পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৫৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

' © @ e পুষ্পকে আজ প্রাতঃকালে বলিতে হয় নাই যে, রজনী প্রভাত হইল—তুমি আজ প্রস্ফুটিত হইয়া ওঠ P বনে বনে আজ বিচিত্র পুষ্পগুলি অতি অনায়াসেই বিশ্বজগতের অস্তগুঢ় আনন্দকে বর্ণে, গন্ধে, শোভায় বিকশিত করিয়া মাধুর্য্যের দ্বারা নিখিলের সহিত কমনীয়ভাবে আপনার সম্বন্ধস্থাপন করিয়াছে । পুষ্প আপনাকেও পীড়ন করে নাই, অন্ত কাহাকেও আঘাত করে নাই, কোন অবস্থায় দ্বিধার লক্ষণ দেখায় নাই, সহজ-সার্থকতায় আস্তোপাস্ত প্রফুল্ল হইয়া উঠিয়াছে ! ইহা দেখিয়া মনের মধ্যে এই আক্ষেপ জন্মে যে, আমার জীবন কেন বিশ্বব্যাপী আনন্দকিরণপাতে এমনি সহজে, এমনি সম্পূর্ণভাবে বিকশিত হইয় উঠে না ? সে তাহার সমস্ত দলগুলি সঙ্কুচিত করিয়া আপনার মধ্যে এত প্রাণপণে কি অঁাকড়িয়া রাখিতেছে ? প্রভাতে তরুণ স্বর্য্য আসিয়-অরুণকরে তাহার দ্বারে আঘাত করিতেছে, বলিতেছে—“আমি যেমন করিয়া আমার চম্পক কিরণরাজি সমস্ত আকাশময় মেলিয়া দিয়াছি, - তুমি তেমনি সহজে আনন্দে বিশ্বের মাঝখানে আপনাকে অবাধিত করিয়া দাও !” রজনী নিঃশব্দপদে আসিয়া স্নিগ্ধহস্তে তাহাকে স্পর্শ করিয়া বলিতেছে, “আমি যেমন করিয়া আমার অতলস্পর্শ অন্ধকারের মধ্য হইতে আমার সমস্ত জ্যোতিঃসম্পদ উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছি, তুমি তেমনি করিয়া একবার অন্তরের গভীরতলের দ্বার নিঃশব্দে উদঘাটন করিয়া দাও— আত্মার প্রচ্ছন্ন রাজভাণ্ডার একমুহূৰ্ত্তে বিস্মিত বিশ্বের সম্মুখীন কর । নিখিলুঞ্জগৎ প্রতিক্ষণেই তাহার বিচিত্র স্পর্শের দ্বারা আম্বা बछल्लं★न ! দিগকে এই কথাই বলিতেছে--"আপনাকে - কোনোকাৱে । [ ৩য় বধ, ফাঙ্কন । বিকশিত কর, আপনাকে সমর্পণ কর, আপনার দিক্ হইতে একবার সকলের দিকে ফের, এই জল-স্থল-আকাশে, এই মুখদুঃখের বিচিত্র ংসারে অনিৰ্ব্বচনীয় ব্রহ্মের প্রতি আপনাকে একবার সম্পূর্ণ উন্মুখ করিয়া ধর ।” কিন্তু বাধার অস্ত নাই—প্রভাতের ফুলের মত করিয়া এমন সহজে, এমন পরিপূর্ণভাবে আত্মোৎসর্গ করিতে পারি না। আপনাকে আপনার মধ্যেই আবৃত করিয়া রাখি, চারিদিকে লিখিলের আনন্দ-অভু্যদয় ব্যর্থ হইতে থাকে । কে বলিবে, ব্যর্থ হইতে থাকে ? প্রত্যেক মাকুবের মধ্যে যে অনন্ত জীবন রহিয়াছে, তাহার সফলতার পরিমাণ কে করিতে পারে ? পুষ্পের মত আমাদের ক্ষণকালীন সম্পূর্ণত নহে। নদী যেমন তাহার বহুদীর্ঘ তটদ্বয়ের ধারাবাহিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়া, কত-কত পৰ্ব্বত-প্রাস্তর-মরু-কানন-নগরগ্রামকে তরঙ্গাভিহত করিয়া আপন সুদীর্ঘযাত্রার বিপুল সঞ্চয়কে প্রতিমুহূর্বে নিঃশেষে মহাসমুদ্রের’ নিকট উৎসর্গ করিতে থাকে, তাহার অস্ত থাকে না,— তাহার অবিশ্রাম প্রবাহুধারায় ও অস্ত পাকে না, তাহার চরম বিরামেরও সীমা থাকে নামনুষ্যত্বকে সেইরূপ বৈচিত্র্যের ভিতর দিরা বিপুলভাবে মহৎ-সার্থকতা লাভ করিতে হয় । তাহার সফলতা সহজ নহে । নদীর স্তায় প্রতিপদে সে নিজের পথ নিক্সের বুলে, নিজের বেগে রচনা করিয়া চলে । কোনেী কুল গড়িয়া, কোনোকুল ভাঙিয়া, কোথাও বিভক্ত হইয়া, কোথাও সংযুক্ত হইয়া, নৰ লব বাধা