পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা | সত্যজগতের চিন্তু ও কৰ্ম্মের উপরে যতটা প্রভাব লাভ করিয়াছিলেন, কোনো সাপ্তাহিক বা মাসিক ইংরেজী পত্রিকার সাহায্যে তাহ কদাপি লাভ করিতে পারিতেন না। রিভিউ অব রিভিউজ ইংরেজীতেই লেখা হয় সত্য, আর লণ্ডনেতেই ছাপ। হইত। কিন্তু এ সত্ত্বেও ইহাকে কখনই কেবল ইংরেজের কাগজ বলা যাইতে পারিত না। যুরোপের সর্বত্র যে সকল কৰ্ম্মী ও মনীষিগণের হস্তে আধুনিক জগতের ভাগ্য । স্বত্র রহিয়াছে, রিভিউ অব রিভিউজ তাহদের সকলেরই শ্রদ্ধার ও আদরের বস্তু ছিল । রাজপ্রাসাদে রাজা, মন্ত্রভবনে রাজমন্ত্রিগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক, সেনাশিবিরে সেনানায়ক, সংবাদপত্রের আপিসে সম্পাদক, ধৰ্ম্মমন্দিরে ধৰ্ম্মযাজক, নাট্যশালায় নটনায়ক, আধুনিক সভ্যজগতের সৰ্ব্বত্র যাহার। জনগণের চিন্তাত্রেীত ও কৰ্ম্মস্রোতকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করিতেছেন, র্তাহীদের সকলের সঙ্গেই রিভিউ অব রিভিউজের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল। ইহঁার। সকলেই নিবিষ্ট চিত্তে, শ্রদ্ধাসহকারে রিভিউ অব রিভিউজ পাঠ করিতেন । বিলাতের অন্যতম প্রধান রাষ্ট্রনায়ক ব্যালফোর (Balfour ) একবার বলিয়াছিলেন যে তিনি কখনও সংবাদপত্র পাঠ করেন না , কিন্তু তিনিও রিভিউ অব রিভিউজের হস্ত হইতে অব্যাহতি পান নাই। রিভিউ অব রিভিউজ কেবল যে অপর পত্র হইতে প্রবন্ধ সার সংগ্ৰহ করিয়াই আপনার কলেবর পূর্ণ করিত তাহাও নহে। প্রতি মাসে সভ্যজগতের যেখানেই যে কোনো বিশেষ ঘটনা ঘটুক চরিত-চিত্র )\నిన না কেন, ষ্টেড, তাহারই উপরে আপনার মন্তব্য প্রকাশ করিয়া একদিকে জগতের দৈনন্দিন ইতিহাস লিপিবদ্ধ করিতেন, অন্যদিকে দুনিয়ার লোকমত গঠনের সাহায্য করিগর চেষ্টা করিতেন। রিভিউ অব রিভিউজের চরিত্র-চিত্রগুলি আধুনিক সভ্য জগতের গত ত্রিশ বৎসরের ইতিহাসের প্রাণ বস্তুকে ভবিষ্যতের জন্য মূৰ্ত্তিমন্ত করিয়া রাখিয়াছে। ষ্ট্রেডের বিচার প্রণালী । গত ত্রিশ বৎসরের মধ্যে আধুনিক সূতা জগতের কোনো দেশে এমন কোনে শক্তিশালী লোকনায়কের অভু্যদয় হয় নাই, যাহার সঙ্গে সাক্ষাৎ ভাবে ষ্টেডের স্বল্পবিস্তর ঘনিষ্ঠ আলাপপরিচয় ছিল না। তিনি কেবল যে জগতের দৈনন্দিন ঘটনাগুলিই জানিতেন তাহা নহে,কিন্তু এই সকল ঘটনার অন্তরালে যে ব্যক্তিগত চরিত্র লুকাইয়া থাকে, নর্থদর্পণের দ্যায় সৰ্ব্বদ। তাহা ও প্রত্যক্ষ করিতেন। সুতরাং ষ্টেড, কখনই কেবল বাহিরের কায্যকার্য্যের দ্বারা কোনো বিষয়ের ভালমন্দের বিচার করিতেন না । কিন্তু এই সকল কাৰ্য্যাকার্য্যের ভিতরে যে মানুষের প্রাণমানুষের বুদ্ধি, মানুষের আশা ও আকাক্ষা, মানুষের শক্তি ও সংযম, মানুষের লক্ষ্য ও অভীষ্ট জড়াইয়া থাকে, তাহারই দ্বারা এ সকলের বিচার করিতেন । আর এই জন্য প্রত্যেক দেশের কর্শ্বিগণ একদিকে যেমন তাহার মন্তব্যের নিগুঢ় মৰ্ম্ম বুঝিতে পারিয়৷ শ্রদ্ধাভরে তাহার কথা শুনিতেন, অন্যদিকে সেইরূপ কেবল বাহির হইতে যাহারা সকল বিষয়ের বিচার