পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যা ] আর এই নিদান নিৰ্ম্ম করিতে গেলেই লাট মিন্টোর কঠোর ও'অদূরদর্শী শাসন-নীতিরও যথাযোগ্য সমালোচনা করা আবশ্বক হইয়া পড়িত। মিণ্টোর শাসনকালে এরূপ সমালোচনা সম্ভব ছিল না, সুতরাং দেশের লোকনায়কগণের পক্ষে সত্যভাবে ও সম্যকরূপে এই রোগের প্রতীকারচেষ্টারও অবসর ছিল না। বিধাতার কৃপায় লাট হার্ডিঞ্জের শাসনাধীনে এ অবসর আমরা পাইয়াছি। মিণ্টো শাসনের নূতন আইন-কানুন রদ হইয়া যায় নাই সত্য, কিন্তু সে সকল বিধি-ব্যবস্থার বিভীষিক দেশে আর জাগিয়া নাই। শাসনযন্ত্রের পরিবর্তন হয় নাই, কিন্তু বৰ্ত্তমান বড়লাটের ব্যক্তিগত চরিত্র ও সম্যকৃদশী নীতিজ্ঞ তার গুণে শাসনের ভাব বদলাইয়৷ গিয়াছে। বৰ্ত্তমান অপঘাত-বেদন-পীড়িত হইয়াও লাট হার্ডিঞ্জ মুহূর্তের জন্য ও নীতিভ্রষ্ট হয়েন নাই। ভারতশাসনে তিনি যে নীতি প্রবৰ্ত্তিত করিয়াছেন, এই সকল আত্মঘাতী আততায়িতার দ্বারা কেশগ্র পরিমাণেও যে তাহার পরিবর্তন হইবে ন,-রোগশয্যায় পড়িয়াও তিনি এই আশ্বাস প্রচার করিয়াছেন। সুতরাং এ সময়ে সৰ্ব্বতোভাবেই স্বদেশের প্রকৃত হিতাকাক্ষিগণের পক্ষে লাট হার্ডিঞ্জের সমীচিন শাসননীতির সমর্থন কর। কৰ্ত্তব্য । আমাদের স্বাদেশিকতার সঙ্গে লাট হার্ডিঞ্জের শাসন নীতির সম্পূর্ণ সঙ্গতি ন৷ থাকিলে কখনই এমন কথা বলিতাম না। লাট কার্জন এবং তাহার পরে লাট মিন্টে বে নীতির অনুসরণ করিয়া চলিতেছিলেন, ভারতের ভবিষ্যৎ ও লর্ড হার্ডিঞ্জের শাসন-নীতি (::\G: তাহার সঙ্গে এই স্বাদেশিক তার সঙ্গতি থাক। দুরের কথা, বরং একটা প্রবল বিরোধই জাগিয়া ছিল । এ বিরোধ না থাকিলে, এই কয় বৎসর দেশে যে অশান্তি জাগিয়া ছিল তাহাও জাগিত না। লাট কার্জন সৰ্ব্বতোভাবে ব্রিটিশের স্বাখকে ভারতের শাসন-ব্যবস্থায় ও রাষ্ট্ৰীয় কৰ্ম্মক্ষেত্রে ভারতবাসীর স্বাদেশিকতার আদর্শের প্রতিকুলে প্রতিষ্ঠিত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। ভারতের সাম্রাজ্য-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ব্রিটিশের সাম্রাজ্যনীতিকে তিনি কিছুতেই মিলাইতে মিশাইতে পারেন নাই। সুতরাং লাট কার্জনের শাসনকালে ভারতের স্বাদেশিকতা কিয়ংপরিমাণে গভর্ণমেণ্টের দিকে মুখ ফিরাইয়া চলিতে আরম্ভ করে। লাট মিণ্টোও কাৰ্য্যতঃ লাট কার্জনের শাসননীতিরই অনুসরণ করেন, সুতরাং তাহার শাসনকালেও স্বাদেশিক লোকনায়কগণ গভর্ণমেণ্টের সঙ্গে সাহচৰ্য্য করিবার অবসয় প্রাপ্ত হন নাই। লাট মিন্টে উদ্যত শাসনদণ্ড দেখাইয়া, আমাদের প্রাণগত স্বাদেশিকতাকে বর্জন করিয়া, তাহার গভর্ণমেণ্টের একান্ত আনুগত্য গ্রহণ করিবার জন্য আমাদিগকে আহবান করিয়াছিলেন। with those who are not with us, are against us অর্থাৎ যাহারা আমাদের পক্ষে নয় তাহারা আমাদের বিপক্ষে, এই বলিয়া, শুদ্ধ এই সন্দেহের উপরে নির্ভর করিয়া, অপরাধী-নিরপরাধী-নির্বিশেষে দেশের সকল স্বাদেশিকতাকেই ব্রিটিশ-শাসনের স্বল্পবিস্তর শক্ৰ বলিয়া ধরিয়া লইয়াছিলেন। এরূপ অদুরদর্শিতার দ্বারা যাহার বাস্তবিক শক্ৰ