পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন Ꮌ8 নাই। পরস্তু ত্ৰিভুবনকে নিঃক্ষত্রিয় করিবার ‘ জন্যই ডাহাকে রজঃপ্রধান রাগত্মিক ক্ষত্ৰিয়প্রকৃতি আশ্রয় করিয়া, ক্ষত্রিবৃত্তি অবলম্বন করিতে হইয়াছিল। হিন্দুর কিম্বদন্তিপ্রসিদ্ধ যুগাবতারগণের গত্ৰিয়ত্বের পশ্চাতে সমাজবিজ্ঞানের একটা অতি সত্য ও নিগূঢ় তত্ত্ব নিহিত রহিয়াছে বলিয়া মনে হয়।

  • গুরুদাস বাৰু ও মহাজনপন্থ

রুদাস বারুর মধ্যে কখনো এই রজোগুণের কোনো প্রকারের অতিশয্য দেখা যায় নাই। “কৰ্ম্মনাং অশমঃ স্প হা”—ইহাই রজের প্রধান লক্ষণ। এই গুণ "তৃষ্ণাসঙ্গসমুদ্ভবং ” ইহা “রাগাত্মিক৷ ” গুরুদাস বাবুর কৰ্ম্ম-চেষ্টা আছে। এখন পর্য্যন্তও জনহিতকর কৰ্ম্মে তার বিন্দু পরিমাণ আলস্য বা ঔদাসীন্য দেখা যায় না । কিন্তু কৰ্ম্মচেষ্টা থাকিলেও কখনোই কৰ্ম্মে তার অশম স্পছ দেখা যায় নাই । তার কৰ্ম্মচেষ্টা তৃষ্ণাসঙ্গসমুদ্ভব নহে, ধৰ্ম্মবুদ্ধি-প্রণোদিত। সুতরাং আমাদের অপরাপর কৰ্ম্মনায়কগণের মধ্যে প্রায়শঃই যে একটা আত্মপ্রতিষ্ঠার ভাব ও ফলাফল-সন্ধিৎসু চাঞ্চল্য লুকাইয়া থাকে, গুরুদাস বাবুতে তাঙ্গ লক্ষিত হয় নাই । আর তার প্রকৃতির ভিতরে এই রজোগুণের আতিশয্য নাই বলিয়াই,যেমহাজনপন্থ অবলম্বন করিয়া, অতি প্রাচীনকাল হইতে যুগে যুগে হিন্দুসমাজের বিবৰ্ত্তন হইয়া আসিয়াছে, যাহাঁকে আশ্রয় করিয়া হিন্দুসমাজ প্রত্যেক যুগসন্ধিসময়ে আপনার গতিশক্তি ও স্থিতিশক্তির মধ্যে এমন সুন্দর ও সহজ সন্ধি ও সামঞ্জস্য স্থাপন করিতে পারিয়াছেন, গুরুদাস বাবু, আপনার কৰ্ম্মজীবনে বা ধৰ্ম্মজীবনে, { ১২শ বৰ্ম, বৈশাখ, ১৩১৯ কোথাও একান্তভবে সেই মহাজনপন্থা অবলম্বন করিতে পারেন নাই। গুরুদাস বাবুর ভিতরকার প্রকৃতিই এমন যে তিনি বৌদ্ধযুগের আদিতে জন্মিলে, কখনই একান্তভাবে ভগবান বুদ্ধদেবের শরণাপন্নও হইতে পারিতেন ন, তার প্রতিবাদীও হইতেন না। কিন্তু বুদ্ধদেবের শিক্ষা.ও সাধনার প্রতি অন্তরে অস্তরে ভক্তিমান হইয়াও, সেকালের ক্রিয়াবহুল ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্ম ও বৈদিক পন্থাকেই ধরিয়া রহিতেন ! মহাপ্রভুর সময়ে, এই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করিলেও, গুরুদাস বাবু তাহাঁই করিতেন। সে কালের বহুসংখ্যক বাঙ্গালী ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য ও কায়স্থদিগের স্থায়, গুরুদাস বাবুও হয় ত মহাপ্রভুর সিদ্ধান্ত ও সাধন গ্রহণ করিতেন, কিন্তু কখনই তার একান্ত অতুগত হইয়া, সমাজের প্রচলিত স্মৃতিজাহ্নুগত্য বর্জন করিতে পারিতেন না । আর আমাদের এই কালে, বাংলার হিন্দু: সমাজের গতিশক্তি যে সকল মহাজনকে আশ্রয় করিয়া, সমাজের “পরিবর্তনযোগ্য” রীতিনীতির সংস্কার-সাধনের প্রয়াসী হইয়াছে ; গুরুদাস বাবু ইহাদের সকলেরি প্রতি ভক্তিমান, কাহাকেই অবজ্ঞা বা উপেক্ষা করেন ন ; কিন্তু আবার কাঠাকেই একান্ত ভাবে আশ্রয় করিয়া, সমাজের পরিবর্তনযোগ্য রীতিনীতির আনুগত্যও পরিত্যাগ করিতে অগ্রসর হন নাই। গুরুদাস বাৰু ও লৌকিকাচার মোট কথা এই যে — 3 যদি যোগী ত্রিীলঙ্ক; সমুদ্রললনক্ষম: তথাপি লৌকিকাচারং মনসাংপি ন লঙ্গয়েং। “যোগী ত্রিকালজ্ঞ এবং সমুদ্র-লঙ্ঘনক্ষম