পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] বিরোধ উৎপন্ন হয় নাই। কলিকাতা ব্রাহ্মসমাজ সৰ্ব্বদা আপনার তত্ত্বসিদ্ধাস্ত ও ধৰ্ম্মসাধনকে উচ্চতর ও বিশুদ্ধতর হিন্দুধৰ্ম্ম বলিয়াই প্রচার করিয়াছেন। দেশের লোকেও উহাদের এই দাবীর একান্ত প্রতিবাদ করেন নাই । কিন্তু এইরূপে কলিকাত ব্রাহ্মসমাজ যে পথ ধরিয়া আপনাদের ধৰ্ম্মসাধনে গুরু ও শাস্ত্রের প্রতিষ্ঠা করিতে গেলেন, সে পথে, এদেশে, কখনও এ বস্তু মিলে নাই। আমাদের সাধনায় শাস্ত্রগুরু-আনুগত্যের একটা নিগৃঢ় সঙ্কেত আছে, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কলিকাতা ব্রাহ্মসমাজ সে সঙ্কেতটী লাভ করেন নাই। গুরু স্বয়ং গুরু-আনুগত্য স্বীকার ও শাস্ত্র আপনি পুরাতন শাস্ত্রে আবদ্ধ আধাত্মিক অভিজ্ঞতার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াই আপনাদিগকে প্রতিষ্ঠিত করেন । আমাদের গুরু ও শাস্ত্র কিম্বা গুরূপদেশ, দু’এর কেহই ধ্ৰুং-বৃত ও স্ব প্রতিষ্ঠ নহেন। পূৰ্ব্বতন গুরুপরম্পর ওঁ সনাতন শাস্ত্র ধারার সঙ্গে ইহাদের একটা গভীর ও অঙ্গাঙ্গী যোগ সৰ্ব্বদাই রক্ষিত হয়। মহর্ষির ব্রাহ্মসমাজে এ যোগ থাকে নাই। আয় এইরূপ স্বয়ংরত গুরুর বা মনগড়া শাস্ত্রের মর্যাদা কদাপি কোথাও স্থায়িত্ব লাভ করিতে পায়ে না । যেখানেই এরূপ গুরু-শাস্ত্রের স্বষ্টি হইয়াছে, সেই খানেই ক্রমে বিদ্রোহীদলের উৎপত্তি হইয়া, সম্প্রদায়কে শতধা বিচ্ছিন্ন করিয়াছে। রোমক-খৃষ্টীয় সঙ্ঘের প্রামাণ্য একদিকে পুরাতন শাস্ত্রধারার ও অন্তদিকে পুরাগত শুক্লপারম্পর্যের উপয়ে প্রতিষ্ঠিত বলিয়া, সেখানে ধৰ্ম্মমত লইয়া দলাদলির গ্রকোপও চরিত-চিত্র ○ゲ○ অত্যন্ত কম। প্রোটেষ্টাণ্ট, খৃষ্টীয় সত্যে শাস্ত্র আছে, কিন্তু গুৰুপরম্পরার ব্যাখ্যাকে অবলম্বন করিয়া শাস্ত্রধারার স্বাক্ট হয় নাই ; এখানে প্রত্যেকে আপনার বিচার ও বুদ্ধি, খুসি ও খেয়াল মত শাঙ্গের ব্যাখ্যা করিতে পারেন। অন্তদিকে, প্রোটেষ্টাণ্ট, খৃষ্টীয়ুমণ্ডলী মধ্যে গুরুপরম্পরারও প্রতিষ্ঠা হয় নাই। আর এই দুই কারণে প্রোটেষ্ট্যান্ট, সত্ত্য এই পাঁচশত বৎসরের মধ্যে অসংখ্য বিরোধী দলে বিভক্ত হইয়াছে, আর প্রতিদিনই নুতন নূতন প্রতিবাদী সম্প্রদায়ের স্বষ্টি হইয়া, ইহাকে আরো ছিন্নবিচ্ছিন্ন করিয়া তুলিতেছে। আমাদের ব্রাহ্মসমাজেও, মূলতঃ এই একই কারণে, মুষ্টিমেয় লোকের মধ্যেই, পঞ্চাশত বৎসর যাইতে না বাইতে তিনটা দলের স্বষ্টি হুইয়াছে। মগুধি দেবেন্দ্রনাথ যে পথ ধরিয়া প্রাচীন শাস্ত্রগুরু বর্জন করিয়া, আপনার ব্রাহ্মসমাজে নূতন গুরু ও শাস্ত্রের প্রতিষ্ঠা করিতে গেলেন, সে পথে এ বস্তু পাওয়া যায় না । তিনি আপনার বিচারবুদ্ধি বা তথাকথিত আত্মপ্রত্যয়কে যতটা প্রামাণ্য-মৰ্য্যাদা প্রদান করিতে লাগিলেন, অপর ব্রাহ্মদিগের বিচারবুদ্ধির প্রতি সেইরূপ মর্যাদা প্রদর্শন করিতে পরিলেন না। পারিলে, তার নিজের গুরুপদ-গৌরব ও তার সঙ্কলিত ‘ব্রাহ্মধৰ্ম্মগ্রন্থের” শাস্ত্র প্রামাণ্য, তিনি দু’এর কিছুরই দাবী করিতে পারিতেন না । কিন্তু মহুষি যে ব্যক্তিwifsstät footto ( Individualistic Rationalism ) $o WI’lāl; &loধৰ্ম্মকে প্রতিষ্ঠিত করেন, তার অপরিহার্য্য পরিণামকে অকুতোভয়ে গ্রহণ করিতে