পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

母今e বঙ্গদর্শন । [ ৩য় বর্ষ, মাষ । কোনো মধ্যপণ নাই । তবু হেমনলিনীয় আশ্রয় আছে-- এখনো হেমনলিনী রমেশকে ভুলিতে পারে, সে আর কাহাকেও বিবাহ করিতে পারে, কিন্তু কমলাকে ত্যাগ করিলে এ জীবনে তাহার আর কোনো উপার নাই । মানুষের স্বার্থপরতার অস্ত নাই । হেমনলিনীর ষে রমেশকে ভুলিবার সম্ভাবনা অাছে, তাহার রক্ষার উপায় আছে— রমেশের সম্বন্ধে সে যে অনন্তগতি নহে, ইহাতে রমেশ কোনো সাৰ্ব্বনা পাইল না, তাহার আগ্রহের অধীরতা দ্বিগুণ বাড়িয়া উঠিল । মনে হইল, এখনি হেমনলিনী তাহার সম্মুখ দিয়া যেন স্থলিত হইয়া, --চিরদিনের মত অনায়ত্ত হইয়া চলিয়া যাইতেছে, এখনো যেন বাহু বাড়াইয়া তাহাকে ধরিতে পারা স্বায় । - দুই করতলের উপরে সে মুখ রাথিয়া ভাবিতে লাগিল। দুরে শৃগাল ডাকিল, গ্রামে দুই-একটা অসহিষ্ণু কুকুর খেউ-খেউ "করিয়া উঠিল । রমেশ তখন করতল হইতে মুখ তুলিয়া দেখিল, কমলা জনশূন্ত অন্ধকার ডেকের স্নেলিং ধরিয়া দ ভাইয়া আছে । রমেশ চৌকি ছাড়িয়া উঠিয়া-গিয়া কহিল, “কমল, ভূমি এখনো শুইতে যাও নাই ? রাত ত কম . छ्ब्र नोहे !” • কমলা কহিল - “তুমি গুইতে যাইবে नां ?* রমেশ কহিল—“আমি এখনি যাইব, পূবদিকের কামরায় আমার বিছানা হইশছে। তুমি আর দেরি করিয়ে না।” কমলা আর কিছু না বলিয়। ধীরে ধীরে তাছার নির্দিষ্ট কামরায় প্রবেশ করিল। Qጓ আর রমেশকে বলিতে পারিল না যে, কিছুক্ষণ আগেই সে ভূতের গল্প শুনিয়াছে, এবং তাহার কামরা নির্জন । রমেশ কমলার অনিচ্ছুক মন্দপদবিক্ষেপে অস্তঃকরণে আঘাত পাইল--- কহিল, “ভয় করিয়ো না কমল—তোমার কামরার পাশেই আমার কামরা-~~মাঝের দরজা খুলিয়। রাখিব ।” কমল। স্পদ্ধাভরে তাহার শির একটুখানি উৎক্ষিপ্ত করিয়া কহিল--- “আমি ভয় করিব কিসের ?” রমেশ তাহার কামরায় প্রবেশ করিয়া বাতি নিবাইয়ী-দিয়া শুইয়া পাড়ল—মনে মনে কহিল, “কমলাকে প্রত্যাগ করিবার কোনো পথ নাই, অ তএব হেমনলিনীকে বিদায় । আজ ইহাই স্থির হইল, আর দ্বিধা কল্প চলে না ।” হেমনলিনীকে বিদায় বলিতে যে জীবন হইতে কতখtiন বিদায়, তাহ অন্ধকারের মধ্যে শুইস রমেশ অনুভব করিতে লাগিল । তখন হেমনলিনীর প্রতি একটি অত্রপুর্ণ অভিমানে রমেশের সমস্ত হৃদর পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল । যে হেমনলিনী তাহার সম্পূর্ণ পর হইয়া গেছে, সেই ভবিষ্যতের হেমনলিনী* তাহার কল্পনানেত্রের সম্মুথে উদিত হইল । রমেশের কথা এখন তাহকে কেহ স্মরণ করাইল্প দিলে তাহার লজ্জাবোধ হয়, হাসি পায় । রমেশের সহিত সম্বন্ধ এখন তাহার পক্ষে একসময়কার ছেলেখেলামাৰ হুইল্পী উঠিয়াছে। রমেশের বিরুদ্ধে এখন তাহাকে নানা গোকে নানা কথা শুনাইয়াছে-হেমনলিনী জানিয়াছে যে, রমেশ কয়লাকে