পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] কাৰ্য্যে নিযুক্ত করিয়া আপনাকে পরম চরিতার্থ জ্ঞান করে । তাহার উদ্দেশু ও উপায়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য আছে বলিয়াই সে সিদ্ধকাম হইয়াছে। এই জন্ত য়ুরোপীয়ের বলিয়া থাকে, তাহাদের পারিক-স্কুলে, তহtদের ক্রিকেটুক্ষেত্রে তাহার। রণজয়ের চর্চা করিয়৷ লক্ষ্যসিদ্ধির জন্ত প্রস্তুত হইতে থাকে । এককালে আমরা সেইরূপ যথার্থভাবেই ব্ৰহ্মলাভকে যখন চরমলাভ বলিয়া জ্ঞান করিয়াছিলাম, তখন সমাজের সব্বত্রই তাহার যথার্থ উপায় অবলম্বিত হইয়াছিল । তথন যুরোপীয় রিলিজন-চচ্চার আদশকে আমাদের দেশ কখনই ধৰ্ম্মলাভের আদর্শ বলিয়। গ্রহণ করিতে পারিত না । তরাং ধৰ্ম্মপালন তখন সঙ্কুচিত হহয়। বিশেষভাবে রবিবার ব। আর-কোনো বারের সামগ্ৰী হইয়৷ উঠে নাহ । ব্রহ্মচর্য্য তাহার শিক্ষ। ছিল, গৃহাশ্রম তাহার সাধন। ছিল, সমস্ত সমাজ তাহার অমুকুল ছিল—এবং যে . ঋষির লন্ধকাম ংহয়। বলিয়া উঠিয়াছিলেন— “বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্ত • মাদিত্যবর্ণং তমস: পরস্তাৎ যাহার। বলিরাছিলেন— "অনিশদং ব্ৰহ্মণে৷ বিৰাৰু ন বিভেতি কুতশচন” তাহারাই তাহার গুরু ছিলেন । ব্ৰহ্ম বলিতে আমাদের পিতামহরা যতখানি বুঝিয়াছিলেন, আমরা যদি ততখানি নী বুঝি, ব্রহ্মসাধনাকে তাহার। যতদূর ব্যাপক করিয়া দেখিয়াছিলেন, আমরা যদি ততদুর দেখিতে প্রস্তুত না থাকি, তবে এতদিন ধরিয়া প্রচুর আড়ম্বরে আমরা একি ধৰ্ম্মপ্রচার । যোগ করিয়n Qミ* নিস্ফলতার চর্চা করিয়া আসিতেছি ! তবে র্তণহাদের উচ্চারিত পবিত্র মন্ত্রগুলি লইয়া আমরা একি বাল্যলীলায় প্রবৃত্ত হইয়াছি । একি বিদ্ধপ ! একি ব্যঙ্গ ! আমাদের দেশের দ্বিজদিগের উপনয়নক্রীড়া, আমাদের দেশের আধুনিক লোকাচার ও গার্হস্থ্যধৰ্ম্ম, ইহাই কি আমাদের পৈতৃকধন্মের বিকৃত-অনুকরণ-মুলক যথেষ্ট বিরূপতা নহে—আবার ব্রাহ্মসমাজও কি প্রাচীননামের সহিত আধুনিক অসঙ্গতি আর-এক নুতন প্রহসনের অবতারণা করিবেন ? ধৰ্ম্মকে যে আমরা সোর্থীনের ধৰ্ম্ম, ব্ৰহ্মকে যে আমরা সৌখানের ব্রহ্ম করিয়৷ তুলিব ;– আমরা যে মনে করিব, অজস্র ভোগবিলাসের একপাশ্বে ধৰ্ম্মকেও একটুখানি স্থান দেওয়া আবখ্যক, নতুবা ভব্যতারক্ষণ হয় না, নতুবা ঘরের ছেলেমেয়েদের জীবনে যেটুকু ধৰ্ম্মের ংস্রব রাখা শোভন, তাহ রাখিবার উপায় থাকে না ;—আমরা ষে মনে করিব, আমাদের আদর্শভুত পাশ্চাত্যসমাজে ভদ্রপরিবারের ধৰ্ম্মকে যেটুকুপরিমাণে স্বীকার করা ভদ্রতারক্ষার অঙ্গ বলিয়া গণ্য করেন, আমরাও সৰ্ব্ববিষয়ে তাহাদের অসুবৰ্ত্তন করিয়। অগত্যা সেইটুকুপরিমাণ ধম্মের ব্যবস্থা না রাখিলে লজ্জার কারণ হইবে ; তবে আমাদের সেই ভদ্রতাবিলাসের আসবাবের সঙ্গে ভারতের সুমহৎ ব্ৰহ্মনামকে জড়িত করিয়া রাখিলে আমাদের পিতামহদের পবিত্রতম সাধনাকে চটুলতম পরিহাসে পরিণত করা হইবে । যাহারা ব্ৰহ্মকে সৰ্ব্বত্র উপলব্ধি করিয়াছিলেন, সেই ঋষিরা কি বলিয়াছেন? তাহারা বলেন—