পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(to S শুক্লা দ্বিতীয়ার মধ্যাহ্নে শ্ৰীমন্দির হইতে শ্ৰীজগন্নাথকে গুঞ্জাবাড়ী লইয়া যায়, আর সপ্তাহান্তে আবার তাহীকে সেখান হইতে শ্ৰীমন্দিরে ফিবাষ্টয়া লইয়া আইদে, প্রকৃত পক্ষে শ্ৰীজগন্নাথের রথযাত্রা যে এই ক্ষুদ্র দেশটুকুকে ও ই সামান্ত, কালটুকুকে জুড়িয়াই আপনার সত্যিকার গতাগতি শেষ করে, এ অদ্ভূত কল্পনা যে করে, তার রথযাত্রা দেখা বিড়ম্বন মাত্র । বহুবৎসর ব্যাপিয়া দেশদেশান্তরে, কোনও নায়ক নায়িকার জীবনে যে সকল বিচিত্র ঘটনা ঘটে, অলৌকিক কবি- *:তিত সম্পন্ন নাট্যকার যেমন ক্ষুদায়তন রঙ্গমঞ্চে দুই-চারি দণ্ড-কালের অভিনয়েই তাহাকে অতি সুন্দর করিয়া দেখাইয়া থাকেন ; সেইরূপ এই সামান্য দারুনিৰ্ম্মিত রথখানিকে এই অতি সামান্ত সময়ের ভিতরে গোটাকয়েক রণীর রাস্থ ঘুরাষ্টয়া আনিয়া, হিন্দুর আধ্যাত্মিক সাধন নিখিল ব্ৰহ্মাণ্ডের পৌনঃপুনিক গতাগতিকে, প্রাকৃতজনের চক্ষর উপরে ফুটাইয়া তুলিতে চেষ্টা করিয়াছে। ইহাই এই রথযাত্রার নিগুঢ় রথযাহার দিন করারম্ভের দিন। এই দিন যোগনিদ্রাভিভূত নারায়ণ যোগনিদ্র। ভঙ্গ করিয়া, স্বঠলীলায় বহির্গত হন। প্রত্যেক কল্পের স্বচনায় এই অদৃপ্ত জগন্নাথের এই অদৃপ্ত রথখানি চলিতে আরম্ভ করে। আর কল্পাস্তে,মহাপ্রলয়কালে,আবার যেখান হইতে প্রথম যাত্রা করিয়াছিল, সেইখনেই ফিরিয়া যায়। এইরূপে অসীম দেশ ও অনন্তকালকে জুড়িয়া এই জগন্নাথের রথ বঙ্গদর্শন [ ১১ বৰ্ম, অগ্রহায়ণ, ১৩১৯ কল্পে কল্পে সমগ্র স্বষ্টিলীলাকে পরিক্রমণ করিয়া আইসে । এ যাত্রার আর ও জীব রেখে না ; ইহার শেব ও জীব জানে না। শ্ৰীজগন্নাথের রথযাত্রার সময় এই অদৃষ্ট অজানা বিশ্বস্থঠলীলাটি বিশ্বাস চক্ষে যে দেখিতে পায়, তারই রথ দেখা সত্য ও সার্থক হয়। ইহা যে দেখিল, তার যে সকল বন্ধন দগ্ধসূত্রের দ্যায় আপনি খসিয়া পড়ে, ইহা বিচি এ কি ? শ্রুতি এই শরীরকে রথ বলিয়াছেন ; আর এই শরীরে প্রতিষ্ঠিত ইন্দ্রিয়গ্রামক এ রথের অশ্ব এবং এই সকল ইঞ্জিয়ের পিষয়, রূপর পাfদকে এই রথের পথ বলিয়৷ বৰ্ণন। করিয়াছেন। এই রথে রথী fনfখল জীবান্তৰ্য্যামী ঐনরায়ণ । জাগ্রত, স্বপ্ন, সুষুপ্তি এই ঞ্জিবিধ অবস্থার মধ্যে প্রতিদিন এই রথ যাতায়াত করিতেছে। এ-ও এক রথযাত্ৰা ! এই শরীর-রথে যে শ্রনারায়ণকে আরূঢ় দেখে, সে ভাগ্যবান পুরুষের বন্ধন তো আর থাকে না। তিনি দেহী হইয়াও বিদেহী । প্রতি নিশ্বাস-প্রশ্বাসে তিনি যে পরমপুরুষ জীবের দেহ পুরে পুরস্বামীরূপে সতত বিদ্যমান থাকিয়া, প্রাণাপান-বায়ু সংযোগে, চৰ্ব্ব্যচোষ্যলেহ্যপেয়াদি তার চতুৰ্ব্বিধ অন্নকে পাক করিতেছেন, তাহাকেই প্রত্যক্ষ করেন । এ দেহে আর তখন তার আত্মবুদ্ধি, অহ’বুদ্ধি থাকেন । দেহ সম্বন্ধে আমি, আমার, এ সকল প্রত্যয় র্তার নষ্ঠ হইয়া যায়। _ নৈৰ কিঞ্চিৎ করে নীতি যুক্তে যকৃত তত্ত্ববিৎ । পঞ্চ শৃদ্ধ স্পশন জিঘ্ৰন্নশন গচ্ছন স্বপন্ন ". শ্বসন ॥