পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(5) سbہ t) তাহার অভ্যাস ছিল না—তবু একবার চক্ষু মেলিয়া অন্ধকারে সে চারিদিকে এক বার চাহিয়া দেখিল, তারপর পুনরায় চক্ষু মুদ্রিত করিল। কিন্তু দিবাভাগে নানাঘটনাংঘাতে যার চিত্ত বিক্ষিপ্ত থাকে, তাহার পক্ষে রাত্রে, দ্বিতীয়বার নিদ্রাদেবীর আবির্ভাব সহজে ঘটে না । জীনের ৪ তাহাই হইল। ঘুমাইতে ন পারিয়া সে ভাবিতে বসিল । সে চিন্তা ও নানা ভাবংঘাতের অদ্ভুত মিশ্রণ —অতীতের স্মৃতি, বর্তমানের কথা একত্রে মিলিয় তাহার মস্তিষ্কেব মধ্যে যেন লুকেচুরি খেলিতে লাগিল । কত অদ্ভুত আকৃতি ধরিয়া, কত সম্ভবকে অসম্ভব, অসম্ভবকে সম্ভবে রূপান্তরিত করিয়া আবার নিমেষে যেন কোন পঙ্কিল স্রোতে মগ্ন হইয়া যাইতে লাগিল। কিন্তু সব চিন্ত৷ সব ভাবের মধ্যে একটি মাত্র চিস্থ তাহাকে অধিকার করিয়া বসিল । কি তাহ, বলিতেছি— সেই ছয় থান রূপার থtল—ম্যাগলোয়ার যে গুলিকে আলমারির উপর তুলিয়া রাখিতেছিল—তাহারা যেন সজীব হইয়া তাহার চক্ষের সম্মুখে আসিয়া নৃত্য করিতেছিল । যেমন করিয়াই হউক, তাহীদের মুল্য ২০০ ফ্রাঙ্কের কম নয়—উনিশ বৎসর ধরিরা খাটিয়া সে যাহা পাইয়াছে প্রায় তার ডবল দাম ! অবস্ত কর্তৃপক্ষ অবিচার না করিলে সে আরও কিছু বেশী পাইত ? তা যাউক সে কথা । পূর্ণ এক ঘণ্টা ধরিয়া নানা বিরোধী ভাবের মধ্যে পড়িয়া সে ভাবিতে লাগিল । ঢং—ঢং—ঢং— । তিনটা ! বঙ্গদর্শন { ১৩শ বর্ষ, অশ্বিন, ১৩২০ জীন চকিতে উঠিয়া বসিল, হাত বাড়াইল্পী দেখিল বিছানার পাশে তার গাঠরিটা ঠিক আছে কি না ?--তারপর, জুতা খুলিয়া রাখিয়া, পুনরায় শয্যার উপর বসিয়া সে ভাবিতে লাগিল । কি সে ভাবনা ? -কেমন করিয়া বলিব ? সে ভাবনার কোন সামঞ্জস্ত নাই, স্থিরতা নাই ; তাহা একবার আসে আবার মিলায়, আবার আসে আবার যায় –কি যেন তাহার উপর চাপিয়া বসিতেছিল । ভাবিতে ভাবিতে কয়েদী ব্রেভেটের কথা তার মনে পড়িল,— তার ছক্কাঠ স্থতার গাটরেট যেন তাহার চক্ষের উপর জাগিতে লাগিল। এই ভাবে হয় ত তার সমস্ত রাত্রি কাটিত, কিন্তু অকস্মাৎ গির্জার ঘড়ি বাজিয়া উঠিল—ঢং ! আরও অৰ্দ্ধ ঘণ্ট !—সে শব্দ যেন তাহাকে বলিয়া দিল—“উঠ, ভাবছ কি ? জীন চমকিত হইয়া উঠিয়া দাড়াইল । অস্পষ্ট চন্দ্রলোক জানালার খড়খড়ির মধ্য দিয়া কক্ষে আসিয়া পড়িতেছিল । মুহুর্তের জন্য একবার ইতস্ততঃ করিয়া, ধীরে ধীরে অগ্রসর হইয় সে জানালা খুলিয়া ফেলিল । জানালার গরাদে ছিল না,—নীচেই বাগান ; তাহাতে অনতি-উচ্চ প্রাচীরের বেষ্টনী ; বাগানের পরই নাতিহ্রস্ব বৃক্ষের সারি— সম্ভবতঃ সেটা একটা রাজপথ । চন্দ্রের অস্পষ্ট আলোকে জীন ভাল করিয়া একবার সব দেখিয়া লইল ; তারপর, জানালা বন্ধ করিয়া, স্থির পাদক্ষেপে ফিরিয়া আসিয়, গাঠরি হইতে শিকের মত কি একটা বাহির করিল। তারপর, জুতা জোড়া পকেটে পুরিয়া, থলিট পৃষ্ঠে বাধিয়া লইয়া, চোথের