পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৬ বঙ্গদর্শন গ্রেমেতেই এই সথ্যের নিত্যকার ও সত্যকার রূপট অতি পরিষ্কাররূপে দেখিতে পাওয়৷ যায়। আর একটা অতি অদ্ভুত কথা এই যে, বয়ঃসন্ধিকালে—শৈশব আর যৌবন যেখানে গঙ্গাযমুনার মত মিলিয়া যাইতে আরম্ভ করে – তখনকার সখ্যেতে এমন সকল বৈচিত্র্য ফুটিয়া উঠে, যাহা বস্তুতঃ সচরাচর কেবল মাধুর্য্যেতেই দেখা গিয়া থাকে। এই বয়ঃসন্ধিকালের বালকে বালকে ও বালিকায় বালিকায় যে অপূৰ্ব্ব স্নেহের, প্রেমের, সাম্যের, স্পৰ্দ্ধার, ঔদ্ধত্যের, আব্দারের, মানের, কখনও অসুরাগের কখনও বিরাগের, ক্ষণে কলহ ক্ষণে মিলন, ক্ষণে ক্রোধ ক্ষণে ক্ষম,—এ সকল ভাব যাহা দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাই সথ্যের বিচিত্র স্বরূপ। আর এই সকল বিচিত্র ভাবের তাড়নায় ক্ষণে ক্ষণে এই সকল প্রণয়িগণের মধ্যে যে [ ১২শ বর্ষ, মাঘ, ১৩১৯ রস উচ্ছলিত হইয় তাহদের চক্ষে মুখে, অঙ্গে প্রত্যঙ্গে, সৰ্ব্ব শরীরে ছাইয় পড়ে, ও তাহার দরুণে ইহাদের দেহকে আশ্রয় করিয়া যে জীবন্ত ছবি সকল ফুটিয়া উঠে, তাহাই সথ্যের রূপ। কৃষ্ণ-লীলার অভিনয়ে, গোষ্ঠের পালায় এ রসের মূৰ্ত্তি ও মূৰ্ত্তি দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু তাহা করিতে হইলে, মুকুমার বালকগণকে লইয়াই ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের ভূমিক। করা প্রয়োজন হয়। কারণ তাহীদের সুকোমল ও কামসম্পূর্বসূন্য দেহেতেই কেবল সত্য যথ্যের বিশুদ্ধ রূপটা ফুটবার অবসর প্রাপ্ত হয়। যাহারা অনাচারে ও অত্যাচারে ব্রহ্মচৰ্য্যভ্রষ্ট হইয়। বীৰ্য্যহীন হইয় পড়িয়াছে, তাহদের দেহে এ রসের মূৰ্ত্তিটাকে ধারণ করিবার শক্তি থাকে না। ঐবিপিনচন্দ্র পাল । মানবের জন্মকথা g যে সকল যন্ত্র শব্দ উচ্চারণে এক্ষণে ব্যবহৃত হইতেছে, প্রথম হইতে ঐ সকল যন্ত্র পুষ্ট ও পূর্ণতা প্রাপ্ত হইল কেন, অন্ত যন্ত্র কেন পুষ্ট হইল না, তাহা বুঝা কঠিন নহে। পিপীলিকাগণ ও ডু দ্বারা পরস্পরের সহিত অত্যন্ত অধিক পরিমাণে ভাব বিনিময় করিতে পারে ; হিউবার পিপীলিকার ভাষা সম্বন্ধে একটি সম্পূর্ণ অধ্যায় লিখিয়া ইহা প্রমাণ করিয়াছেন। আমরাও প্রথম হইতে চেষ্টা করিলে অঙ্গুলিকেই বাক্যন্ত্রে পরিণত করিতে পারিতাম ; কারণ যাহার অন্ধুলিচালনা অভ্যাস আছে, তিনি, প্রকাশ্য সভায় কোন বক্ত দ্রুতবেগে বক্তৃতা করিলেও বধির ব্যক্তির নিকট অঙ্গুলি চালনা দ্বারাই তাহা জ্ঞাপন করিতে পারেন। কিন্তু হস্তকে এই কার্য্যে ব্যবহার করিলে অন্ত কাৰ্য্য সম্বন্ধে যে ক্ষতি হইত তাহ অত্যন্ত অসুবিধাজনক হইত। আমাদিগের বাক্যন্ত্র যেরূপ ভাবে গঠিত, উচ্চশ্রেণীস্থ জন্তুগণেরও উদ্রপষ্ট, এবং উভয়েই উহা ভাব-বিনিময়ের নিমিত্ত ব্যবহার করি ও করে ; সুতরাং ভাব বিনিময়ের শক্তি বৃদ্ধি করিতে হইলে ঐ বাক্যন্ত্রও অধিকতর পুষ্টত প্রাপ্ত হওয়া সম্ভব, ইহা স্পষ্টই দেখা যাইতেছে। এই কাৰ্য্য নিকটবর্তী