পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Pሻ ቫ:ዊU প্রকৃষ্ণের অবতারত্ব, উড়াইয়া দিয়া, র্যাপ্ত ংষ্টের অবতারত্বে বিশ্বাস করা অসাধ্য হইল। অথচ এইরূপ অবস্থাতেও যখন পৃষ্ঠান ধৰ্ম্ম-প্রচারকের হিন্দুধর্শের উপরে নিজেদের ধৰ্ম্মের আত্যন্তিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবী সপ্রমাণ করিতে যাইয়া প্রতিবাদী ধৰ্ম্মের মত-বিশ্বাস, সিদ্ধান্ত ও সাধনার হীনতা প্রমাণ করিতে অগ্রসর হইলেন, তখন তাহাদের এই অযথা নিন্দবাদের ফলেই,—যে স্বদেশের ধৰ্ম্মকে এককালে আমরা হীন বলিয়া বর্জন করিয়াছিলাম, তাহারই সম্বন্ধে ক্রমে আমাদিগের প্রাণে একটা প্রবল শ্রেষ্টত্বাভিমান জাগিয়া উঠিল। মানুষ এ জগতে নিজের প্রাণের মধ্যে যে ভাব লইয়৷ অপর মামুষের নিকটে যায়, তাহার প্রাণেও অলক্ষিতে সেই ভাবেরই সঞ্চার করে। প্রেম এই জন্য প্রেমকে ফোটায়। ঘৃণা ঘৃণাকেই বাড়াইয়া দেয়। একের অহঙ্কার-অভিমান, অপরের অহঙ্কারঅভিমানে আঘাত করিয়াই তাহাকে জাগাইয়া তুলে। মানব-প্রকৃতির এই নিয়মবশে খৃষ্টীয়ান ধৰ্ম্ম-প্রচারকদিগের অসঙ্গত -পূর্ণাভিমান আমাদিগের অন্তরে স্বদেশের ধৰ্ম্মসম্বন্ধেও একটা প্রবল শ্রেষ্টত্বাভিমান জগাইয়৷ দিল যাহার একদা স্বদেশের প্রচলিত ধৰ্ম্মের সংস্কারকায্যে ব্ৰতী হইয়া স্বদেশক্সসিগণের নিকটে নিয়তই সেই ধৰ্ম্মের ভ্রমপ্রমাদের ব্যাখ্যা • করিতেছিলেন, এখন তাহারাষ্ট্র আবার জগতের অপরাপর ধৰ্ম্মের সঙ্গে তুলনা করিয়া আপনাদের প্রাচীন ধৰ্ম্মের শ্রেষ্টত্ব প্রতিপাদনে যত্নবান হইলেন। এইরূপে রাজ রামমোহন রায়, মহর্ষি চরিত-চিত্র చీరి) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাহাত্ম রাজনারায়ণ বস্তু, ইহারা সকলেই একদিকে যেমন প্রচলিত ক্রিয়াবহুল হিন্দুধর্মের সংস্কারের চেষ্টা করেন সেইরূপ অন্যদিকে, বিদেশীয় প্রতিবাদিগণের সমক্ষে এই ধর্মেরই সনাতন-তত্ত্ব ও চিরন্তন আদর্শের অনন্যসাধারণ শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রতিপন্ন করেন। আপনাদিগের পুরাতন ধর্মের যে শ্রেষ্টত্বাভিমান এইভাবে আমাদিগের মধ্যে ক্রমে জাগিয়া উঠে তাহারই উপরে সৰ্ব্বপ্রথমে আমাদের আধুনিক স্বাদেশিকতার Ri Natonalismusā Gī ভিত্তি স্থাপিত হয়। বহুবিধ মানসিক, সামাজিক, এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির সাহায্যে নবোদিত স্বাদেশিকত উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় । যে ইংরেজি শিক্ষার অনুপ্রাণনে এই নূতন স্বাদেশিকতার উৎপত্তি হয়, সেই শিক্ষারই বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে, একদিকে দেশের নবশিক্ষিত সম্প্রদায়ের এবং অন্যদিকে ইংরেজ রাজপুরুষ ও ব্যবসায়িগণের মধ্যে নানাবিষয়ে একটা প্রবল প্রতিযোগিতা জন্মিতে আরম্ভ করে। এই প্রতিযোগিতা নিবন্ধন একদিকে এক অভিনব স্বদেশ-প্রীতি এবং অন্যদিকে একটা বিজাতীয় পরজাতিবিদ্বেষও জাগিয়া উঠে। তদানীন্তন বাংলা .সাহিত্যের ভিতর দিয়া এই নূতন স্বজাতি বাংসল ও পরজাতি-বিদ্বেষ দুই-ই মুখরিত হইয় উঠে । এই সময়েই বঙ্কিমচন্দ্র “বঙ্গদর্শনের" প্রতিষ্ঠা করেন। নব্যশিক্ষিত বাঙালী সমাজে বঙ্গদর্শন স্বদেশের প্রাচীন গৌরব-স্মৃতি জাগাইয়া, এই নবজাত স্বদেশপ্রীতিকে বাড়াইয়া তুলিতে আরম্ভ করে। হেমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, গোবিন্দচন্দ্র, রঙ্গলাল, সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্র, মনোমোহন,