পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] এই দেহগুদ্ধির জন্তই বিহিত হইয়াছে। এই উদ্দেশ্যেই পানাহার সম্বন্ধে হিন্দুর ধৰ্ম্ম অশেষ প্রকারের আচার-বিচারের প্রতিষ্ঠা করিয়াছে। আর এইজন্তই, উচ্চাঙ্গের ধৰ্ম্মসাধনায়, আসনপ্রাণায়ামাদিরও ব্যবস্থা হইয়াছে। এ সকলের সঙ্গে অতীন্দ্রিয় সিদ্ধির কথা নানাভাবে, লোকসংগ্ৰহার্থে, যুক্ত হইলেও, এ সমস্তই প্রকৃতপক্ষে ভূতগুদ্ধির উপায় মাত্র। শরীরের স্বায়ুসকলকে স্নিগ্ধ ও মুস্থ রাখিবার জষ্ঠ, স্নায়বীয় উত্তেজনা-নিবন্ধন যাহাতে অযথা চিত্তচাঞ্চল্য উপস্থিত না হয়, তাহার ব্যবস্থা করিবার জন্ত, এ সকল স্নান, ব্রত, উপবাস, আসন, প্রাণায়ামাদির বিধান প্রবর্তিত হইয়াছে । প্রকৃত পক্ষে এ সকলের মধ্যে অতি প্রাকৃত বা সুপারষ্ঠাচারেল (supernatural ) ष्ट्रिङ्गे नाझे । কিন্তু এ সকল ষমনিয়মাদির প্রতিষ্ঠা করিতে যাইয়া হিন্দুর ধৰ্ম্ম মামুষের শারীর প্রকৃতির চরিতার্থত৷ সাধনেরই চেষ্টা করিয়াছেন, তাহাকে পীড়ন করিতে কখনও চাহেন নাই। কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে , কৃচ্ছসাধন প্রচলিত আছে সত্য, কিন্তু এ সকল সাধন প্রকৃত পক্ষে উচ্চাঙ্গের হিন্দু সাধন বলিয়া কথনই পরিগণিত হয় নাই । অধিকাংশ স্থলেই ঐশ্বৰ্য্যলাভের জন্ত এ সকুল সাধন অবলম্বিত হইয়া থাকে। গীতায় ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ কঠোর ভাষায় এই প্রকারের সুধিনের নিন্দ করিয়াছেন। এই সকল কৃচ্ছসাধনকে আস্থর সাধন বলে । অশাস্ত্রবিহিতং ঘোঁরং তপ্যন্তে ষে তপে জনা: দম্ভাহঙ্কারসংযুক্তাঃ কামরাগবলান্বিতাঃ ॥ হিন্দুধৰ্ম্মের বহুমুখীনতা ৩২১ কৰ্শয়ন্তঃ শরীরস্থং ভূতগ্ৰামমচেতস: | মাঞ্চৈবন্ত:শরীরস্থং তান বিষ্কামুরনিশ্চয়ান্‌। “যাহার দম্ভাহঙ্কারযুক্ত ও কামরাগবলান্বিত হইয় অশাস্ত্রবিহিত পীড়াজনক তপস্তা করে এবং তাছাতে দেহস্থিত ভূতসকলকে বৃথা ব্ৰতোপবাদাদির দ্বারা ক্লিষ্ট করে, এবং শরীরাভ্যন্তবস্থ আত্মরূপী আমাকে ও পীড়ন করে, তাহাদিগকে অমুর বলিয়া নিশ্চয় জানিবে।” প্রকৃত ধর্মম পথ এ নহে। হিন্দুর ব্রতোপবালাদি শরীরকে দুৰ্ব্বল ও দুস্থ করিবার জন্ত বিহিত হয় নাই, শক্ত ও সুস্থ করিবার ও রাখিবার জন্তই বিহিত হইয়াছে। স্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও শক্তিলাভেই জীবের শরীরের সার্থকতা লাভ হয় । আর হিন্দুর ধৰ্ম্মের শারীরিক সাধনের উদেখও আয়ু:সত্ত্ববলারোগ্য বিধান করা। আর এ বিষয়েও হিন্দুর ধৰ্ম্ম কাহারও উপরে কোনও প্রকারেয় অষথ জোরজবর দস্তি করিতে চায় না । সকল মামুষের শারীর প্রকৃতি একরূপ নহে। সুতরাং শারীর ধৰ্ম্মও সকলের সমান হইতে পারে না । এ বিষয়েও হিন্দুর ধৰ্ম্ম মানুষের স্বভাবকে অতিক্রম করিয়া চলিতে চাহে না । গতামুগতিক পথ ধরিয়া কোনও কোনও হিন্দু সকল লোকের উপরেই একই প্রকারের ব্ৰতোপৰাসাদি চাপাইতে চেষ্টা করিলেও, হিন্দুর ধৰ্ম্মের সনাতন আদর্শে বা উপদেশে এরূপ জোরজবরদস্তি কদাপি সমর্থিত হয় না। ফলতঃ জগতের আর কোনও ধৰ্ম্ম সমর্থ ও অসমর্থের মধ্যে যমনিয়মাদির এমন পার্থক্য করেন কি না, জানি না । সমর্থ জনের পক্ষে একরূপ বিধান, আর অসমর্থের