পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sa? o পরিতৃপ্ত হয়, নিজের মুখ চাহে না, রাধাকৃষ্ণের মিলন সাধিয়াই কৃতাৰ্থ হয়। ইহাই জয়দেবের সখীচরিত্রের মূল স্বত্র এবং বৈষ্ণব সাহিত্যে জয়দেবই প্রথম সখী-চরিত্রের অষ্টা ; এ চরিত্র তিনি কোনও পুরাণে পান নাই। সখীর চরিত্র অবলম্বনে রাধীর চরিত্র তিনিই প্রথম ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। আমরা এখন রাধাচরিত্রের অনুসরণ করিব । আমরা দেখিয়াছি যে প্রণয়গৰ্ব্বিতা রাধিক আজ “দীন৷” তাই তিনি মধুকরকম্বিত কোনও একটী কুঞ্জবনে লসিয়াবসিয়া বলিলে ঠিক হয় না-যেন মাটির সহিত মিশিয় “লীন” হইয়া সখীকে মনের কথা নিবেদন করিতেছেন , কি সে মনের কথা ? অমুযোগ নাই, অভিযোগ নাই, কেবল সেই রূপের স্মৃতি সেই মৰ্ম্মচ্ছেদী मृtथब्र भ:५] তাহার প্রাণনাথকে কি উজ্জ্বল দেখাইতেছিল তাহারই বর্ণনা আর এততেও, এত দেখিয়াও র্তাহার মন সেই বিশ্বাসঘাতী প্রণয়ীকে স্মরণ করিতেছে কেন, ইহাতে বিস্ময় প্রকাশ । এই কি হৃদয়হীনার পরিচয় ? আমাদের আদর্শ ও মনের ভাব এখন বদলাইয়াছে যে "ভ্রমর’ বোধ হয় এখন ঘরে ঘরে, অথচ ভ্রমর কেবল লোকমুখে শুনিয়া, চোখে কিছু না দেখিয়াই স্বামী পরিত্যাগ করিতে পারিয়াছিল। কিন্তু রাধা নিজের চ’খে প্রণয়ীর বিশ্বাসঘাতকতা দেখিয়াও র্তাহারই চিন্তায় ব্যাকুল। সখী বলিতেছে, “তবে তাহাকে ভাব কেন ?” তাহার উত্তরে ঐরাধার মুখে কি উদার, কি গভীর u47ल বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, ফাল্গুন, ১৩১৯ প্রণয়পূর্ণ বাক্যই না, কবি জয়দেব বসাইয়াছেন— গণয়তি গুণগ্ৰামং ভামং ভ্রমাদপি নেহতে বখতি চ পরীতোমং দোষং বিমুঞ্চতি দূরতঃ। যুবতিষু বলকৃষ্ণে বিহারিণি মাং বিনা, পুনরপি মনো লামং কামং করোতি করোমি কিম্ বৈষ্ণব কৃত অনুবাদ,— শুন সখি মোর মন বিপৰ্য্যয় হৈল । কৃষ্ণ গুণগ্রাম মন জপিতে লাগিল । সখী কহে শুন রাধ। আমার বচন । তোমা ছাড়ি অন্য সঙ্গ করয়ে রমণ ॥ তবে কেন তুয়া মন তাহারে স্মঙরে। বুঝিতে ন পারি কথা কহ দেখি মোরে । রাধা কহে শুন সখি আমার আকুতি কৃষ্ণ রিন মোর মন না চলয়ে কতি । ভ্ৰমেতে না করে ক্রোধ কৃষ্ণ গুণ বিনে কৃষ্ণ পরিতোষ সদা করিছে ধেয়ানে ॥ দোষ দূরে ত্যাগ কৈল চাহি দেখিবারে। আপন মরম সখি কহিল তোমারে । যুবতীর মধ্যে,কৃষ্ণ করিছে বিহার। আমা বিনা নানা মুখ বাড়িল অপার ॥ পুনরপি মনোরমূা করিছে কামনা । কি করিব কহ সখি বাক্যের ষোঙ্গণ ৷ প্রতিকূল সমালোচককে প্রশ্ন করি—এই কি হৃদয় না থাকার প্রমাণ ? এই কি ইঞ্জিয় লোলুপার কথা ? এই একাগ্রত, এই ক্ষমা, এই তিতিক্ষ। এই একনিষ্ঠত। কি কেবল ইন্দ্রিয়মুখাস্বাদনের ফল, না ইহাকে ভাল বাসা—ভালবাসা তো একট। হালকা কথা—প্রগাঢ় প্রেম বলা যাইতে পারে ? ইন্দ্রিয়সুখছিদ্রান্বেষী ইন্দ্রিয়ের পরিতৃপ্তি