পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७२२ জনের রূপ দেখিয়া, আর কখনও বা না দেখিয়াও, তার রূপগুণের কথামাত্র গুনিয়াই, সখের এবং মাধুৰ্য্যের পূর্বরাগের সঞ্চার হয় । কিন্তু বাৎসলোর পুর্বরাগের এরূপ কোন ও প্রত্যক্ষ উদ্দীপনা থাকে না, থাকা অসম্ভব। তবে সস্তান ধারণ করিয়াই, সন্তানসম্ভাবিতার শরীরের, বিশেষতঃ র্তার স্বায়ু মগুলের, এমন সকল পরিবর্তন ঘটিতে আরম্ভ করে, যাহাতে অজাত সন্তানের প্রতিও গর্ভধারিণীর অন্তরে একটা স্বাভাবিকী আসক্তি জন্মিতে থাকে। গর্ভস্থ ভ্রণের বৃদ্ধির ও বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই আসক্তিও বাড়িয়া চলে, এবং সন্তানসম্ভাবিত জননীর প্রাণে গর্ভস্থ সন্তানের প্রতি একট প্রবল মমতা জাগিরা উঠে। এই মমতা হইতেই এই সন্তানের মুখ দেখিবার জন্ত লালসার উদয় হয় । এই লালসায় তখন আসন্ন-প্রসব জননীর সমুদায় শরীরকে যেন এক অভূতপূৰ্ব্ব রসে পরিপূর্ণ করির তোলে। আর, যেখানে আশা সেইখানেই আশঙ্কা, যেখানে লোভ সেইখনেই ভয়, যেখানে ঔৎসুক্য সেইখনেই উদ্বেগ ও ভাবনা জাগিয়া উঠে । অজাত সন্তান সম্বন্ধে শত আশা, শত অtশঙ্কা, শত স্বথ-কল্পনা, শত দুঃখভীতি, এ সকলে মাতার মনকে অধিকার করিয়া, তাহাকে অধীর করিয়৷ তোলে। সস্তান বালক হইবে, না বালিকা হইবে ; মুন্দর, মুস্থ, সুঠাম ও পূর্ণাঙ্গ হইবে, মা কুৎসিত, রুগ্ন, অপূর্ণ ও বিকলাঙ্গ হইবে সে দীর্ঘায়ু হইবে, না স্বল্পায়ু হইবে, এই সকল চিন্তায় মাতার চিত্ত অস্থির হইয় উঠে । এইরূপে কখনও কখনও সন্তানসস্তাবিতাকে গর্ভস্থ শিশুর ধ্যামে বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ,১৩২০ তন্ময় করিয়া ফেলে। এই তন্ময়ত্বহেতু গর্ভবতী রমণীগণ কখনও বা অমনস্ক, কখনও বা সমনস্ক ; কখনও বা চঞ্চল, কখনও বা ধীর ; কখনও বা উৎফুল্ল, কখনও বা অবসন্ন ও বিষঃ হইয়া পড়েন। আর এই ধ্যান খুব গভীর হইলে, অজাত সন্তানের ভাবনায় জননীর অঙ্গে হৰ্ষদৈন্তপুলকবিবর্ণাদি সাত্ত্বিকী ভাবেয়ও প্রকাশ হইতে পারে। সন্তানের জন্মের পূৰ্ব্বে, জননীর অন্তরে বাৎসল্যের এই সকল প্রকাশই, এই রসের পুর্বরাগ। অতএব কেবল মাধুর্য্য বা শৃঙ্গার-রসেরই একটা পুৰ্ব্বরাগের অবস্থা আছে, সখ্যের বা বাৎসল্যের কোনও পূর্বরাগ নাই, এমন বলা ধায় না। তবে মাধুর্য সকল রসের সেরা ও সৰ্ব্বাপেক্ষা জটিল বলিয়া, প্রত্যেক অবস্থাতেই এই রসের মধ্যে যে অদ্ভুত শক্তি, আননা এবং বৈচিত্র্য ফুটিয়া উঠে, সখ্যে বা বাৎসল্যে ষে তাহ হয় না, ইহা ও অস্বীকার করা অসম্ভব । রসতত্ত্ববিদের শ্রেষ্ঠনিকৃষ্টভেদে রদের পৰ্য্যায় নিরূপণ করিতে যাইয়া, প্রথমে সখ্য, তারপর বাৎসল্য, এবং সর্বশেষেই মাধুর্য্যের প্রতিষ্ঠা করিরাছেন, ইহা সত্য। ব্যক্তিগত জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হইতে এ সকল রসকে পৃথক করিয়া, সকল রসের একটা সমীকরণ ও নিজস্ব-পৰ্য্যায়-নিরূপণ করিতে হইলে, যেটা অপেক্ষাকৃত সরল, তাহাকেই সকলের নিম্নে, আর যেটা সৰ্ব্বাপেক্ষ জটিল, তাহাকেই সকলের মাথার বসাইতে হয় ; ইহাও অস্বীকার ऱब्र' शृiद्र नां । ཨ་ཝརི “পুৰ্ব্ব পুৰ্ব্ব রসের গুণ পরে পরে বৈসে”— এই স্বত্র ধরিরাই আমাদের রসতত্ত্ববিদ পণ্ডিত-ভক্তেরাও বাৎসল্যকে মাধুৰ্য্যের পূর্বে