পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

arty बङ्गलग्जैन ? ৩য় বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ । তাহাদের কাছে ছচার পয়সা করিয়া ঠকিয় থাকেন । এইরূপ দয়ার বাণিজ্যদ্বারা তিনি, কেবল শাকসবজি নহে, চারিদিকের গ্রামগুলির হৃদয় কিনিয়া লন । রমেশ এইরূপে তাহার জীবনচিত্র নানারঙে রাঙাইয়া তাহার মাঝখানটিতে একটি মধুর মূৰ্ত্তি নানা অবস্থায় নানা ভাবে দাড় করাইয়া দিত । দুরব্যাপী ভবিষ্যতের রঙ্গভূমিতে এই বধুটি রমেশের নব নব কল্পনালীলার নায়িকারূপে বিচিত্র সৌন্দৰ্য্য বিকাশ করিয়া বিহার করিতে • লাগিল । হায় মায়াবিনী কল্পনা ! বেশিদিনের কথা মহে, এই মূঢ় যুবকটি গোলদীঘির ধারে পায়চারি করিতে করিতে উৰ্দ্ধমুখে আর এক রঙের মরীচিক স্বজন করিতেছিল। তখন সে দেখিতেছিল, কলিকাতার রাজপথপার্শ্বে তাহার ঘরের একতলায় চায়ের টেবিল পড়িয়াছে ; চিন্তাশীল ভাবুক বন্ধুর চারিদিক্‌ হইতে আকৃষ্ট হইয়া আসিয়াছে ; সাহিত্য, ইতিহাস, রাজনীতির চর্চায় বাহিরের ট্র্যামের শব্দ আর শুনা যাইতেছে না । দেবী সরস্বতী তরুণী বধূর রূপে র্তাহার স্বর্ণবীণা ছাড়িয়া ভক্তগণকে চ পরিবেষণের ভার লইয়াছেন ; মাঝে মাঝে সময় বুঝিয় তিনি ছটিএকটি যা কথা বলিতেছেন, তাহাতে মন্দবেগ আলোচনা তরঙ্গিত হইয়া উঠিতেছে এবং উন্মত্ত তর্ক মন্ত্ৰমুগ্ধ সৰ্পের ছায় শাস্ত হইয়। যাইতেছে। ইত্যাদি আরো কত কি ! সে সমস্ত ছবির রেখা স্নান হইয়া গেছে, আজ আর তাহদের কোন মূল্য নাই ! g কিন্তু কল্পনালোকে রমেশ্নের যেরূপ বিপুল আয়োজন উদ্যোগ, বাস্তবচিত্রে তাহার তদনুরূপ তৎপরতা দেখা যায় না । বালিকার সঙ্গে কেমন করিয়া হাসিখেলা-বাক্যালাপ করিতে হয়, তাহ সে কিছুই জানে না । তাহার কথাবাৰ্ত্ত গম্ভীর—ফুৰ্ব্বোধ হইয় পড়ে । বধুর কাছ হইতে উত্তর না পাইলে তাহার কথার স্রোত বন্ধ হইয়া আসে । বালিকা সঙ্গ-অভাবে কাতর বলিয়া রমেশ বিশেষ করিয়া, বেশি করিয়া সঙ্গদান করিতে চায়, কিন্তু সেই সঙ্গবাহুল্যে বধূকে ক্লিষ্ট করিয়াই তোলে। রমেশ বুঝিতে পারে ঠিকটি হইতেছে না, তাহাতে তাহার মনের আবেগ বাড়িয় ওঠে, অথচ কোন উপায়ও খুজিয়া পায় না। বালিকার সহিত এই যুবকের ' সম্পূর্ণ-মিলনের দরজাট বন্ধ আছে, রমেশ কোথাও তাহার চাবি হাতড়াইয়া পায় না। পরিবার যেখানে পরিপূর্ণ, বালিকা বধু সেখানে আপনার চিত্তের উপযোগী খোরাক পায় । সখীদের সহিত স্নেহে, সথ্যে, খেলাধুলায় দেখিতে দেখিতে সে সরস হইয়া বাড়িয়া উঠে, পরিবারের মধ্যে তাহার ডাল মেলিয়া যায়, তাহার শিকড় ছড়াইয় পড়ে। একান্নবৰ্ত্তী ঘরে নারীর যখনকার যাহা, তখন সে তাহ পায়, এইজন্য তাহার পরিপূর্ণ বিকাশ হইয়া একদিন সে যথার্থ গৃহিণী হইতে পারে ও হৃদয়ের নানা সম্বন্ধ স্থার নামা লোককে আপনার করিয়া লইবার শক্তি লাভ করে । - কিন্তু একলা স্বামী বধুকে গৃহিণী করিতে পারে না—সে তাহাকে প্রশ্রয়ের দ্বারা নষ্ট অথবা দৌরাত্ম্য"দ্বারা দলিত করিতে পারে । স্তন্তদানের সময় অল্প দিয়া শিশুকে মানুষ করা যায় না, রমেশ সেইরূপ বালিকাকে বে