পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ও অধ্যাত্ম-তত্ত্ব অনায়ুত্ত থাকে না। অবশিষ্ট রছিল শারীরতত্ত্ব এবং মনস্তত্ত্ব। এই দুই বিয়ের যথাযথ অধ্যয়ন আমাদের মহিলাদিগের বর্তমান অবস্থায় সম্ভব নহে ; ভবিষ্যতে কখনও সম্ভব হুইবে কি না তাহা ভবিষ্যৎ জানে। কিন্তু র্যাহারা গ্রন্থ নিৰ্ব্বাচনের ভার লইবেন, তাহার যদি বাঙ্গালার সাহিত্যভাণ্ডার অন্বেষণ করিয়া এই সকল বিষয়ে, পুর্নারদিগের পাঠোপযোগী গ্রন্থ বাচিয়৷ বাহির করিতে পারেন ভালই ; যদি তাঁহা ন৷ পারেন, তাহা হইলে ঐ সকল বিষয়ে মহিলাদিগের উপযোগী গ্রন্থ প্রণয়ন করা তাহাদিগের কর্তব্য হইবে! এইরূপ সুব্যবস্থার ফলে বিশুদ্ধ বঙ্গভাষায় লিখিত ভাব-শুদ্ধ উৎকৃষ্ট গ্রন্থলাভ করিয়া আমাদের মহিলাগণ যদি একদিকে নিজের জ্ঞানবৃদ্ধি করিয়া অন্যদিকে সতর্ক ভাবে শিশুর শিক্ষা চালাইতে থাকেন, তাহা হইলে অচিরেই আমাদের এই উপত্যক ভাষার বিশুদ্ধি, ভাবের উৎকর্ষ এবং জ্ঞানের বিস্তার ও উন্নতি লাভ করিয়া অচিরেই ধন্য হইতে পারে। সমাজের এই সুন্দর আনন্দজনক চিত্র আজ কল্পনার বিষয় রহিয়াছে, কিন্তু আমাদিগের উৎসাহী যুবকের। যদি সুদৃঢ়। "সঙ্কল্প এবং অধ্যবসায় সহকারে এই কাৰ্য্যকে একটা মহাব্ৰত মনে করিয়া ইহার সাধনে প্রবৃত্ত হন, তাহা হইলে আজ যাহা কল্পনা বলিয়া বোধ হইতেছে, তাহদের জীবিত কালের মধ্যেই তাহ বাস্তবে পরিণত হওয়া বিচিত্র নহে। সাহিত্য-সেবার উপরে জীবিকার জন্য নির্ভর করিতে কাহাকেও উপদেশ দেই না। গ্রন্থ-বিক্রেতার ব্যবসায় লাভজনক হইলেও গ্রন্থকারের দারিদ্র্য জগতে সভাপতির অভিভাষণ চির-প্রসিদ্ধ। যিনি প্রকৃতির তাড়নায় এই দারিদ্র্য-ব্রত গ্রহণ করেন, তাহার কথা স্বতন্ত্ৰ ; কিন্তু দেশের মঙ্গলের জন্য সাহিত্যের সেবা, পরিচর্য্যা এবং প্রচারে র্যাহারা আত্মশক্তির প্রয়োগ করিবেন, তাঙ্গার জীবিকার জন্য অন্য একুট না একটা কিছু অবলম্বন করেন, এই আমার অনুরোধ । এই উপত্যকাবাসী শিক্ষিত যুবকের জীবিকার জন্য যিনি যে পন্থাই অবলম্বন করুন, সাহিত্যের অনুরাগ তিনি ছাড়িবেন না, সাহিত্যের উপর হইতে তাহার সানুগ্রহ দৃষ্টি সরাইয়া লইবেন না,ইহাই আমার আশ । কয়েক মাস পূৰ্ব্বে করিমগঞ্জ হইতে প্রকাশিত “প্রভাত’ নামক পাক্ষিক পত্রিকায় শ্ৰীহট্টবাসী জনৈক যুবকের একখানি পত্র প্রকাশিত হইয়াছিল। তাঙ্গর সেই পরখানি পড়িয়া আমি এই বাৰ্দ্ধক্যেও যেন যৌবনের উৎসাহ অনুভব করিয়াছিলাম ! ঐ পত্রের লেখক কে, এবং তিনি এই সভায় উপস্থিত আছেন কি না, জানি না । কিন্তু সেই পত্রপানিতে তিনি যে উদ্যম-উৎসাহ, যে আশাভরসা, যে স্বদেশ-গ্রীতি ও গৌরব-লিঙ্কার আভাষ দিয়াছেন, তাঙ্গ আজও আমার অন্তঃকরণকে যেন আলোকিত করিয়া রাখিয়াছে। তিনি লিপিয়াছেন, তিনি এবং র্ত্যতার সহকারী কয়েকটি বন্ধু নানা ভাষায় নানা বিষ্ঠা শিক্ষা করিয়া ঐ সকল ভীমার সম্পদরাশি আহরণপূর্বক মাতৃভূমিকে গৌরব মণ্ডিত করিবেন। ভরসা করি, আজিও র্তাহারা সে সঙ্কল্প বিস্তৃত হন নাই, সে অধ্যবসায় পরিত্যাগ করেন নাই।