পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> こや অনেক রাষ্ট্রমন্ত্রী তাহা করিতে পারেন নাই । ইংরেজের নৌ-নীতি আজ যে রীতির অনুসরণ করিয়া চলিয়াছে, তাহা বহুল পরিমাণে ষ্টেডেরই উদ্ভাবিত। জৰ্ম্মণী প্রভৃতি প্রতিদ্বন্দী রাষ্ট্রশক্তির নৌবলের তুলনায় ইংরেজের নৌশক্তিকে কি পরিমাণে বাড়াইতে হইবে, তাহার মূলমন্ত্রটা ষ্টেডের দ্বারাই উদ্ভাবিত হয়। ষ্টেড ই প্রথমে এ কথা বলিয়াছিলেন যে, অপরে যখন এক খান যুদ্ধজাহাজ নিৰ্ম্মাণ করিবে, ইংলণ্ডকে তখন দু’খনি নিৰ্ম্মাণ করিতে হইবে । আজ উদারনৈতিক ও রক্ষণশীল উভয় দলের রাষ্ট্রনৈতিকের একবাক্যে এই আদর্শ অবলম্বন করিয়া চলিয়াছেন। আজি কালি য়ুরোপের সৰ্ব্বত্র শালিশীর দ্বারা যে রাষ্ট্রীয় বিরোধের নিষ্পত্তির চেষ্টা হইতেছে, ষ্টেড তাহার ও সূত্রপাত করেন । কতিপয় বংসর পূৰ্ব্বে হেগ ( Hague ) নগরীতে সভ্যজগতের ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ মিলিয়া, প্রতিদ্বন্দী রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহের শান্তি হইয় পরস্পরের বিবাদ যাহাতে আপোষে মিটিতে পারে, তাহীর বিচার অালোচনা করিয়াছিলেন। ষ্টেড সেই শান্তিসমিতি বা “Peace Confernce ta s gata etatari ছিলেন। র্তাহার চেষ্টা ও অধ্যবসায় ব্যতীত এই অনুষ্ঠান যে কখনই সম্ভব হইত না, ইহা সকলেই এখন একবাক্যে স্বীকার করিতেছেন। ষ্টেডের ধনবল ছিল না। ষ্টেড, কোনে রাষ্টনৈতিকদলের নেতা ছিলেন না। র্তার লোকবলও ছিল না। র্তার অসাধারণ ধীশক্তি কিম্বা অলোকসামান্য প্রতিভাও ছিল না। তার ছিল কেবল আদমনীয় বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ অধ্যবসায়, অকপট সত্যাকুরাগ ও ধৰ্ম্মানুরাগ, অসাধারণ অক্সিনির্ভর এবং নিঃস্বার্থ স্বদেশপ্রেম ও লোকহিতৈষী। ষ্টেড বালকের ন্যায় সরল ছিলেন, স্ত্রীলোকের ন্যায় কোমলহৃদয় ও স্নেহপ্রবণ ছিলেন, সিংহের ন্যায় সাহসী ছিলেন ও পৰ্ব্বতের ন্যায় অটল ছিলেন। অব র্তাহার মধ্যে এ সকল গুণের সমাবেশ ছিল বলিয়াই, সামান্য সাময়িক পত্রের সম্পাদক ও লেখক হইয়াও তিনি সাময়িক ইতিহাসে এরূপ অক্ষয় কীৰ্ত্তি রাখিয়া গিয়াছেন। সংবাদপত্র-পরিচালকগণ দুই পথ ধরিয়া প্রতিপত্তি ও প্রতিষ্ঠা লাভ করিতে পারেন। এক পথে যাইয়া, সৰ্ব্বদ। লোকমতের অনুসরণ করিয়া, জনসাধারণে যখন যে ভাবে ক্ষেপিয়া উঠে সেই ভাবেতে ইন্ধন চ্ছে গাইয়া তাহারা সহজেই লোকে । অত্বরাগভাজন হইতে পারেন। আর এক, পথে যাইয়া, জনসাধারণের কি ভাল লাগিবে সে দিকে দৃকপাত না করিয়া, কিসে তাহদের ভাল হইবে, তারই অকুধ্যান করিয়া, তাহাদিগকে প্রেয়ের পথে নয়, কিন্তু শ্ৰেয়ের পথে পরিচালিত করিবার চেষ্টা করিতে পারেন। প্রথম পথের পথিক লোকমতের অনুসরণ করিয়া অনুগত ভূ•্যের ন্যায় জনসাধারণের সেবা করেন। এ পথ সহজ। এই পথে অনায়াসে বা অতি স্বল্পায়াসেই সংবাদপত্র-পরিচালক আপনার পশার বৃদ্ধি করিতে পারেন। এ পথ ব্যবসাদারের পথ। বিলাতের প্রতিপত্তিশালী সংবাদপত্রের ও সাময়িক পত্রের প্রায় সকল গুলিই এই পথের পথিক। লোকমতের হাওয়া যখন যে বিষয়ে যে দিকে প্রবলবেগে