পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংপ্য | ইতিহাসে, ষ্টেডের অক্ষয় কীৰ্ত্তি বলিয়: চিরদিন ঘোষিত হইবে । বিলাতী সংবাদপত্র-সম্পাদনে ষ্টেডের বিশেষত্ব সাময়িক পত্রের লেখক ও সম্পাদক বলিয়াই ষ্টেড, আধুনিক সভ্যজগতে এতট৷ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন । আধুনিক সময়ে সাময়িক সংবাদপত্রের প্রভাব অত্যন্ত বেশী সন্দেহ নাই । কিন্তু সাময়িক পত্রের প্রভাব যত, এই সকল পত্রের লেখকদিগের প্রতিষ্ঠ। তার শতাংশের এক অংশও হয় না । ফলতঃ এ সকল পত্রে কে লেগে বা ন লেখে, সাধারণ লোকে তার খবরাখবর রাখে না। বিল তা সাময়িক পত্র সকল দল বিশেষের মুখপত্র হইয়াই থাকে। যে প্রত্রিক যে দলের মুখপত্র, তাহাতে সেই দলের মতামত ও রীতিনীতিরই পোষকত। করা হয় । এই সকল রচনার ভিতর দিয়া লেখকগণের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়া উঠিবীর অবসর পায় না। লেখকের পয়সা খাইয়া লেখেন । র্যহাদের বেতনভোগী হইয়৷ ইহঁর প্রবন্ধffদ রচনা করেন, তাহদের মতামতই ইহদিগকে ব্যক্ত করিতে হয়। নিজেদের বিচারবুদ্ধির অনুযায়ী কোনে কিছু লিখিবার অধিকার ইহঁাদের প্রায়ই থাকে না। কখনো কখনো নিজেদের যাহা মত নয়, এমন বিযয়ও ইহাদিগম্বুক লিখিতে হয়। এরূপ ব্যবসাদারী সাহিত্যচর্চায় ক্ষুন্নিবৃত্তির ব্যবস্থা হইলেও মনোবৃত্তির ফুরণ কিম্বা মগুষ্যত্বের বিকাশ সম্ভব হয় না। 'বিলাতের ধনীলোকের এবং রাজনৈতিক, সম্প্রদায়ের নেতৃবর্গ বহুকাল ধরিয়া সংবাদপত্রের সম্পাদক ও লেখকগণের মনুষ্যত্বকে এইরূপ চরিত-চিত্র ১৩৫ ভাবে চাপিয়। রাখিয়া ও পিষিয়া মারিতে ছিলেন। ষ্টেড ই সৰ্ব্ব প্রথমে এই নিষ্ঠুর দাসত্বের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হইয়া সংবাদ পত্রের সম্পাদকের ও সাময়িক পত্রের লেখকগণের আত্মসম্মানবোধকে জাগাইয়াতোলেন ; পচিশ ত্রিশ বংসর পূৰ্ব্বে বেনামী লেখাই বিলাতী সংবাদপত্রের সাধারণ রীতি ছিল। ষ্টেড ই সৰ্ব্বপ্রথমে নিজের নাম দিয়া সংবাদপত্রে লিখিতে আরম্ভ করেন। আজিকালি র্তাহারই পদাঙ্ক অনুসরণ করিয়া বিলাতের প্রসিদ্ধ সাময়িক পত্রের লেখকগণ নিজের নাম দিয়া প্রবন্ধাদি লিখিতে আরম্ভ করিয়াছেন। পূৰ্ব্বকার বেনামী লেখাতে সংবাদপত্র বিশেষেরই প্রতিষ্ঠা হইত, দল বিশেষেরই প্রতিপত্তি ও আধিপত্য বাড়িয়া যাইত ; জনগণের চিন্ত ও চরিত্রের কিম্ব রাষ্ট্রের কৰ্ম্ম ও নীতি সম্বন্ধে লোকমত সংগ্ৰহকারী সাময়িকপত্রের লেখকগণের ব্যক্তিত্বের ও বিদ্যাবুদ্ধির কোনো প্রকারের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হইত না। ষ্টেড এ সকলকে বদলাইয়া গিয়াছেন। সাময়িক পত্রের লেখকগণ যে রাষ্ট্রীয় জীবনগঠনে কতটা সহায়তা করেন, প্রতিভাশালী সংবাদপত্রের সম্পাদকের পদগৌরব ও শক্তিসাধ্য যে কোনো রাজমন্ত্রী বা রাষ্ট্রমন্ত্রী অপেক্ষ। কম নহে, কিন্তু কোনো কোনো স্থলে অনেক বেশী ; লোকে পূৰ্ব্বে ইহা কখনো অনুভব করে নাই। ষ্টেড কে দেখিয়া তারা এখন ইহা বুঝিয়াছে। ষ্টেড, ংবাদপত্রের সম্পাদক ও সাময়িক পত্রের লেখক ছিলেন। কিন্তু কি স্বরাষ্ট্রের কিম্বা পররাষ্ট্রের বিশেষ বিশেষ নীতি নিৰ্দ্ধারণে তিনি যে পরিমাণে সাহায্য করিয়াছেন,