পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ কাজ প্রাদেশিক প্রজাসভা ও সেই প্রজাসভার অধীনস্থ প্রাদেশিক গভর্ণমেণ্টই আপনার করিবেন। ব্রিটিশ পালামেণ্ট তখন ফেডারেল পালেমেণ্ট হইবে। তখন ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের প্রতিনিধিগণকে লইয়া এই সাধারণ প্রজাসভা গঠিত হইবে। যে সকল বিষয়ে সকল প্রদেশের বা একাধিক প্রদেশের স্বত্বস্বাগ আছে, কেবল সেই সকল বিষয়ই এই ফেডারেল পালেমেণ্টের কর্তৃত্বাধীনে থাকিবে। ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের মধ্যে যথাযথ সম্বন্ধ রক্ষা করা, তাহাদের পরস্পরের বিবাদ বিরোধের মীমাংসা করা, সমগ্র সাম্রাজ্যের সন্ধিবিগ্রগদির অনুষ্ঠান ও তত্ত্বাবধান করা, পররাষ্ট্রের সঙ্গে আপনাদের ক্তরাষ্ট্রের সৰ্ব্ববিধ সম্বন্ধ নির্ণয় ও সম্বন্ধ স্থাপন করা, ও এই সকল সম্বন্ধকে যথাযোগ্যভাবে য়ক্ষণ করা,—এই সকলই তখন ব্রিটিশ পালেমেণ্টের 'কক্ষ হইবে। ব্রিটিশ প্রজাসভা ক্রমে এইভাবেই পুনর্গঠিত হইয়া উঠিবে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রশক্তি ও রাষ্ট্রজীবন এই দিকেই বিবৰ্ত্তিত হইয়া উঠিতেছে। ফলতঃ ইংরেজ রাষ্ট্রনীতি-বিশারদের সুস্পষ্টই দেপিতেছেন যে কেবল এই পথেই অব্যবহিত ভবিষ্যতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব ও উন্নতি বিধান সম্ভব। ইহার আর দ্বিতীয় পথ নাই। এখন আমরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বলিতে যাহা বুঝি, তাহা তিন অঙ্গে পূর্ণ হইয় আছে। এই সাম্রাজ্যের এক অঙ্গ, গ্রেট্‌ব্রিটেন ও আর্ল্যাণ্ডের যুক্তরাজ্য, ইংরেজিতে ইঙ্গকে United Kingdom of Great Britain and Ireland বলে। তার দ্বিতীয় অঙ্গ,--অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যাণ্ড, ক্যানেড ও দক্ষিণ আফ্রিকা, এই চারিট উপনিবেশ। আর তার তৃতীয় বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ম, আষাঢ়, ১৩১৯ অঙ্গ-ভারতবর্ষ ও মিশর। এই তিনটা অঙ্গের মধ্যে, বলিতে গেলে, কোনো প্রকৃতি গত, স্বাভাবিক, অচ্ছেদ্য যোগ, কিম্বা কোনে প্রকারের স্বত্বস্বাধীনতার বা শাসনতন্ত্রের সমত নাই। এই তিনটী অঙ্গের শাসন-তন্ত্র তিনট স্বতন্ত্র আকার ধারণ করিয়া আছে। প্রথমত: ব্রিটিশ উপনিবেশগুলির কথা। এই উপনিবেশ গুলিকে কোনে মতেই ইংলণ্ডের অধীন বল যায় না। ফলত: এগুলিকে এক একটী স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র বলিলেও চলে। তারা নিজেদের আইনকানুন নিজেরাই বিধিবদ্ধ করে, নিজেদের রভার নিজেরাই নিৰ্দ্ধারণ করে, নিজেদের রাজস্ব নিজেদের ইচ্ছা ও প্রয়োজন মতই বায়ু করে । নিজেদের রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মচারীগণ নিজেরাই নিযুক্ত করে। তারা ব্রিটনের আমদানী পণ্যের উপরে ইচ্ছামত শুল্ক নিৰ্দ্ধারণ করিতে পারে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অপরাপর দেশের লোককে তাহীদের দেশে ইচ্ছামত যাতায়াত ও ব্যবসায় বাণিজ্য করিবার অধিকার দিতে বা তাহ হইতে বঞ্চিত করিতে পারে। তাহারা ইংরেজকে কোনো কর দেয় না। ইংলণ্ডের নৌ-বিভাগ বা সেনা-বিভাগের ব্যয় নিৰ্ব্বহার্থে এক কপর্দক অর্থও দান করে না। ইংলণ্ডের সঙ্গে তাদের এরূপ কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। ইংলণ্ডের যুদ্ধ বিগ্ৰহাদির সঙ্গেও তাহারা যোগদান করিবে কি নী তাহাও সম্পূর্ণরূপেই তাঁহাদের ইচ্ছাধীন। ইংলণ্ডের মন্ত্রিসমাজ তাঁহাদের গবর্ণর নিয়োগ করিবেন, আর তাহারা নিজের কোনও পররাষ্ট্রর সঙ্গে সাক্ষাৎভাবে সন্ধিবিগ্রগদি করিতে পরিবে না ইহাই তাছাদের উপরে ব্রিটিশ-আধিপত্যের চরম সীমা। কিন্তু সন্ধি