পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা ] أم কুশলতার গুণে এবং সে নুতন আবিষ্কারের ফলে তাহার এ সমৃদ্ধি ; প্রথম যথন সে আসে তখন সাধারণ একজন শ্রমজীবীর স্তায়ই তাহার আচার-ব্যবহার পরিচ্ছদ ছিল । লোকে আরও বলে যে, সে দিন তাহার আগমনের অব্যবহিত পরেই সন্ধ্যার সময় সে গ্রামে আগুন লাগে, এবং নবাগত লোকটি তাহা দেখিয়া আপন জীবন তুচ্ছ করির জলন্ত গৃহ হইতে দুইটি শিশুকে উদ্ধার করিয়া আনে,-- সে শিশু দুইটি পুলিশের দারোগার । সেই আকস্মিক বিপদে কৃতজ্ঞ কর্তৃপক্ষ আর তাহার ছাড়পত্র দেখিতে চায় নাই । লোকটি সেই দিন হইতে ‘ফাদার ম্যাডেলিন’ নামে পরিচিত হইয়া সে গ্রামে বাস করিতে লাগিল । তখন তাহার বয়ঃক্রম প্রায় পঞ্চাশৎ বর্ষ। লোকটি উদারপ্রকৃতির, সৰ্ব্বদাই সে চিস্তামগ্ন থাকিত। সৌভাগ্যলক্ষ্মী যেন স্বহস্তে তাহার ললাটে রাজটীক। পরাইয়া দিয়াছিলেন। তাই দুই বৎসর যাইতে না যাইতে তাহার কার্য্যে অভাবনীয় উন্নতি ঘটিল,—প্রত্যহ সহস্ৰ সহস্ৰ স্ত্রী-পুরুষ তাহার কারবারে খাটিতে লাগিল ; কার্য্যের সুবিধার জন্ত তখন ম্যাডেলিন স্ত্রী এবং পুরুষ শ্রমজীবীদের জন্ত স্বতন্ত্র দুইটি কারখানা করিল,—প্রত্যেকটির জন্ত পৃথক্ তত্ত্বাবধায়ক এবং স্বতন্ত্র বন্দোবস্ত হইল । তবে অসচ্চরিত্র স্ত্রীলোক বা বালিকার সেখানে স্থান ছিল না, ম্যাডেলিন এই একটি মাত্র বিষয়ে কঠোর ছিল । তাহার আগমনে সে মুমুধু প্রদেশ কৰ্ম্মেয় দীক্ষা লাভ করিয়া যেন সঞ্জীবিত হইয়া উঠিল ; চারিদিকে উৎসাহউন্মাদন পরিস্ফুট হইতে লাগিল ; শ্রম বিষুখতা এবং দারিদ্র্য অস্তৰ্হিত হইল ; & দুর্ভাগ্যের কাহিনী ○ >○ অতি দুঃগীরও অল্পের সংস্থান হইল ; দীনদরিদ্রের আবাসও আনন্দরেখায় সমুজ্জল হইয়া উঠিল। কার্য্যের জন্য কেহ আসিলে ম্যাডেলিন কখনও তাহাকে ফিরাইত না, শুধু বলিত,—“স্ত্রী হও, আর পুরুষ হও,— সংপথে থাক ।” ল্যাফিটের ব্যাঙ্কে ইতিমধ্যেই তাহার প্রায় ৬০ লক্ষ ফ্রাঙ্ক জমিয়াছিল ; অথচ সে কখনও অর্থগৃদ্ধ ছিল না। হাসপাতাল, বালক এবং বালিকাদিগের জন্ত পৃথক পৃথক্ বিদ্যালয়, আতুরাশ্রম দাতব্য চিকিৎসালয় প্রভৃতি শত শত অঙ্গুষ্ঠানে তাহার উপার্জিত অর্থের সদ্ব্যবহার হইতে লাগিল । সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালেই পরামুচিকর্ষ থাকে ; ম— তেও ছিল । প্রথম প্রথম তাহারা বলাবলি করিত—“লোকটা টাকা চায় ।” তার পর তাহার দানব্যয় দেখিয়া বলিল—“লোকটার মনে একটা উচ্চাশা আছে।” কথাটা অনেকের মনে সম্ভবপর বলিয়া বোধ হইল ; কারণ, ম্যাডেলিনের ধৰ্ম্মের দিকেও বেশ একটু টান ছিল,—সাধারণের সহানুভূভিও তজ্জন্ত তাহার প্রতি আকৃষ্ট হইতেছিল । অবশেষে যখন একদিন তাৎকালিক “মনিটর’ পত্রে প্রকাশিত হইল যে, তাহার সাধারণ সৎকার্য্যের জন্ত এবং পুলিশের অধ্যক্ষের অমুরোধে স্বয়ং সম্রাট ম্যাডেলিনকে ম—র নগরাধ্যক্ষের পদ প্রদান করিয়াছেন, তখন তাহার যুগপৎ বলিয়া উঠিল—“দেপেছ ত, ঠিকই বলেছিলাম। লোকটার মনে মনে বরাবরই এমনই একটা মতলব ছিল। যা কিছু ওর দান-ধ্যান, সবই এর জন্ত ।” ম্যাডেলিন কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সে পদ প্রত্যাখ্যান