পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8bίν ক্ষণে নৃত্য ক্ষণে গড়ি ক্ষণে বাহুতাল ক্ষণে জোড়ে জোড়ে লাফ দেই দেখি ভাল ॥ অবশেষে সেই উন্মাদবপু নিমাই স্বীয় ক্রোড়ে ধারণ করিলে, নিতাই নিশ্চেষ্ট হইয়া তথায় বিশ্রাম করিতে লাগিলেন । ক্ষণকাল পরে নিতাই বাহঙ্গন লাভ করিলে নিমাই কহিলেন “এই কম্প, এই অশ্রু ও এই গর্জন কখনও ঈশ্বরশক্তি ভিন্ন সস্তাবিত হয় না। শ্ৰীকৃষ্ণ আমার প্রতি সদয় হইয়া তোমাকে মিলাইয়া দিয়াছেন। এখন কোন দেশ হক্টতে তোমার আগমন হইয়াছে, ব্যক্ত করিয়া আমাদিগকে কৃতাৰ্থ কর।” নিত্যানন্দ কহিলেন “আমি তীর্থ ভ্রমণ করিতেছিলাম ; কৃষ্ণের পদরেণুপুত বহুস্থান দর্শন করিয়াছিলাম, কিন্তু কোথাও কৃষ্ণকে দেখিতে পাই নাই। অবশেবে এক মহাত্মার নিকট যখন জিজ্ঞাসা করিলাম 'এত তীর্থ পৰ্য্যটন করিয়াও কৃষ্ণকে দেখিতে পাইলাম না, তিনি কোথায় গিয়াছেন ? তখন তিনি বলিলেন ‘কৃষ্ণ গৌরদেশে গমন করিয়াছেন।’ নদীয়ায় সংকীর্তনের কথা শুনিয়া অনেকে আমাকে বলিল ‘নদীয়ায় নারায়ণ জন্মগ্রহণ করিয়াছেন।” কত পাতকী এখানে আসিয়া ত্রাণ লাভ করিতেছে। আমিও পরিত্রাণলাভের আশায় এখানে আসিয়াছি । কিছুক্ষণ এইরূপে প্রেমানন্দে অতিবাহিত হইলে নিমাই কহিলেন “শ্রীপাদ গোসাই, আগামী কল্য ব্যাগপূজার দিন। আপনার ব্যাসপূজা কোথায় সম্পন্ন হইবে ?” নিত্যানন্দ তখন সমীপস্থ শ্রীবাসের হস্ত ধারণ করিয়া কহিলেন “এই ব্রাহ্মণের ঘরে আমার ব্যাপ বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, মাঘ, ১৩১ পূজা হইবে।” অনন্ত সকলে শ্রীবাসের গৃহে গমন করতঃ গৃহদ্বার রুদ্ধ করিয়া ব্যাসপূজার অধিবাসের উল্লাস কীৰ্ত্তন আরম্ভ করিলেন। ভক্তগণপরিবেষ্টিত নিমাই ও নিতাই নৃত্য করিতে করিতে কখনও হুঙ্কার কখনও রোদন করিতে লাগিলেন। উভয়ের শরীর স্বেদ, কম্প ও পুলকের লীলাস্থানে পরিণত হইল। কখনও পরস্পরের আলিঙ্গনে বদ্ধ হইয়া উভয়ে রোদন করিলেন, কখনও বা পরস্পরের চরণ ধারণের চেষ্টা করিলেন, কখনও বা ভূতলে বিলুষ্ঠিত হইলেন। বাহজ্ঞান বিলুপ্ত হইল, বসন খসিয়া পড়িল । অচিরেই গাত্রোথন করিয়া উভয়ে পুনরায় বিপুল উল্লামে নৃত্য করিতে লাগিলেন অনন্তর নিমাই অকস্মাৎ লম্ফ দিয়৷ थप्लेज़ ॐज्ञ छैशविले श्ब्रां “मण थान, भम আন" বলিয়৷ চীৎকার করিয়া উঠিলেন, এবং নিত্যানন্দকে কহিলেন, “শীঘ্র আমাকে হলমুঘল প্রদান কর।” নিতাই নিমাইর হস্তের উপর স্বীয় হস্ত পাতিয়া দিলেন। কেহ কেহ তখন নিমাইর হস্তে হল-মুষল প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন। অতঃপর নিমাই “বারুণী, বারুণী” বলিয়। হুঙ্কার করিয়া উঠিলেন। নিমাইর উদেষ্ঠ বুঝিতে না পারিয়া সকলে কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া রহিলেন। ক্ষণকাল পরে সকলে পরামর্শ করিয়া একঘটি গঙ্গাজল লইয়া গেলে, নিমাই তাহ পান করতঃ “নাড়া, মাড়া” বলিয়া হুঙ্কার করিয়া উঠিলেন। একজন ভক্ত জিজ্ঞাসা করিলেন “কাহাকে ডাকিতেছ, প্রভু, আমরা ত কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না।” তখন নিমাই কহিলেন “আর কাহাকে ডাকিব ?