পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(q) سواه به তরঙ্গের তাড়নে নিমজ্জিত হইয়া সে দেখিতেছে,—চারিদিক্ হইতে হাঙ্গর কুম্ভীর সরীসৃপ যেন তাহাকে গ্রাস করিতে চাহিতেছে, সমুদ্রগর্ভস্থ লতাগুল্ম যেন তাহাকে মৃত্যুআলিঙ্গনে বদ্ধ করিবীয় জন্ত প্রসারিত হস্তে ছুটিয়া আসিতেছে —ভয়ে শিহরিয়া, চক্ষু মুদিয়া, অভাগা প্রাণপণে জীবনের মায়tয় যুঝিতে লাগিল । কোথায় সে পোত ? দুরে—বহুদূরে— অন্ধকার দিক্‌চক্রবালের সীমারেখায় !—আর স্পষ্ট দৃষ্টিগোচর হয় না! দেখিতে দেখিতে তুফান উঠিল। চতুর্দিকে—পৰ্ব্বত প্রমাণ তরঙ্গ ; উৰ্দ্ধে-পাটলান্ধকার আকাশের নিৰ্ম্মম ভ্র কৃটি । সৰ্ব্বত্র যেন উন্মত্ত দানবের প্রচও তাণ্ডবলীল !—সে ভীষণ শব্দ, যেন নরকের প্রতিধ্বনিত নির্ঘোষ !—কি সে যন্ত্রণ !—অভাগ উন্মাদक्षांश झद्देश । আকাশে বিহঙ্গম আছে, মানবের দুঃখযন্ত্রণ দূর করিতে দেবতারাও আছেন।—কই, তাeাকে ত কেহ উদ্ধার করে না ! পার্থীর ঝড়ের মুথে উড়িতে উড়িতে গান করিতে লাগিল ; নীচে সে অভাগা মৃত্যুর সহিত যুঝিতে লাগিল –সে অনন্ত সমুদ্র এবং অনন্ত আকাশ–যেন তাঁহারই কবরের অনুরূপ ; একটি তাহার কবর,—অপরটি তাহার चत्रांछझाँक्रनौ । সন্ধা ঘনাইaা আসিয়াছে । অনেকক্ষণ ধরিয়া যুঝিতে যুঝিতে তাহার শরীর অবসন্ন হইরা পড়িয়াছে ;–পোতও আর দৃষ্টিগোচর হয় না –গভীর অন্ধকারে সে একা! ডুবিতে ডুৰিতে চারিদিক হইতে প্রেতচ্ছবি তাহার বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, খাশ্বিন, ১৩২০ চক্ষের সম্মুখে ভাসিয়া উঠিতে লাগিল—অভাগ৷ আর্তনাদ করিয়া উঠিল। মানুষ ত তাহীকে ফেলিয়া গিয়াছে । ভগবান, তুমি কোথায় ? “—কে আছ, রক্ষা কর—রক্ষা কর । —” দিকৃচক্রবালে, আকাশে,—কোথাও কিছু নাই, কেহ নাই ! আকাশ, তরঙ্গ, পৰ্ব্বতশৃঙ্গ – সবই বধির ! বাত্যাও আনন্তের আদেশই পালন করিতেছিল । চারিদিকে—ঘনীভূত অন্ধকার, বাত্য, নির্জনতা, দানবী-ভ্র কুটি, উন্ম হু তরঙ্গের মুহুমুহু উত্থান-পতন ; পদতলে—তারল্যের রসাতল ; অন্তরে —শ্ৰাস্তি, বিভীষিকা ! কোথায় আশ্রয় ?—আশ্রয় নাই ! তীব্র হিমে দেখিতে দেখিতে তাহার হস্তপদ অসাড় হইয়া আসিল ; উম্মন্তের দ্যায় আকাশ বাতাস নক্ষত্র তরঙ্গ ঘূর্ণ বৰ্ত্ত সবষ্ট যেন সে অন্তিম আবেগে ধরিতে লাগিল !—হায়,—শুন্ত মুষ্টি,-বিফল প্রয়াস ! দারুণ নিরাশাভার প্রপীড়িত হইয়া তখন সে সব চেষ্টা ত্যাগ করিল।—পরাজিত নিৰ্য্যাতিত হতভাগ্য গভীরতম অন্ধকারের অতল গৰ্ত্তে নিমগ্ন হইয়া গেল ! হায় রে গতিশীল সমাজ ! মানবের এবং মানবাত্মার অধোগতি চিহ্ন এমনি ভাবে তুম অঙ্কিত করিয়া যাও ! তোমার শাসন-নীতি এমনই ভাবে মামুবকে অতল সমুদ্রে নিক্ষেপ করে, তার উদ্ধারের শেষ আশাটুকু ৪ এমনি ভাবেই কড়িয়া লয়,—চির দুর্দশার মাঝে তাকে এমনি ভাবেই দূর করিয়া দেয় ! হায়, এ নৈতিক মৃত্যুর হস্ত হইতে কে হতভাগ্য মানবকে উদ্ধার করিবে ?