পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હ ૦ી (ડી) কল্পনার উপরেই গড়িয়া উঠে। ধাতু-প্রসাদেই অর্থাৎ শরীর ও ইন্দ্রিয়কুলের প্রসন্নতা লাভ হইলেই, জীব অতীন্দ্রিয়ের মহিমা জানিতে পারে। আমাদের ধাতু প্রসন্ন নয় বলিয়াই আমরা একটা বিকৃত ইন্দ্রিস্তু-জ্ঞানের মধ্যে বাস করিয়া প্রকৃত অতীন্দ্রিয়ানুভূতি লাভে অসমর্থ হই । আর এই জন্তই প্রাকৃত এবং অপ্রাকৃতের মধ্যে এমন একটা কল্পিত ব্যবধানেরও স্বষ্টি করি । কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, ইন্দ্রিয় সকলকে ভাল করিয়া জানিলেই তাদের অপূর্ণতা প্রত্যক্ষ করিতে পারা যায় । চক্ষুরাদি ইন্দিয়কে যারা ভাল করিয়া জানিয়ছে, তারাই জানে যে ইহার কেহই স্বতন্ত্র ও স্বাধীন নহে । কেবল চক্ষু দিয়া মাতুয দেখে না । চক্ষুর পশ্চাতে যতক্ষণ না মন আসিয়া দাড়ায়, অর্থাৎ দৃষ্ট বিষয়ে যতক্ষণ না মনঃ সংযোগ হয়, ততক্ষণ চক্ষুর গোলকের উপরে সে বিষয়ের প্রতিচ্ছায়া পড়িতে পারে, কিন্তু চক্ষুর পশ্চাতে যেমন মন, মনের পশ্চাতে সেইরূপ বুদ্ধি ; বৃদ্ধির পশ্চাতে সেইরূপ সাক্ষীস্বরূপ আত্মচৈতন্ত যতক্ষণ না আসিয়া দাড়ায়, তত্তক্ষণ চক্ষু দেখে না । এইরূপে মন, বৃদ্ধি ও চৈতন্থ যুক্ত না হইলে, কাণও শোনে না, ত্বক ও স্পর্শ করে না, নাসিক ও ভ্রাণ গ্রহণ করে না, রসনা ও রসাস্বাদ করে না, কোন ও ইন্দ্রিয়ই আপনার বিষয়কে গ্রহণ করিয়া সে বিষয়ের শব্দম্পর্শরূপ-রসাদির জ্ঞান দান করিতে পারে না । ইহা প্রত্যক্ষ করিলেই এই জিজ্ঞাসার উদয় হয়— কেনেযিতং পততি প্রেষিতং মনঃ ? কেন প্রাণঃ প্রথমঃ গ্ৰৈতি যুক্তঃ ? তাহাতে তার রূপের জ্ঞান জন্মায় না । বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, আশ্বিন, ১৩২০ কেনেষিতাং বাচমিমাং বদন্তি ? কউ দেবে চক্ষুশ্রোত্র যুক্তি ? কাছার দ্বারা প্রেরিত হইয়া এই যে আমদের অন্তরিক্রিয় মন, তাহা আপনার বিষয়েতে পতিত হয় ? কাহার দ্বারা প্রেরিত হইয়া শরীরের মধ্যে যে প্রধান প্রাণবায়ু তাহা আপনার বিষয়ে যুক্ত থাকে ? কাহায় দ্বারা প্রেরিত হইয়া এই সকল বাক্য অভিব্যক্ত হয় ? সেই দেবভা কে ? যিনি চক্ষু এবং কর্ণকে আপন আপন বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করিয়া দিতেছেন ? সৰ্ব্বপ্রকার সংস্কারবর্জিত হইয়া, সহজ ও শুদ্ধভাবে আপনার ইন্দ্রিয় সকলের অনুসরণ ও অসুশীলন করিতে করিতেষ্ট এরা যে স্ব ভস্থ ও স্বপৰ্য্যাপ্ত নহে, ইহা বুঝতে পারা যায়। আর তখনই আমরা যিনি “চক্ষুষশ্চক্ষুঃ শ্রোত্রস্ত শ্ৰেীব্ৰং তৎ” ও “প্রাণস্ত প্রাণং" তাছাকে এক্ট সকল চক্ষুরাদিতে আত্মবুদ্ধি পরিত্যাগ করিয়া ইঙ্গীদের মধ্যেই তাহীকে প্রত্যক্ষ করিতে পারি । সুতরাং ইন্দ্রিয়কে ছাড়িয়া নঙ্গে, কিন্তু ইন্দ্রিয়ের ভিতরেই অতীন্দ্রিয়ের সাক্ষাৎকারলাভ করিতে হয়—ছাড়াইয় বটে, কিন্তু ছাড়িয়া নহে । অতিক্রম করিয়া বটে, কিন্তু বর্জন করিয়া নহে । মনের মধ্যেই চিন্তামণি বিরাজ করিতেছেন । মনকে ছাড়িয়া নহে, কিন্তু মনকে ধরিয়াই সে চিন্তামণিকে পাইতে হয়। ইন্দ্রিয়গ্রামের বা হৃষীকসমাজের মাঝখানেই হৃষীকেশ বাস করেন। তিনি ইঞ্জিয় কুলের অধীশ্বয়, রাজা । রাজাকে তার স্বরাঞ্জোই দেখিতে পাওয়া যায়, পররাষ্ট্রে নহে। চিস্তামণিকে চিন্ত হইতে, হৃষীকেশকে হৃষীকসমাজ হইতে