\ు:8 আসঙ্গলিঙ্গ মাধুর্য্যের প্রাণ। এই রূপলালসা এবং অসঙ্গলিপস সথ্যেরও প্রধান প্রেরণা এবং উপজীব্য। দেহশ্রয় ও রূপজমোহ ব্যতীত সথ্যরতির সঞ্চার হয়, এ কল্পনা অসত্য। যৌবনান্তে বা যৌবনের প্রথম উচ্ছাসের নিবৃত্তি হইলেও বহুলোকের সঙ্গে আমরা অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তাস্বত্রে আবদ্ধ হই বটে, এবং প্রচলিত ভাষায় অনেক সময় এই সকল আত্মীয়তার সম্বন্ধকে সখ্য নামও দিয়া থাকি ; কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, ইহা সখারতি নহে । সেবা, কল্যাণ-কামন, চিন্তা ও ভাবের বিনিময়, সংসারের কৰ্ম্মে ও অৰপরের আমোদ-প্রমোদে পরম্পরের সাহায্য —এ সকলই এই আত্মীয়তার সম্বন্ধের ম:্যে বিদ্যমান থাকে, কিন্তু তথাপি ইহা প্রকৃত সখ্য নহে । আর, এই সম্বন্ধের মধ্যে রূপের ভোগ ও একান্ত আসঙ্গলিপস। থাকে ন! বলিয়াই ইহাকে সখ্য বলা সঙ্গত নহে । প্রকৃত সখ্য কৈশোর-ধৰ্ম্ম । দেহের তারুণ্য ও লাবণ্য ইহার প্রধান উদ্দীপন । বিগতকৈশোরের প্রণয়ের সম্বন্ধেতে প্রণরী জনের দেহের প্রতি কোনও প্রকারের লোভ থাকে না। তার চাতখানি ধরিয়া, সে স্পর্শমুথে নীরবে ডুবির যাইবার কোনও সাধ, তার অনাবৃত দেহের স্বধৃঢ় আলিঙ্গনপাশে আবদ্ধ হইয়া থাকিবার কোনও লালস{—হর না । তার অবিরল সান্নিধ্য লাভ না করিলে, কাছে খাকী ব্যর্থ হইরা গেল, এমনটা মনে হয় না । অথচ এইগুলি সখ্যরতির নিত্যধৰ্ম্ম । এই ঘনিষ্ঠ দেহ-সম্বন্ধ-নিবন্ধনই সখ্যৱতির মধ্যে আমরা মাধুর্য্যরসের পূৰ্ব্বাস্বাদ লাভ করিয়া থাকি। এই জগুই সখ্যরতিরও ঠিক বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩২• মাধুর্য্যের পুর্বরাগের মতন একটা পূৰ্বরাগের অবস্থা আছে । আমাদের দেশের বৈষ্ণব সাহিত্যে সখাবাংলল্যাদি রসের যেমন অদ্ভূত ও স্বক্ষ বিশ্লেষণ হইয়াছে, জগতের আর কোনও সাহিন্তে এ পর্য্যন্ত সেরূপ হইয়াছে বলিয়া জানি না ও শুনি নাই। আর আমাদের বৈষ্ণব-পদকর্তাগণ এ সকল রসের রূপ যেমন করিয়া চিত্রিত করিয়াছেন, অদ্য কোন ও কবিসমাজ সেরূপ ফুটাইতে পারেন নাই। পূৰ্ব্বরাগ, মিলন, সম্ভোগ, মান, বিরহ, প্রভৃতির বর্ণন যেমন বৈষ্ণব কবিতায় আছে, তেমন আর কোন গু কবিতায় নাই । কিন্তু বৈষ্ণব কবিগণ ও সথ্যের পুর্বরাগের কোনও চিত্র অঙ্কিত করেন নাই । গোষ্ঠলীলায় সখের সন্তে'গের এল শ্ৰীকৃষ্ণ মথুরায় যাইলে শদামাদির বিরহের বর্ণন বৈঞ্চ পদাবলীতে পী গুয়! যায় । কিন্তু এ রসের মধ্যে ও যে পূৰ্বরাগ এবং মনোদির প্রকাশ হইয়া থাকে, তাহার কোন ও চিত্র অন্ততঃ এপর্যন্ত আমার চক্ষে পড়ে নাই । অথচ এই রসের ৰে একটা পূৰ্ব্বরাগের অবস্থা আছে, ইহ প্রত্যক্ষ কথা। আর এই পুৰ্ব্বরাগের সঙ্গে মাধুর্য্যের পুর্বরাগের সাদৃশু অতিশয় ঘনিষ্ঠ । দর্শন বা শ্রবণ এই দুই সুত্র অবলম্বনে পূৰ্ব্বরাগের সঞ্চার হয়। রূপ-দর্শন বা গুণশ্রবণ, এই দুই কারুণেষ্ট,—যার রূপ দেখিয়া মুগ্ধ হইলাম, কিম্ব গুণের কথা শুনিয়া যার প্রতি প্রাণে একটা আসক্তির সঞ্চার হইল— তার সঙ্গলাভের জন্ত লোভ জন্মে। এই লোক্তেরই নাম পূৰ্ব্বরাগ। শ্রীকৃষ্ণের নাম-গু।