পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা] একান্তই অসাধ্য। লাট হার্ডিঞ্জ একটা বিরাট ও জটিল শাসনযন্ত্রের শীষ স্থানে, তাহার পরিচালকরূপে, প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন। সৰ্ব্বত্রই ধী যন্ত্র অপেক্ষ বড়, সন্দেহ নাই। কিন্তু তিনি যত বড় হউন না ৰুেন, কোনো যন্ত্রচালনায় তাহাকে বহুলপরিমাণে সেই যন্ত্রের অধীন হইয়াও চলিতেই হয়। যন্ত্রী কখনো একান্তভাবে আপনার যন্ত্রকে উপেক্ষা করিয়া কার্য্যোদ্ধার করিতে পারেন না। লাটসাহেব যে নীতিই প্রষষ্ঠিত করুন না কেন, কার্যত: সে নীতি অনুযায়ী শাসনকাৰ্য্য পরিচালনার ভার তার নিজের হাতে নাই। অধীনস্থ কৰ্ম্মচারিগণের হাতে এ ভার সর্বদা ন্যস্ত থাকিবেই থাকিবে। সুতরাং এ সকল প্রাচীন ও পদস্থ রাজকৰ্ম্মচারীর ভাবশ্বভাব, মতামত, কুটি ও অভ্যাসকে একেবারে অগ্রাহ করিয়া " পরিচালন সম্ভব হয় না। অন্যদিকে মাহুধের স্বাধীন ইচ্ছা যেমন তার পূৰ্ব্বকৃত কৰ্ম্মাধীন হইয়া আছে, এ কৰ্ম্মফলকে অগ্রাহ করিয়া সে ইচ্ছা কিছুতেই আপনার সফলতা লাভ করিতে পারে না,--রাষ্ট্রের নীতিও সেইরূপ রাষ্ট্রের পূর্বকত কৰ্ম্মবন্ধনকে উল্লঙ্ঘন ক্টরিয়া একেবারে আপনার সফলতা অন্বেষণ বা লাভ করিতে সমর্থ হয় না। ইতরঞ্জনের ষ্টীয় রাষ্ট্রপতিকেও আপনার কৰ্ম্মাধীন হইয়া 진 করিতে হয়। তরজনের কৰ্ম্ম তার স্বপ্নত বা তার পরিবার বা সমাজকৃত রাষ্ট্রপতি ধে বিশাল ও জটিল কৰ্ম্মজলে আবদ্ধ হন তাং কেবল ভাইর স্বকৃত বা পরিবারকৃত শহে। সমগ্ররাষ্ট্রের সমুদায় পুরাতন ও অধুনীকৃত কৰ্ম্মজলে র্তাহাকে চারিদিক হইতে আবদ্ধ করিয়া রাখে। এই জন্ত রাষ্ট্রপতির সাময়িক-আলোচনা )●。 সদিচ্ছাতেই সৰ্ব্বদা রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধিত হয় না। এই সকল বিচার-আলোচনা করিয়া দেখিলে, লাট চার্ডিঞ্জ আমাদের হাতে চাদ ধরিয়া দিলেন না বলিয়, অধীর বা অসন্তুষ্ট হইবার যে কোনই কারণ নাই, ইহা সহজেই বোঝা যাইবে। 球 肇 差 অনেকে প্রশ্ন করিতেছেন—“লাটসাহেব কি আমাদের ভালোর জন্য ব্যস্ত,হইয়। এ সকল করিতেছেন ? ভিতরে ভিতরে তার কি অন্য অভিপ্রায় নাই?” আমার নিকট এ প্রশ্নটাই একান্ত অনাবশ্বক ও অপ্রাসঙ্গিক বলিয়া মনে হয়। পাদ্রিজনস্থলভ বিশ্বমানবী-প্রেম লাট হার্ডিঞ্জের আছে কি না, জানি না। আর থাক্ বা না থাকু সে বিষয়ে এ ক্ষেত্রে আমাদের মাথা ঘামানে নিতান্তই নিরর্থক ভাল পাদ্রিই ধে ভাল শাসনকৰ্ত্ত হইবেন এমনো তো কোনো কথা নাই। ফলছ: রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে বিমানবিহারী বিশ্বমানী-প্রেমের আতিশব্য কৃতিত্ব লাভের সহায় না হইয়া প্রায়শঃই অতি গুরুতর অন্তরায় হইয়া উঠে। রাষ্ট্রনীতিকের প্রাণে যদি কোনো বিশ্বকল্যাণকর আদর্শের প্রেরণা থাকে, ভালই। কিন্তু তাহার বুদ্ধির অনাগতকে প্রত্যক্ষ করিবার শক্তি ও সেই অনাগতের ভবিষ্যৎ মন্দৰ্টুকুকে প্রতিহত করিয়া তার ভালটুকুকে প্রবুদ্ধ ও প্রবুদ্ধ করিবার কৰ্ম্মকুশলতাথাক৷একান্তই আবণ্ঠক। বিশ্বমানবী-প্রেম না থাকিলেও কেহ শ্রেষ্ঠতম রাষ্ট্রনীতিবিশারদ হইতে পারেন। এই দূরদর্শনের ক্ষমতা ও অনাগত বিপন্নিবারণের কুশলতা না থাকিলে, রাষ্ট্রনীতির আলোচনা বা রাষ্ট্ৰীয় কাৰ্য্যপরিচালনভার গ্রহণ করা