পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@്,8 আমার ও যেন এই রোগ হয়। তোমার প্রতি শ্ৰীকৃষ্ণের বিপুল কৃপা দেখিতে পাইতেছি । তোমার শরীর মহাভক্তিযোগ লক্ষিত হইতেছে।” নিমাই আনন্দাপ্ল ত হইয়৷ শ্ৰীবাসকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন “তুমি যদি আমার বায়ুরোগ বলিতে, তাহা হইলে আমি গঙ্গায় ডুবিয়া মরিতাম।” ঐবাস কহিলেন “পাষণ্ডীগণ যাহাই বলুক না কেন, আমরা সকলে মিশিয়া একত্র কীৰ্ত্তন করিব।” অতঃপর শচীদেবীকে পুত্রের প্রকৃত অবস্থা অবগত করিয়া শ্ৰীবাস গৃহে গমন করিলেন । ইহার কিছু দিন পরে পরমভক্ত গদাধরকে সঙ্গে লইয়৷ নিমাই অদ্বৈতাচার্য্যের গৃহে গিয়া উপস্থিত হইলেন। অদ্বৈত তখন তুলসীবৃক্ষে জল সেচন করিতেছিলেন এবং মাঝে মাঝে বাহু তুলিয়া হরি বলিতেছিলেন। সাত আট বৎসর বয়সে অগ্রজ বিশ্বরূপকে ডাকিবার জন্য নিমাই মাঝে মাঝে অদ্বৈতাচার্য্যের গৃহে গমন করিতেন। তথন অদ্বৈতাচাৰ্য্য বালকের অলোকসামান্য রূপ দেখিয়া মুগ্ধ হইয়াছিলেন। বিশ্বরূপ সংসার ত্যাগ করিবার পরে নিমাইর পরিবারের উপর দিয়া কত ঝঞ্জাবাত বহিয়া গিয়াছে। অদ্বৈতের সহিত নিমাইর’ ঘনিষ্ঠত। সংঘটিত হইবার কোন ও কারণ এতদিন হয় নাই। গয়া হইতে নিমাই প্রত্যাগত হইবার পরে তাহার প্রকৃতিপরিবর্তন-সংবাদ অদ্বৈতাচাৰ্য্য শ্রুত হইয়াছিলেন। নিমাইর কৃষ্ণোন্মাদ-সংবাদে বিস্ময়ে অভিভূত হইয়াছিলেন। ইহার কতিপয় দিবস পরে শ্ৰীমদূভাগবত পাঠ । বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, পৌষ, ১৩১৯ করিতে করিতে স্থান বিশেষে অর্থ ভাগরূপ বুঝতে না . পারিয়া . আচাৰ্য্য এক দিন মনেfদুঃখে উপবাস করিয়াছিলেন। রাত্রি কালে স্বপ্ন দেখিলেন, কে যেন তাহাকে সেই স্থানের অর্থ বুঝাইয়া দিয়া বলিতেছে “আচাৰ্য শীঘ্ৰ উঠয়া ভোজন কর। তুমি র্যাহার জন্য এত দিন অপেক্ষ করিয়া আছ, যাহাকে জানিবার জন্য প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলে তিনি প্রকাশিত হইয়াছেন। এখন দেশে দেশে, নগরে নগরে, ঘরে ঘরে কীৰ্ত্তন শ্রুত হইবে। ঐবাস পৃণ্ডিতের ঘরে বৈষ্ণবগণ দেবদুল্লভ দৃষ্ঠ দর্শন করিবে। এখন আমি চলিলাম, আবার আসিব ।” নয়ন উন্মীলন করিশমাত্র নিমাইর গৌরমূৰ্ত্তি তাহার নয়ন সমীপে উদৃষ্ঠাসিত হইয়। উঠিল। অচিরেই সে মূৰ্ব বাতাসে মিলাইয় গেল। আচাৰ্য্য বিস্ময়বিমূঢ় হইয়া রহিলেন । স্বপ্নের কথা অদ্বৈতাচার্য যতই চিন্ত৷ করিতে লাগিলেন, ততই তাহার মন নিমাইর প্রতি আকৃষ্ট হইতে লাগিল। তবে কি তাহার প্রার্থন এত দিনে ভগবৎচরণে স্থান পাইয়াছে ভক্তের দুর্দশ অবলোকন করি ভক্তবৎসলের আসন কি টলিয়াছে, ধৰ্ম্ম স্নান দেখিয়া ধৰ্ম্মংস্থাপনেচ্ছা কি এতদিন পরে তাহার মনে উদিত হইয়াছে—ইত্যাদি কত চিন্তাই তাহার মন আন্দোলিত করিতে লাগিল। আশা ও সংশয়ে তাহাঁর মন অনবরত আলোড়িত হইতে লাগিল । সেই জগন্নাথ মিশ্রের পুত্র-শৈশবেই যে র্তাহীকে দেখিয়া এক অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দে র্তাহার মন পরিপূরিত হইয়াছিল—সেই