্ধ হয় অর্থাৎ দ্রষ্টার সত্তা - সপ্রমাণ হয় ।” আমরা ও তাহাই বলিতেছি ; বলিতেছি যে, দ্রষ্ট। সামান্ত-জ্ঞানের দ্বার দিয়া আত্মসত্তা উপলব্ধি করে । , সামান্ত-বিশেষের পরস্পরাপেক্ষিত । উপরে দেখা গেল যে, বুদ্ধির জ্ঞানালোকে যখন সত্তা প্রকাশ পায়, তখন আত্মসত্তা এবং বস্তসত্তা, দুইই একযোগে প্রকাশ পায়। আত্মসত্তা প্রকাশ পায় সামান্ত-জ্ঞানে ;