পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন দেখিয়াই মার্জারী সানন্দে লাঙ্গুলাস্ফালন করিতেছিল। কাহার এই থেনেডিয়ার-পরিবার ? বংশ হিসাবে ধরিতে গেলে, তাহাদিগকে মিশ্র বংশজ বলিতে হয় । নিম্নতম বংশ হইতে ক্রমোন্নত সম্প্রদায়, এবং অবস্থাবিপৰ্য্যয়ে অধঃপতিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী—উভয়ের মিশ্রণে যে শ্রেণী উৎপন্ন হয়, থেনেডিয়ারেরা তাহারই অন্তভুক্ত। এসব ক্ষেত্রে যেমন হইয়া থাকে, থেনেডিয়ারদের রীতিনীতি সেইরূপ । মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সহজাত ভদ্র তা বা শ্রমজীবিসম্প্রদায়ের চিত্তের উদারতা কিছুই তাহার। পায় নাই । স্ত্রী-পুরুষ উভয়েই অতি সঙ্কীর্ণ মনা ছিল ; – সামান্ত কারণেই তাহারা পিশাচসদৃশ হইয়া উঠিত,—তাঙ্গাদের অনমুষ্ঠেয় কোন পাপ-কার্য্যই ছিল না । এমন মানব অনেক আছে যাহারা প্রতিদিনই *আপনা রচিত জালে আপনি জড়িত হইয়া, জীবনে ক্রমশঃ গাঢ়তর অন্ধকারের স্বষ্টি করিয়া থাকে ;—পশ্চাদিকেই ভাহাদের জীবনের গতি, পুরোভাগে নহে ; তাহীদের জীবন চির রহস্তাচ্ছন্ন, সৰ্ব্বদাই ষন কি এক আশঙ্কায় তাহারা সন্ত্রস্ত ; তাছাদের পাপপূৰ্ণ চরিত্রের ছায়া সৰ্ব্বদাই তাঙ্গাদের মুখে ঘনীভূত হইয়া থাকে, সামান্ত দু' একটি কথায়, মুখ ভাবে, তাহাদের অতীতের গুপ্ত পাপকাহিনী এবং ভবিষ্যতের অন্ধকারময় ঘটনার ইঙ্গিত ষেন আমরা স্পষ্ট দেখিতে পাই । থেনেডিয়ার ও তাহার স্ত্রীর সম্বন্ধে এ কথা খুবই থাটে । পাপ যতই আপাতঃ বলবান হউক না কেন, সকল সময় তাহা হইতে সম্পদ আসে না; থেনেডিয়ারদের ব্যবসায়ই তাহার প্রমাণ— ○> o { ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩২০ কোনও রূপে তাহাদের চলিতেছিল মাত্র । দেনার দায়ে সরাইখানা প্রায়ই বন্ধ হইবার উপক্রম হইতেছিল । ফ্যানটাইনের প্রদত্ত ৫৭ ফ্রাঙ্ক এ যাত্রা তাহাদিগকে উত্তমর্ণের হস্ত হইতে উস্কার করিল বটে, কিন্তু পরমাসে পুনরায় সেইরূপ অর্থকষ্ট উপস্থিত হইল ; তখন থেনেডিয়ারের স্ত্রী কসেটের মূলাবান পরিচ্ছদাদি পারেীতে লইয়া যাইয়া ৬• ফাঙ্কে বন্ধক দিয়া আসিল । সে অর্থও যখন নিঃশেষিত হইয়া গেল, তখন হইতে তাহারা কসেটের সহিত অনুগ্রহজীবীর স্তায় ব্যবঙ্গয় করিতে লাগিল। মূল্যবান্‌ পোষাকের যাহার অভাব ছিল না, থেনেডিয়ার-কন্তাদের পরিত্যক্ত—অর্থাৎ শত fচ্ছন্ন, অব্যবহার্য্য --বস্থাদিতে তাহার দেহতাপ রক্ষা হইতে লাগিল ; তাঁহাদের উচ্ছিষ্ট অল্পব্যঞ্জনে কোনোরূপে তাহার উদরপূৰ্ত্তি ঘটিতে লাগিল ৷ . অথচ এদিকে ফ্যানটাইন, প্রতিমাসেই পত্রোত্তরে জানিতে লাগিল— “কসেট ভাল আছে, বেশ মনের ফুৰ্ত্তিতেই আছে ”—নির্দিষ্ট ছয়মাস অতীত হইয়া গেলে, ফ্যানটাইন চুক্তিমত, তাহার মাসিক দেয় ৭ ফাঙ্ক পাঠাষ্টয়া দিল । উত্তরে থেনেডিয়ার লিখিল – “৭ ফ্রাঙ্কে কি হবে ? এখন থেকে ১২ ফ্রাঙ্ক করে চাই ।” পরমাসে ফ্যানটাইন ১২ ফ্রাঙ্কই পাঠাইল ;-- মেয়ে ভাল আছে,—কাজেই সে কোন আপত্তি করিল না । লোকচরিত্র চিরদিনই দুজ্ঞের। অনেক চরিত্রে ভালবাসা এবং হিংস পাশাপাশি গ্রথিত থাকে। থেনেডিয়ারের স্ত্রী আপন কন্যা দু’টিকে যে পরিমাণ ভালবাসিত, কসেটের প্রতি তার